Advertisement
E-Paper

এ বার গণ্ডগোল চাঁচলের সালিশি সভায়, আহত দুই

ফের গণ্ডগোল হল সালিশি সভায়। সম্প্রতি কোচবিহারের বড়াইবাড়িতে সালিশি সভায় খুন হয়েছেন এক তৃণমূল নেতা। তারপরে ফের সালিশি সভায় ছুরিকাঘাতের ঘটনা ঘটল।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৭ জুলাই ২০১৪ ০১:১০

ফের গণ্ডগোল হল সালিশি সভায়। সম্প্রতি কোচবিহারের বড়াইবাড়িতে সালিশি সভায় খুন হয়েছেন এক তৃণমূল নেতা। তারপরে ফের সালিশি সভায় ছুরিকাঘাতের ঘটনা ঘটল।

মঙ্গলবার মালদহের চাঁচলের গৌরীপুরে গ্রাম পঞ্চায়েতের এক সদস্য এবং সিপিএমের এক প্রাক্তন সদস্যের উপস্থিতিতে সালিশি সভা বসে। সেখানে এক বধূর স্বামীকে ছুরি দিয়ে আঘাতের অভিযোগ উঠেছে এক যুবকের বিরুদ্ধে। ওই যুবককেও পরে গণপ্রহার দেওয়া হয়। ওই বধূর স্বামী ও ওই যুবক, দু’জনেই হাসপাতালে ভর্তি। সালিশি ভেস্তে যাওয়ার পর বুধবার দুপুরে পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছেন ওই মহিলা।

গত শনিবার রাতে এক আত্মীয় তাঁকে ধারালো অস্ত্র দেখিয়ে ধর্ষণ করে বলে পুলিশে অভিযোগ জানিয়েছেন ওই মহিলা। তাঁর ডাক্তারি পরীক্ষা করানো হয়েছে। অভিযুক্ত সুস্থ হলেই তাঁকে গ্রেফতার করা হবে বলেও পুলিশ জানিয়েছে। পুলিশ সূত্রের খবর, অভিযুক্ত সম্পর্কে বধূর এক দেওর। তাকে ষড়যন্ত্র করে ফাঁসানো হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে সেই যুবক। মালদহের পুলিশ সুপার প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। সব কিছু খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ওই বধূর বাড়ির পাশেই বাড়ি তাঁর মামাশ্বশুর মইদুর রহমানের। পরিবার দু’টি আবার ভাকড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের স্থানীয় সদস্যা কংগ্রেসের দিলেরা বিবির আত্মীয়। গত শনিবার সন্ধ্যায় বধূর স্বামী অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন। তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করান অভিযুক্ত যুবকই। রাতে বাড়িতে দুই মেয়ে ও এক ছেলেকে নিয়ে ছিলেন ওই বধূ। তাঁর অভিযোগ, রাতে বাড়ির বাইরে শৌচালয়ে গেলে দেওর তাঁকে পিছন থেকে জাপটে ধরে মুখে কাপড় গুঁজে দেয়। তারপর ধারালো অস্ত্র দেখিয়ে ধর্ষণ করে। পরদিন সকালে পরিবারের লোকজনকে ঘটনার কথা জানানোর পরে রাতে সালিশির ব্যবস্থা করা হলেও সেই সভায় তাঁর অভিযুক্ত দেওর হাজির হননি বলে অভিযোগ।

সোমবার বধূর স্বামী হাসপাতাল থেকে বাড়িতে ফিরলে মঙ্গলবার সালিশি ডাকা হয়। সভায় দিলেরা বিবি হাজির না থাকলেও সেখানে ছিলেন ভাকড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্য তথা কংগ্রেসের দলনেতা ইয়াসিন আলি। ছিলেন সিপিএমের প্রাক্তন গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্য রব্বানি তাজও।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, অভিযুক্ত সালিশিতে দোষী সাব্যস্ত হওয়ার পরই সভায় তুলকালাম বেঁধে যায়। বধূর স্বামী অভিযুক্তর উপর চড়াও হয়ে মারধর শুরু করেন বলে অভিযোগ। সেই সময় ওই যুবক ছুরি বের করে বধূর স্বামীকে আঘাত করেন। দু’পক্ষের গন্ডগোলের সময় কয়েকজন আহত হন। সভার লোকজন ওই যুবককে বেধড়ক মেরে তার মাথা ফাটিয়ে দেয় বলে অভিযোগ। বধূর স্বামী এদিন অবশ্য দাবি করেছেন, “বিচারে দোষী সাব্যস্ত হওয়ার পরে পালানোর চেষ্টা করায় ওই যুবককে ধরতে গেলে ও আমার উপর ছুরি নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে। ডান চোখের উপর আঘাত লেগেছে।”

যদিও ওই যুবকের দাবি, “দাদা হাসপাতালে ভর্তি থাকায় ওষুধ কেনার জন্য বৌদি আমার কাছে একহাজার টাকা চেয়েছিল। তা না পেয়ে আমাকে ফাঁসানো হচ্ছে। আর সালিশিতে এক লক্ষ টাকা চাওয়া হয়েছিল। বিনা অপরাধে কেন টাকা দেব, সেই প্রশ্ন তোলায় আমাকে মারধর করা হয়েছে।”

কংগ্রেসের ইয়াসিন আলি বলেন, “গ্রাম্য যে কোনও ব্যাপারে কেউ ডাকলে আমাদের যেতেই হয়। দু’পক্ষ ডাকায় সেখানে গিয়েছিলাম। বিচার শেষ হয়েও গিয়েছিল। কী শাস্তি হবে তা নিয়ে আলোচনা শুরু হতেই গন্ডগোল বেঁধে যায়।” একই দাবি করেছেন রব্বানি তাজও। তবে ভাকড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান কংগ্রেসের শর্বরী সাহা বলেন, “ধর্ষণের মতো একটি বিষয় নিয়ে ডাকা সালিশি সভায় দলের কোনও সদস্য গিয়ে ঠিক করেননি। নেতৃত্বকে বিষয়টি জানাব।”

chanchal settlement meeing
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy