Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

কাজ ফেলে সভা নয়, মন্ত্রীর বার্তা অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের

এলাকায় রাজনৈতিক দলের সভা বা মিছিল রয়েছে, তাই অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে একাংশ কর্মীদের দেখা নেই। ‘সেন্টারে’ অনুপস্থিত থেকে কর্মীরা উপস্থিত থাকছেন রাজনৈতিক কর্মসূচিতে। মালদহের বিভিন্ন অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে প্রায়ই এমন ঘটনা দেখা যাচ্ছে বলে অভিযোগ। যে খবর সরকারের কাছেও রয়েছে বলে জানিয়ে দিলেন রাজ্যের খাদ্য ও প্রক্রিয়াকরণ মন্ত্রী কৃষ্ণেন্দু চৌধুরী।

হোমের শিলান্যাস করছেন মন্ত্রী শশী পাঁজা। নিজস্ব চিত্র।

হোমের শিলান্যাস করছেন মন্ত্রী শশী পাঁজা। নিজস্ব চিত্র।

অভিজিৎ সাহা
মালদহ শেষ আপডেট: ২৬ নভেম্বর ২০১৪ ০২:৪১
Share: Save:

এলাকায় রাজনৈতিক দলের সভা বা মিছিল রয়েছে, তাই অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে একাংশ কর্মীদের দেখা নেই। ‘সেন্টারে’ অনুপস্থিত থেকে কর্মীরা উপস্থিত থাকছেন রাজনৈতিক কর্মসূচিতে। মালদহের বিভিন্ন অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে প্রায়ই এমন ঘটনা দেখা যাচ্ছে বলে অভিযোগ। যে খবর সরকারের কাছেও রয়েছে বলে জানিয়ে দিলেন রাজ্যের খাদ্য ও প্রক্রিয়াকরণ মন্ত্রী কৃষ্ণেন্দু চৌধুরী। এবং কর্মীদের এই প্রবণতা যে সরকার ‘পছন্দ’ করছে না, তাও অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের জানিয়ে দিলেন তিনি।

মঙ্গলবার মালদহের রামনগর কাছারি টোলায় সমাজকল্যাণ দফতরের একটি অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের সমাজকল্যাণ মন্ত্রী শশী পাঁজা, দফতরের প্রাক্তন মন্ত্রী সাবিত্রী মিত্র এবং কৃষ্ণেন্দুবাবু। ওই অনুষ্ঠানেই বক্তৃতা রাখতে গিয়ে অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের উদ্দেশ্যে ‘সেন্টার’ ফাঁকা রেখে দুমদাম মিছিল বা সভায় যাওয়া যাবে নিয়ে এমনই বার্তা দিয়েছেন মন্ত্রী। এ দিন কৃষ্ণেন্দুবাবু বলেন, “আপনারা অনেকে পার্টির মিছিলে যান। সেন্টার ফাঁকা পড়ে থাকে। আপনারা সেন্টারের কাজ করে সংগঠন করুন। কাজ ফাঁকি দিয়ে মিটিং মিছিল আমাদের সরকার পছন্দ করে না।”

রাজ্যে পরিবর্তনের পরে অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের একটি বড় অংশ শাসক দলের দিকে ঝুঁকেছে। তৃণমূলের সভা মিছিলেও তাঁদের নিয়মিত দেখা যায়। মন্ত্রীর ঘনিষ্ঠমহলের ব্যাখ্যা, একজন প্রশাসক হিসেবে সব দলের সভা মিছিলের কথাই মন্ত্রী বোঝাতে চেয়েছেন। তবে অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের একাংশের দাবি, বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই অনিচ্ছা সত্ত্বেও শাসক দলের প্রভাবশালী নেতাদের নির্দেশেই মিছিলে যেতে হয়।

এ দিন রামনগর কাছারিটোলায় অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের পড়ুয়াদের স্বাস্থ্যশিবির, কেন্দ্রের কাজ পরিচালনার জন্য একটি সফ্টওয়্যার উদ্বোধন এবং নাবালকদের জন্য একটি হোমের শিলান্যাস অনুষ্ঠান ছিল। অনুষ্ঠানে নারী ও সমাজ কল্যাণমন্ত্রীর উপস্থিতিতেই জেলায় দফতরের বিভিন্ন পরিকাঠামো এবং কাজ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন দফতরেরই প্রাক্তন মন্ত্রী সাবিত্রী মিত্র। তাঁর অভিযোগ, গোটা জেলায় এমন কোনও সরকারি হোম নেই, যার নিজস্ব জায়গা রয়েছে। এক মাত্র সরকারি হোমটি রয়েছে ভাড়া বাড়িতে। প্রতিবন্ধীরাও ঠিক সময়ে শংসাপত্র পাচ্ছে না বলে অভিযোগ করেন সাবিত্রী। যা নিয়ে শশী পাঁজার বক্তব্য, “রাতারাতি দফতরের সব সমস্যা সমাধান করা যাবে না। সমস্যা মেটানোর চেষ্টা করছি।”

জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন উদ্বোধন হওয়া সফ্টওয়্যারের মাধ্যমে শিশুদের পুষ্টির কতটা অগ্রগতি হয়েছে, তার নজরদারি করা সম্ভব হবে। এর ফলে কেন্দ্রগুলিতে কেমন কাজ হচ্ছে, তাও জানা যাবে। এ দিন শিলান্যাস হওয়া হোমটির জন্য ৪ কোটি ৮ লক্ষ টাকা বরাদ্দ হয়েছে।

নারী ও সমাজকল্যাণ মন্ত্রী বলেন, “জেলায় ৫০টি মডেল অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র গড়ে তোলার পরিকল্পনা হয়েছে। মডেল কেন্দ্রে শুধু পুষ্টিকর খাবারই বিলি করা হবে না, পড়াশোনাও হবে। টিফিনে লাড্ডু দেওয়া হবে।” মন্ত্রী জানিয়েছেন, জেলায় সহায়িকার অভাব রয়েছে। তাঁর কথায়, “যাঁরা উন্নয়ন চান না, তাঁরাই মামলা করে নিয়োগ প্রক্রিয়া আটকে রেখেছেন।” অনুষ্ঠানে জেলাশাসক শরদ কুমার দ্বিবেদী, জেলার পুলিশ সুপার প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ জেলার অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের সহায়িকারা উপস্থিত ছিলেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

abhijit saha maldah sashi panja anganwadi
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE