Advertisement
০৩ মে ২০২৪

কুমারগঞ্জে ধর্ষণে অভিযুক্ত ধৃত, স্ত্রী’রও গ্রেফতারি দাবি

নাবালিকাকে ধর্ষণে অভিযুক্ত দক্ষিণ দিনাজপুরের কুমারগঞ্জের তৃণমূল ব্লক সভাপতির ছেলে আজিজুর রহমান সরকারকে গ্রেফতার করল পুলিশ। তবে ওই নাবালিকা আজিজুরের স্ত্রী আনোয়ারা বিবির সঙ্গেই তাদের বাড়িতে গিয়েছিল বলে তারও গ্রেফতারির দাবি তুলেছেন এলাকাবাসীর একাংশ।

ধর্ষণের অভিযোগে ধৃত আজিজুর। মঙ্গলবার তোলা নিজস্ব চিত্র।

ধর্ষণের অভিযোগে ধৃত আজিজুর। মঙ্গলবার তোলা নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কুমারগঞ্জ শেষ আপডেট: ১০ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ০২:২২
Share: Save:

নাবালিকাকে ধর্ষণে অভিযুক্ত দক্ষিণ দিনাজপুরের কুমারগঞ্জের তৃণমূল ব্লক সভাপতির ছেলে আজিজুর রহমান সরকারকে গ্রেফতার করল পুলিশ। তবে ওই নাবালিকা আজিজুরের স্ত্রী আনোয়ারা বিবির সঙ্গেই তাদের বাড়িতে গিয়েছিল বলে তারও গ্রেফতারির দাবি তুলেছেন এলাকাবাসীর একাংশ। দক্ষিণ দিনাজপুরের পুলিশ সুপার শীষরাম ঝাঝারিয়া বলেন, “অন্য অভিযুক্তকে ধরতে তল্লাশি শুরু হয়েছে।” ওই নাবালিকা মালদহ মেডিক্যালেই চিকিৎসাধীন। তাঁর অবস্থার উন্নতি হয়েছে বলে হাসপাতাল সূত্রে খবর।

নাবালিকার বাড়ির লোকজনদের অভিযোগ, অভিযুক্ত আজিজুরের স্ত্রী আনোয়ারা নাবালিকাকে টিভি দেখানোর নাম করে ডেকে নিয়ে যান। ঘটনার পরে পুলিশ যখন পৌঁছয়, তখনও অভিযুক্তের স্ত্রী এলাকায় ছিলেন বলে বাসিন্দাদের কয়েকজনের দাবি। তবুও পুলিশ তাঁকে কেন গ্রেফতার করেনি, সেই প্রশ্ন তুলেছেন একাংশ বাসিন্দা। তৃণমূলের ব্লক সভাপতি আলি আজম সরকারের পুত্রবধূ বলেই গ্রেফতার নিয়ে টালবাহানা চলছে কি না সেই প্রশ্নও তুলেছেন তাঁরা। তবে এ দিনও তৃণমূলের ব্লক সভাপতি কোনও মন্তব্য করতে চাননি। তাঁর বাড়িতে গেলে একজন মহিলা দরজা সামান্য খুলে বলেন, “বাবা অসুস্থ। কথা বলার অবস্থায় নেই।”

গত রবিবার বিকেলে ধর্ষণের ঘটনার পরই ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে শাসক দলের একটি মহল সক্রিয় ছিল বলে অভিযোগ। ওই ঘটনার প্রায় ৩০ ঘণ্টা পরে সোমবার সন্ধে ছ’টা নাগাদ নির্যাতিতা কিশোরীর দাদু কুমারগঞ্জ থানায় গিয়ে অভিযুক্ত আজিজুর রহমান সরকার ও তার স্ত্রী আনোয়ারা বিবির বিরুদ্ধে নাবালিকা নাতনিকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণের অভিযোগ দায়ের করেন। তৃণমূল সূত্রে খবর, দলের জেলা নেতৃত্ব এ নিয়ে ‘অস্বস্তিতে’ পড়েন। তৃণমূল সূত্রের দাবি, দলের জেলা সভাপতির পক্ষ থেকে ক্ষোভ প্রকাশ করে পুলিশকে কঠোর পদক্ষেপ করার নির্দেশ দেওয়া হয়। গভীর রাতে উঁচাইট এলাকার এক আত্মীয়ের বাড়ি থেকে অভিযুক্ত আজিজুরকে পুলিশ গ্রেফতার করে তপন থানায় নিয়ে যায়।

তপন থেকে এ দিন ধৃতের বিরুদ্ধে নাবালিকা ধর্ষণের মামলা দায়ের করে পুলিশ বালুরঘাট আদালতে হাজির করায়। বিচারক ধৃতের জামিন নাকচ করে পাঁচ দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেন। এদিন বিজেপির পক্ষ থেকে বিকেলে ৪টা নাগাদ বিক্ষোভ মিছিল করে কুমারগঞ্জ থানা ঘেরাও করা হয়। বিজেপির জেলা সাধারণ সম্পাদক মানস সরকার অভিযোগ করেন, “ধর্ষিতা কিশোরীর বৃদ্ধ দাদু-দিদাকে অভিযোগ তুলে নিতে চাপ দেওয়া হচ্ছে। অবিলম্বে পরিবারকে নিরাপত্তা দিতে হবে।” ঘণ্টাখানেক বিক্ষোভের পর বিজেপির তরফে অভিযুক্তের স্ত্রীকে গ্রেফতার, তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ও ধর্ষিতা নাবালিকার চিকিতসার খরচ সরকারকে বহন করতে হবে বলে থানায় দাবি জানানো হয়। গোপালগঞ্জে সিপিএমের মহিলা, যুব ও শিক্ষক সংগঠন মিলিতভাবে বিক্ষোভ দেখায়। গণতান্ত্রিক মহিলা সমিতির নেত্রী মাফুজা খাতুন অভিযুক্তদের কঠোর শাস্তি ও নির্যাতিতার পরিবারকে নিরাপত্তা দিতে হবে বলে দাবিতে সরব হন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

kumarganj rape convict arrested
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE