Advertisement
২১ মে ২০২৪

কোচবিহার-মালদহ ডিএমইউতে দুর্ভোগ

কোনও কামরায় ফ্যান চলে না। কোনও কামরায় জ্বলে না আলো। পর পর বেশ কয়েকটি কামরায় শৌচাগারের দরজা পর্যন্ত নেই। দুর্গন্ধে টেকা দায়। ট্রেনের ছাদ চুইয়ে জল পড়ে ভেসে যায় একেকটা কামরা। তার মধ্যেই গুটিসুটি হয়ে বসে থাকেন যাত্রীরা। পরিষেবা তো তলানিতে বটেই, শিকেয় নিরাপত্তাও। বিকেল গড়ালেই চলন্ত ট্রেনে ইতিউতি বসে যায় মদ ও গাঁজার আসর। নেশাগ্রস্তদের চোখ রাঙানিতে ভয়ে চুপ করে থাকতে বাধ্য হন যাত্রীরা। অভিযোগ, ট্রেনের মধ্যে নিরুপদ্রবে ঘোরাফেরা ছিনতাইবাজদেরও।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কোচবিহার শেষ আপডেট: ১৪ অক্টোবর ২০১৪ ০১:২৭
Share: Save:

কোনও কামরায় ফ্যান চলে না। কোনও কামরায় জ্বলে না আলো। পর পর বেশ কয়েকটি কামরায় শৌচাগারের দরজা পর্যন্ত নেই। দুর্গন্ধে টেকা দায়। ট্রেনের ছাদ চুইয়ে জল পড়ে ভেসে যায় একেকটা কামরা। তার মধ্যেই গুটিসুটি হয়ে বসে থাকেন যাত্রীরা। পরিষেবা তো তলানিতে বটেই, শিকেয় নিরাপত্তাও। বিকেল গড়ালেই চলন্ত ট্রেনে ইতিউতি বসে যায় মদ ও গাঁজার আসর। নেশাগ্রস্তদের চোখ রাঙানিতে ভয়ে চুপ করে থাকতে বাধ্য হন যাত্রীরা। অভিযোগ, ট্রেনের মধ্যে নিরুপদ্রবে ঘোরাফেরা ছিনতাইবাজদেরও। কোচবিহার-মালদহ ডিএমইঊ ট্রেনে উঠলে এখন এমনই দুর্বিসহ যাত্রার অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করতে হচ্ছে যাত্রীদের। তাঁদের অভিযোগ, প্রতিটি স্টেশনে কমবেশি ওই বিষয় নিয়ে অভিযোগ দায়ের করেছেন তাঁরা। কিন্তু ফল মেলেনি কোনও। ট্রেনটি মালদহ থেকে কোচবিহারের দিনহাটা পর্যন্ত চলাচল করে। কোচবিহারের এক রেল কর্তা বলেন, “আমাদের কাছে ওই বিষয় নিয়ে যা অভিযোগ জমা পড়েছে তা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কে জানানো হয়েছে।”

রেল দফতর সূত্রের খবর,কোচবিহার-মালদা ডিএমইঊ ট্রেনটি সকাল ছ’টায় দিনহাটা স্টেশন থেকে রওনা হয় মালদহের উদ্দেশে। আবার রাত ন’টা থেকে দশটার মধ্যে দিনহাটায় পৌঁছে যায়। বৃহস্পতিবার ওই ট্রেনেই শিলিগুড়ি যান দিনহাটার বাসিন্দা কল্পনা রায়। তিনি অভিযোগ করেন,“ট্রেনের শৌচাগারে জলের কোনও ব্যবস্থা নেই। শৌচাগারের দরজাও ভাঙা। ফলে মহিলাদের পক্ষে তাই শৌচাগার ব্যবহারের কোনও উপায় নেই।”ওই ট্রেনের অধিকাংশ ফ্যান খারাপ হয়ে রয়েছে বলে অভিযোগ কোচবিহারের বাসিন্দা অনিমেষ বর্মনের। তিনি বলেন, “গরমে সারা শরীর ঘেমে যায়। ট্রেনে ফ্যান রয়েছে অথচ চলে না। ওই অবস্থাতেই আমাদের যাতায়াত করতে হয়।”

নিরাপত্তা নিয়েও উদ্বিগ্ন ওই ট্রেনের যাত্রীরা। তাঁদের অভিযোগ, ওই ট্রেনের অন্তত তিনটি কামরায় অধিকাংশ লাইট খারাপ। একটি কামরায় তো অন্ধকারেই যাতায়াত করতে হয়। ট্রেন যত কোচবিহারের দিকে এগোতে থাকে, যাত্রীর সংখ্যাও কমতে থাকে। সেই সুযোগে ফাঁকা কামরা চলে যায় দুষ্কৃতীদের দখলে। লাইট না থাকায় অনায়াসেই চলে মদ, গাজার আড্ডা। খাগরাবাড়ির বাসিন্দা এক যাত্রী বিজয় রায় বলেন, শুক্রবার ট্রেনে কোচবিহার ফিরছিলাম। ধূপগুড়ি পার হতেই একটি ফাঁকা অন্ধকার কামরায় দেখি কয়েকজন পাশাপাশি বসেছে। মদ ও গাঁজা দুটোই চলছিল। কাছে যেতেই রীতিমত হুমকি দিল তারা। তাঁদের চোখ দেখেই দ্রুত অন্য কামরায় চলে যাই।”

দিনহাটা মহকুমা ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক রানা গোস্বামী বলেন, “প্রথমদিকে ওই ট্রেনের পরিষেবা ভাল ছিল। এখন ওই ট্রেনে যাতায়াতই আতঙ্কের ব্যাপার। বিষয়টি নিয়ে ডিআরএমকে স্মারকলিপি দেওয়া হবে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

cooch behar malda dmu suffering
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE