Advertisement
০৭ মে ২০২৪

কার্যালয় ভাঙার নালিশ, অনশনে অশোক

ফুলবাড়িতে সিপিএমের দলীয় কার্যালয় বুলডোজার দিয়ে ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়ার ঘটনায় অভিযুক্তদের গ্রেফতারের দাবি তুলে অনশন করলেন সিপিএম নেতৃত্ব। শনিবার সকাল ১১টায় শিলিগুড়ির ভক্তিনগর থানার নিউ জলপাইগুড়ি ফাঁড়ির সামনে অনশনে বসেন দার্জিলিং জেলা সিপিএমের সম্পাদক জীবেশ সরকার, সিটুর দার্জিলিং জেলা সম্পাদক তথা লোকসভার বাম প্রার্থী সমন পাঠক, শিলিগুড়ি পুরসভার বিরোধী দলনেতা নুরুল ইসলাম, ডিওয়াইএফআইয়ের জেলা সম্পাদক শঙ্কর ঘোষ-সহ দার্জিলিং ও জলপাইগুড়ির জেলা নেতারা।

অনশনে অশোক ভট্টাচার্য সহ সিপিএম নেতৃত্ব। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক।

অনশনে অশোক ভট্টাচার্য সহ সিপিএম নেতৃত্ব। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ২৫ মে ২০১৪ ০২:০০
Share: Save:

ফুলবাড়িতে সিপিএমের দলীয় কার্যালয় বুলডোজার দিয়ে ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়ার ঘটনায় অভিযুক্তদের গ্রেফতারের দাবি তুলে অনশন করলেন সিপিএম নেতৃত্ব।

শনিবার সকাল ১১টায় শিলিগুড়ির ভক্তিনগর থানার নিউ জলপাইগুড়ি ফাঁড়ির সামনে অনশনে বসেন দার্জিলিং জেলা সিপিএমের সম্পাদক জীবেশ সরকার, সিটুর দার্জিলিং জেলা সম্পাদক তথা লোকসভার বাম প্রার্থী সমন পাঠক, শিলিগুড়ি পুরসভার বিরোধী দলনেতা নুরুল ইসলাম, ডিওয়াইএফআইয়ের জেলা সম্পাদক শঙ্কর ঘোষ-সহ দার্জিলিং ও জলপাইগুড়ির জেলা নেতারা।

দুপুর দেড়টা নাগাদ পুলিশ সেখানে গিয়ে জানিয়ে দেয়, অভিযুক্তদের মধ্যে তিন জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকিদেরও গ্রেফতারের আশ্বাস দেওয়া হয়। তার পরেই অনশন উঠে যায়। সিপিএমের দাবি, ধৃত তিন জনই তৃণমূল সমর্থক। এ দিন অনশন মঞ্চে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রীকেই সিপিএমের দলীয় কার্যালয় ভাঙচুর এবং জলপাইগুড়ি জেলা জুড়ে অস্থির পরিস্থিতি তৈরির চেষ্টা করার জন্য দায়ী করেন প্রাক্তন পুরমন্ত্রী তথা জেলা বামফ্রন্টের আহ্বায়ক অশোক ভট্টাচার্য। এমনকী মন্ত্রীর রাজনৈতিক সৌজন্যও নেই বলে অভিযোগ করেন তিনি। জলপাইগুড়ি জেলায় কেন্দ্রীয় বাহিনীর দাবি জানিয়েছেন তিনি।

প্রাক্তন পুরমন্ত্রীর অভিযোগ, “এর আগেও বিরোধী থাকাকালীন মন্ত্রী গৌতমবাবু নানা বিতর্কে জড়িয়েছেন। একবার তো তাঁকে মার খেয়ে হাসপাতালে ভর্তিও হতে হয়েছে। বামফ্রন্টের মন্ত্রীরা তাঁর সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছেন। কোনওদিন সৌজন্যের অভাব হয়নি। কিন্তু গৌতমবাবুর বিধানসভা এলাকাতে সিপিএমের দলীয় কার্যালয় ভেঙে দিলেও তিনি একবারও ঘটনাস্থলে যাননি কেন?”

এই ব্যাপারে উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী গৌতম দেব জানান, কেউ অনশনে বসতেই পারেন। তাঁর কটাক্ষ, “অনেক সময়ে বেশি ওজন থাকলে অনশনে তা কমে যায়।” সেই সঙ্গে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রীর দাবি, ফুলবাড়ির ঘটনার সময়ে তিনি কলকাতায় ছিলেন। তাঁর বক্তব্য, “পুলিশ অভিযোগ পেয়ে কাউকে গ্রেফতার করে থাকলে ঠিকই করেছে। ধৃতরা যদি তৃণমূল সমর্থক হয় তা হলে তো নিরপেক্ষ কাজই করেছে। পুলিশের প্রশংসা করা উচিত।”

শুক্রবার রাতে অভিযুক্তদের মধ্যে তিনজনকে গ্রেফতার করেন নিউ জলপাইগুড়ি ফাঁড়ির পুলিশ। ভাঙচুরের ঘটনায় এরা জড়িত রয়েছে বলে পুলিশ তদন্তে জানতে পেরেছে বলে জানা গিয়েছে। তারই ভিত্তিতে ফুলবাড়ি এলাকা থেকে মহম্মদ মকবুল, রোহিত সাহা এবং সঞ্জীব রায়কে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। শিলিগুড়ির পুলিশ কমিশনার জগমোহন বলেন, “তিনজনকে জড়িত সন্দেহে গ্রেফতার করা হয়েছে। আরও কিছু লোক জড়িত রয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। তাঁদেরও গ্রেফতার করা হবে।” জানা গিয়েছে ধৃতেরা সকলেই তৃণমূল সমর্থক। অশোকবাবু এদিন দাবি করেন, যে বুলডোজারটি দিয়ে সিপিএম কার্যালয় ভাঙা হয়েছে, সেটির মালিক তৃণমূলের এক নেতা। পুলিশ কমিশনার অভিযোগটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন।

বৃহস্পতিবার রাতের অন্ধকারে শিলিগুড়ি সংলগ্ন ফুলবাড়ি-২ এর সিপিএম দলীয় কার্যালয় কে বা কারা বুলডোজার দিয়ে ভেঙে দেয়। সকালে দেখা যায় ধ্বংসস্তূপের উপরে তৃণমূলের দলীয় পতাকা লাগানো রয়েছে। এতে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। পুলিশ ও দলীয় নেতৃত্বের উপস্থিতিতে সিপিএম কর্মীরা ফের নিজেদের পতাকা লাগিয়ে দেয়। সিপিএমের পক্ষ থেকে তৃণমূলের দিকে অভিযোগ তুলে নিউ জলপাইগুড়ি ফাঁড়িতে অভিযোগও দায়ের করা হয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

ashok bhattacharya siliguri cpm
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE