রায়গঞ্জের কর্ণজোড়া এলাকায় এক গৃহবধূর অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনায় অভিযুক্ত মহিলা কনস্টেবলকে ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দিল রায়গঞ্জের মুখ্য বিচারবিভাগীয় আদালত। সোমবার দুপুরে কালিয়াগঞ্জের কলেজপাড়া এলাকার বাসিন্দা অন্তরা গুহনায়েক নামে ওই মহিলা কনস্টেবলকে আদালতে তোলে পুলিশ। বিচারক সব্যসাচী চট্টরাজ তাঁর জামিনের আবেদন নাকচ করে আগামী ২২ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত জেল হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন।
কালিয়াগঞ্জের থানাপাড়া এলাকার বাসিন্দা মানসী মল্লিক (৩৫) নামে এক গৃহবধূকে খুন করার অভিযোগে গত ২ সেপ্টেম্বর অন্তরাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। আদালতের নির্দেশে এরপর তিনি পাঁচ দিনের পুলিশি হেফাজতে ছিলেন। এদিন তাঁর হেফাজতের মেয়াদ শেষ হয়। ধৃত ওই মহিলা কনস্টেবল কর্ণজোড়ায় জুভেনাইল জাস্টিস বোর্ডে নিরাপত্তার দায়িত্বে কর্মরত ছিলেন। গ্রেফতার হওয়ার পর অবশ্য তাকে বরখাস্ত করে জেলা পুলিশ। উত্তর দিনাজপুরের পুলিশ সুপার সৈয়দ ওয়াকার রেজা বলেন, “গৃহবধূর অস্বাভিক মৃত্যু মামলার তদন্ত করছে। এটি খুন না আত্মহত্যা তা ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে আসলেই বোঝা যাবে।”
পুলিশ সূত্রের খবর, ময়নাতদন্তের প্রাথমিক রিপোর্টে পুলিশ জানতে পেরেছে শ্বাসরুদ্ধ হয়ে মানসীদেবীর মৃত্যু হয়েছে। গত পাঁচদিন ধরে পুলিশি জেরায় অন্তরাও দাবি করেছেন, মানসীদেবী ফ্ল্যাটের শৌচাগারে গলায় গামছার ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। তবে মানসীদেবীর মোবাইল, ডায়েরি ও গামছার ফাঁস উদ্ধার হয়নি, তারজন্য খুনের সন্দেহ পুরোপুরি উড়িয়ে দিচ্ছে না পুলিশ। ৩০ অগাস্ট সকালে রায়গঞ্জের কর্ণজোড়া এলাকার অন্তরাদেবীর ভাড়া করা চারতলা ফ্ল্যাটের শৌচাগার থেকে মানসীদেবীর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয় বলে দাবি করেন অন্তরাদেবী। অন্তরাদেবী, তাঁর পরিচারিকা সহ কয়েকজন মহিলা মানসীদেবীর দেহ রায়গঞ্জ জেলা হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পেরেছে, ঘটনার পর অন্তরাদেবীর পরিচারিকা করণদিঘি এলাকায় নিজের বাড়িতে চলে যান। তবে পুলিশ এখনও তাঁকে জেরা করেনি। ওইদিন অন্তরাদেবী, তাঁর পরিচারিকা ছাড়া আর কারা মানসীদেবীর মৃতদেহ হাসপাতালে নিয়ে গিয়েছিলেন, তা এখনও জানতে পারেনি পুলিশ। অন্তরাদেবীর মোবাইলের কললিস্ট খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ছোট থেকেই মানসীদেবী ও অন্তরাদেবীর মধ্যে গভীর বন্ধুত্বের সম্পর্ক ছিল। মানসীদেবী স্বামী ও মেয়েকে ছেড়ে দীর্ঘদিন ধরে অন্তরার সঙ্গে থাকতেন।