Advertisement
E-Paper

এ বার বিনা কর্ষণে পাট চাষের উদ্যোগ

বিনা কর্ষণে চাষ করে ধান, গমে সফলতা আসতে শুরু করেছে। ভুট্টা, সর্ষে, মুসুরেও শুরু হয়েছে বিনা কর্ষণে চাষ। এ বার পাট চাষেও ওই পদ্ধতি অবলম্বনের কথা ভাবছেন কৃষি বিজ্ঞানীরা। আর তা দেখতেই বিদেশ থেকে প্রতিনিধিরা এসেছেন উত্তরবঙ্গে। ওই পদ্ধতি সরেজমিনে খতিয়ে দেখতেই অস্ট্রেলিয়া থেকে কৃষি বিজ্ঞানীদের ১৩ সদস্যের এক প্রতিনিধি দল এসেছেন কোচবিহারে। তাঁরা মালদহেও যাবেন বলে জানা গিয়েছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১০ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০১:৫২

বিনা কর্ষণে চাষ করে ধান, গমে সফলতা আসতে শুরু করেছে। ভুট্টা, সর্ষে, মুসুরেও শুরু হয়েছে বিনা কর্ষণে চাষ। এ বার পাট চাষেও ওই পদ্ধতি অবলম্বনের কথা ভাবছেন কৃষি বিজ্ঞানীরা। আর তা দেখতেই বিদেশ থেকে প্রতিনিধিরা এসেছেন উত্তরবঙ্গে।

ওই পদ্ধতি সরেজমিনে খতিয়ে দেখতেই অস্ট্রেলিয়া থেকে কৃষি বিজ্ঞানীদের ১৩ সদস্যের এক প্রতিনিধি দল এসেছেন কোচবিহারে। তাঁরা মালদহেও যাবেন বলে জানা গিয়েছে। ওই দলে থাকবেন ফিলিপিনসের আন্তর্জাতিক ধান গবেষণা কেন্দ্রের বিজ্ঞানী রোনাল্ড ডুরেজ। ৯ ফেব্রুয়ারি থেকে ১১ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত জেলার বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন করবেন তাঁরা। সরাসরি কথাও বলবেন কৃষকদের সঙ্গে। উত্তরবঙ্গ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে এক দিনের আলোচনা চক্রও অনুষ্ঠিত হবে। সেখানেও যোগ দেবেন বিজ্ঞানীরা। আগামী ২৭ থেকে ২৯ ফেব্রুয়ারি মালদহ পরিদর্শন করবে দলটি।

উত্তরবঙ্গ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক অপূর্ব চৌধুরী বলেন, “কোচবিহার ও মালদহ দু’টি জায়গাতেই পরীক্ষামূলক ভাবে বিনা কর্ষণে পরীক্ষামূলক ভাবে আমরা সফল হয়েছি। অনেক কৃষক আগ্রহী হয়ে উঠেছেন। আগামী দিনে এই পদ্ধতিতে চাষ করার পরামর্শে দেওয়া হবে কৃষকদের। তার আগে চাষের ক্ষেত্রে কোনও সমস্যা রয়েছে কি না? আরও কী ভাবে চাষের খরচ কম করা যায়, সে বিষয়ে কৃষি বিজ্ঞানীরা পরামর্শ দেবেন।”

কোচবিহার মূলত কৃষি প্রধান এলাকা। জেলার অধিকাংশ বাসিন্দা কৃষি কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করেন। জেলায় ধান, পাট, তামাক প্রধান চাষ। জেলায় ২ লক্ষ হেক্টরের বেশি জমিতে ধান চাষ হয়। পাট চাষ হয় প্রায় ৪১ হাজার হেক্টর জমিতে। তামাক চাষের প

রিমাণও ৫০ হাজার হেক্টরের মতো। বর্তমানে চাষের খরচের সঙ্গে পেরে ওঠা যাচ্ছিল না বলে কৃষকদের একাংশের অভিযোগ। কৃষি শ্রমিকের সমস্যাও একটা বড় অন্তরায় হয়ে দাঁড়িয়েছে বলে কৃষকদের দাবি। পাট চাষের পরিমাণ প্রতি বছরই কয়েক হাজার হেক্টর করে কমে যাচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে উত্তরবঙ্গ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্যোগে বিনা কর্ষণে চাষ শুরু হয়। বিদেশ থেকেও ওই চাষে সহযোগিতা করা হয় বলে জানা গিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রের খবর, কোচবিহার ও মালদহ মিলিয়ে চলতি বছরে প্রায় ৪০০ হেক্টর জমিতে বিনা কর্ষণে ধান, গম, ভুট্টা, সরষে, মসুর কলাই চাষ করা হয়েছে। এর মধ্যে বেশিরভাগটা ধান। কোচবিহার ১ নম্বর ব্লকেই ১০০ বিঘা জমিতে বিনা কর্ষণে ধান চাষ করা হয়েছে। আগামী খারিফ মরসুমে পাট সহ আরও বিভিন্ন চাষের পরিকল্পনা রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের গত কয়েক বছর ধরে জেলায় ভুট্টা চাষ বাড়ছে। ভুট্টার চাহিদা রয়েছে বলে কৃষকরা জানিয়েছেন। সে কারণে ভুট্টাকেও গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে বলে বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গিয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ওই উদ্যোগে সামিল হয়েছে কৃষি দফতরও। কোচবিহার ১ নম্বর ব্লক কৃষি আধিকারিক রজত চট্টোপাধ্যায় বলেন, “বিনা কর্ষনে চাষে আমরা ইতিমধ্যে ধানের ক্ষেত্রে পরিসংখ্যান পেয়েছি। তাতে এক বিঘা জমিতে ৬ থেকে ৮ মন ফলন বেশি পাচ্ছেন কৃষকরা। কোনও কোনও ক্ষেত্রে সেই পরিমাণ আরও বেশি। গম সহ অন্যান্য ফসলের ক্ষেত্রেও এখন পর্যন্ত যা রিপোর্ট রয়েছে, তাতে মনে এই উদ্যোগ সফল হবে।”

ঘুঘুমারির কৃষক ফজলে রহমান জানিয়েছেন, তিনি এবারে বিনা কর্ষণে চার বিঘা জমিতে ধান চাষ করেছেন। প্রতি বিঘাতে প্রায় দশ মন ফলন বেশি পেয়েছেন। অপূর্ববাবু বলেন, “এই পদ্ধতিতে চাষে কম খরচের সঙ্গে মাটির স্বাস্থ্য রক্ষাও সম্ভব হয় সে সবও পরীক্ষা করে দেখবেন বিদেশের বিজ্ঞানীরা।”

jute jute cultivation cooch behar
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy