আদালত চত্বরে ‘নীরবতা বজায় রাখার’ বোর্ড লাগানো রয়েছে। তবে সেই বোর্ডের নির্দেশ না মেনেই আদালত চত্বরে ঢুকে পড়া তৃণমূলের মিছিলে মূর্হুমুহু স্লোগান চলতে থাকে বলে অভিযোগ। পাশের সিজেএম আদালতে সে সময় মামলার শুনানি চলছিল। স্লোগানের আওয়াজে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে আদালতের কাজকর্ম। এতেই ক্ষুব্ধ হন আদালতের বিচারক। এক আইনজীবীকে পাঠিয়ে মিছিলে স্লোগান বন্ধ করার নির্দেশ দেন বিচারক। তার পরেই বন্ধ হয়ে যায় শাসক দলের স্লোগান। শুক্রবার এমনই ঘটেছে মালদহের জেলা আদালতে।
শুনানি চলার সময়ে বাইরে স্লোগানের আওয়াজে আইনজীবীদের অনেক কথাই বিচারক শুনতে পারছিলেন না বলে জানা গিয়েছে। এর পরেই ক্ষুব্ধ মালদহের সিজেএম প্রদীপকুমার রায় এজলাসে থাকা এক আইনজীবীকে দিয়ে মিছিলের স্লোগান বন্ধ করার নির্দেশ পাঠান। ঘটনাচক্রে যে আইনজীবীর মাধ্যমে বিচারক নির্দেশ পাঠিয়েছিলেন, তিনিও তৃণমূলের আইনজীবী সেলের সদস্য। বিধি ভেঙে আদালত চত্বরে কেন স্লোগান দেওয়া হল তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে তৃণমূলের অন্দরেই।
বিরোধীদের কুত্সার বিরুদ্ধে শুক্রবার মালদহে তৃণমূলের মিছিল ছিল। এ দিনের মিছিলে জেলায় শাসক দলের সব ‘গোষ্ঠী’র নেতাদেরই দেখা গিয়েছে। তৃণমূলের জেলা সভাপতি মোয়াজ্জেম হুসেন থেকে শুরু করে জেলার দুই মন্ত্রী কৃষ্ণেন্দু নারায়ণ চৌধুরী, সাবিত্রী মিত্র, জেলায় দলের দুই কার্যকরি সভাপতি দুলাল সরকার, প্রতিভা সিংহদের দেখা গিয়েছে। তৃণমূলের দাবি, আদালত চত্বরে যখন মিছিল ছিল, সে সময়ে কোনও স্লোগান দেওয়া হয়নি। মিছিলটি শহর প্ররিক্রমা করে জেলা প্রশাসনিক ভবনের সামনে দিয়ে আদালতে চত্বরে পৌঁছেছিল। তারপরেই নেতাজি মোড়ে গিয়ে মিছিলটি শেষ হয়। দলের জেলা সভাপতি মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, “আদালত চত্বরের মধ্যে দিয়ে যাওয়ার সময় মাইকে বা মাইক ছাড়া কোনও ভাবেই স্লোগান দেওয়া হয়নি। তবে মিছিলের পেছন দিকে কোন কর্মী ভুল করে স্লোগান দিয়েছেন কি না তা বলা সম্ভব নয়।”
সম্প্রতি তৃণমূলের মালদহ জেলা পর্যবেক্ষক সাংসদ শুভেন্দু অধিকারী কর্মিসভা করে দলের নেতাদের সব সভা মিছিলে একসঙ্গে উপস্থিত থাকার নির্দেশ দিয়েছিলেন। তারপর থেকেই জেলার বিভিন্ন সভা মঞ্চে নেতাদের একসঙ্গে দেখা যাচ্ছে বলে দল সূত্রের খবর। এ দিন দলের মিছিলের ‘ঐক্যে’র ছবিও সেই নির্দেশের প্রতিফলন বলে মনে করা হচ্ছে।
এ দিন ইংরেজবাজার শহরের রবীন্দ্র অ্যাভিনিউ থেকে মিছিল শুরু হয়ে নেতাজি মোড়ে শেষ হয়। মন্ত্রী কৃষ্ণেন্দুবাবু শারীরিক কিছু সমস্যার কারণে মিছিলের প্রথমে উপস্থিত থাকতে পারেননি বলে জানিয়েছেন। পরে তিনি নেতাজি মোড়ের কাছে মিছিলে হাঁটতে শুরু করেন।
তৃণমূলের জেলার বিভিন্ন শিবিরের নেতাদের এক সঙ্গে মিছিলে হাঁটাকে ‘লোক দেখানো’ বলে বিরোধীরা কটাক্ষ করলেও, মন্ত্রী কৃষ্ণেন্দুবাবু বলেন, “তৃণমূলের মধ্যে গোষ্ঠীদ্বদ্বের কোনও বিষয় নেই। আমরা সকলেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সৈনিক। আদালত চত্বরের মধ্যে শব্দ হয়েছে কি না তা আমার জানা নেই।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy