রোদের দেখা নেই। ভোরের কুয়াশা সকালে সরলেও, দিনভরই মেঘলা আকাশ। বিকেলের পর থেকে ফের কুয়াশা। গত দু’দিনের মতোই মঙ্গলবারেও উত্তরবঙ্গের শীত-চিত্র ছিল একইরকমের। তার উপরে রবি-সোমবারের তুলনায় মঙ্গলবারে দিনের তাপমাত্রা কম থাকায়, সারাদিনই কনকনে ভাব ছিল অনেকটাই বেশি।
মঙ্গলবার সকাল থেকে শুরু করে দিনের কোনও সময়েই সূর্যের দেখা মেলেনি শিলিগুড়ি বা জলপাইগুড়িতে। আকাশ মেঘলা থাকায় হাওয়ায় স্যাঁতস্যাঁতে ভাবও ছিল। দিনের বেলাতেই শিলিগুড়ি টাউন স্টেশন লাগোয়া এলাকায় বাসিন্দাদের আগুন পোহাতে দেখা গিয়েছে। জলপাইগুড়ির পোস্ট অফিস মোড়েও দুপুর বেলাতেও দেখা গিয়েছে একই দৃশ্য। কুয়াশার কারণে মঙ্গলবারেও জাতীয় সড়কে যান চলাচল বিপর্যস্ত হয়েছে। যদিও ট্রেন চলাচলে কোনও প্রভাব পড়েনি বলে উত্তর পূর্ব রেল সূত্রে জানানো হয়েছে। সকালের দিকে একটি বেসরকারি বিমান সংস্থার গুয়াহাটিগামী উড়ানে দেরি হলেও, বাগডোগরা বিমানবন্দরেও বিমান চলাচল স্বাভাবিক ছিল।
কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দফতর সূত্রে জানানো হয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় জলপাইগুড়ি শহর এবং লাগোয়া এলাকায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ১৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা স্বাভাবিকের থেকে ৮ ডিগ্রি কম, কোচবিহারের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ১৫ ডিগ্রি, স্বাভাবিকের থেকে ৯ ডিগ্রি কম। এক লাফে দিনের তাপমাত্রা অনেকটাই কমে যাওয়া, সেই সঙ্গে কনকনে উত্তুরে হাওয়ার দাপটে এ দিন সকালে শিলিগুড়ি-জলপাইগুড়ির বিভিন্ন স্কুলে পড়ুয়াদের উপস্থিতি ছিল অনেকটাই কম। যানবাহনের সংখ্যাও ছিল স্বাভাবিকের থেকে কম।
শীতের প্রত্যাবর্তনে ডুয়ার্সের ধূপঝোরা, গজলডোবা, ক্রান্তির নিশানডোবা সর্বত্রই এ দিনও চড়ুইভাতির আয়োজন দেখা গিয়েছে। মালবাজারের সুভাষমোড় লাগোয়া মহিলাদের শীতবস্ত্রের দোকানের মালিক উত্তম সাহা বলেন, “কয়েকদিন বেশ গরম ছিল। ব্যবসাও একেবারেই কমে গিয়েছিল। কিন্তু গত দু’দিন ধরে ফের শীত পড়ায় আবার শীতবস্ত্র বিক্রি শুরু হয়েছে।”
শীতে কাবু কোচবিহারও। গত তিনদিন ধরেই আকাশ মেঘলা। জেলার প্রাথমিক স্কুলেও ছাত্রছাত্রীদের হার প্রতিদিন-ই কমছে। মঙ্গলবার ঠান্ডার সঙ্গে দিনভরই কনকনে হাওয়া থাকায় রাস্তায় বাইক, সাইকেল এমনকি গাড়ির সংখ্যাও কম ছিল। এই আবহাওয়ায় আলুতে ধসা রোগের প্রকোপ আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছে কৃষি দফতর। জেলা কৃষি দফতরের এক আধিকারিক বলেন, “এই আবহাওয়ার সঙ্গে বৃষ্টি হলেই আলুতে ধসা আরও ছড়াবে। দ্রুত শীত আর কুয়াশা না কমলে আলুর ফলন ভাল হবে না।”
আগামী বৃহস্পতিবার পর্যন্ত কুয়াশা এবং কনকনে হাওয়ার প্রকোপ চলবে বলে এ দিন কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দফতর সূত্রে জানানো হয়েছে। উত্তরবঙ্গের আকাশে থাকা পশ্চিমী ঝঞ্ঝা সরে অসমের দিকে চলে যাওয়ার পরে, ঝঞ্ঝার টানেই উত্তরের হাওয়া ঢুুকতে শুরু করেছে জলপাইগুড়ি কোচবিহারে। আকাশ মেঘলা থাকায় কুয়াশাও থাকবে বলে আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে। তবে দিনের তাপমাত্রা অনেকটাই কমে গেলেও, রাতের তাপমাত্রা বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy