কোথাও বোরো ধান কাটতে বাঁধা, কোথাও বা জোর করে চাঁদা আদায়। কোচবিহারের দিনহাটার বুড়িরগ্রামে তৃণমূল কংগ্রেস কর্মী সমর্থকদের নামে এমনই অভিযোগ তুলেছে ফরওয়ার্ড ব্লক। রবিবার বুড়িরহাট ১ পঞ্চায়েত এলাকায় এক ফরওয়ার্ড ব্লক সমর্থককে বোরো ধান কাটতে বাঁধা দেওয়া হয়। এ দিকে বুড়িরহাট, নাজিরহাটে চাঁদার জুলুমবাজির বেশি বলে অভিযোগ। বেশ কয়েকটি ঘটনায় বাড়ির সরঞ্জাম ও পোষ্য লুঠ করে নিয়ে যাওয়া হয় বলে ফরওয়ার্ড ব্লকের দাবি।
দলের অভিযোগ, এ দিন সকালে বুড়িরহাট ১ গ্রাম পঞ্চায়েতের ভোরাম কচুয়ার বাসিন্দা দিলীপ বর্মন নামে এক সমর্থক তাঁর আবাদি জমিতে ধান কাটতে গেলে তৃণমূল সমর্থকেরা বাধা দেন। দিলীপবাবুকে বৃহস্পতিবারের মধ্যে ২০ হাজার টাকা জমা দিয়ে পরে ধানকাটার ফতোয়া দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। আরও বহু সমর্থককেও একই ভাবে জমির ধান কাটতে দেওয়া হচ্ছে না। দিলীপবাবু বলেন, “আড়াই বিঘে জমি লিজ নিয়ে বোরো ধানের চাষ করেছিলাম। ফরওয়ার্ড ব্লক করি বলে তৃণমূলের লোকেরা ধান কাটতে মাঠে নামতে দেয়নি। ২০ হাজার টাকা দাবি করা হয়েছে। পুলিশে অভিযোগ জানানোর সাহস পাচ্ছি না, দিনহাটার দলীয় অফিসে সব জানিয়েছি।”
শনিবার রাতে এলাকায় কৃষ্ণ বর্মন নামে এক ফরওয়ার্ড ব্লক সমর্থকের বাড়ি থেকে দুটি ছাগল লুঠ করা হয়েছে বলে অভিযোগ। এমনকী দিনহাটা ২ পঞ্চায়েত সমিতির প্রাক্তন সভাপতি বীরেন রায়ের বাড়ি ভাঙচুর করে টিন, ইট লুঠ করা হয়েছে বলেও ফরওয়ার্ড ব্লকের অভিযোগ। দলের নেতা, কর্মীর ওপর সন্ত্রাসের বেশ কিছু অভিযোগ দলীয় ভাবে পুলিশ ও জেলা প্রশাসনের কর্তাদের কাছে জানানো হয়েছে।
বুড়িরহাট ২ গ্রাম পঞ্চায়েতের ফব উপপ্রধান নীরোদ বর্মন বলেন, “বাড়ি বাড়ি ঘুরে বৃহস্পতিবারের মধ্যে ৫-১০ হাজার টাকা চাঁদা চেয়ে হুমকি দিচ্ছে তৃণমূলের সমর্থকেরা। হুমকির ভয়ে অনেকে সাময়িক বাড়ি ছাড়তে বাধ্য হচ্ছেন। কোচবিহার সদর ও সিতাইয়ের বেশ কিছু এলাকায় সমর্থকদের প্রহার, হুমকি, দোকান বন্ধের ঘটনা ঘটেছে।”
পুলিশ-প্রশাসনের কর্তারা ওই সব অভিযোগের কথা জানেন। জেলাশাসক মোহন গাঁধী বলেন, “বিক্ষিপ্ত কিছু অভিযোগ আমার কাছে এসেছে। পুলিশ সুপারকে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।” পুলিশ সুপার অনুপ জায়সবাল বলেন, “পুলিশ নজর রাখছে। অভিযোগ এলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” ক্ষোভ জানিয়েছে দলের জেলা নেতারাও। ফরওয়ার্ড ব্লকের জেলা সম্পাদক উদয়ন গুহর অভিযোগ, “জেলা জুড়ে তৃণমূলের সন্ত্রাসে অরাজকতার মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। জমির ধান কাটতে বাঁধা দেওয়া, বাড়ির ছাগল নিয়ে পিকনিক করা, চাঁদার জুলুমবাজি আর হুমকি, মারধরের অসংখ্য ঘটনা হচ্ছে। ভয়ে অনেকে থানায় যেতে সাহস পাচ্ছেন না। সিতাইয়ে থানায় যাওয়ার রাস্তায় তৃণমূলের লোক নজরদারি চালাচ্ছে।” তৃণমূলের জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষ পাল্টা দাবি করে বলেন, “সম্পূর্ণ সাজানো ঘটনা। ধান কাটতে বাধা, জুলুমূাজির ঘটনা নেই। ভোটের আগে উদয়নবাবুরা মিথ্যার রাজনীতি শুরু করেছেন। ওই অপপ্রচার করে মানুষকে আর বিভ্রান্ত করা যাবে না।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy