কুয়াশার কারণে বিমান বাতিল হওয়ায় বাগডোগরা বিমানবন্দর থেকে বেরিয়ে আসছে যাত্রীরা। —নিজস্ব চিত্র।
খারাপ আবহাওয়ার জেরে বৃহস্পতিবার সারা দিন কোনও বিমান অবতরণ করতে পারল না বাগডোগরা বিমানবন্দরে। এ দিন সব মিলিয়ে বাতিল হয় ১০টি উড়ান।
বুধবার সন্ধ্যা থেকেই উত্তরের বিস্তৃর্ণ এলাকা ঢেকে গিয়েছিল কুয়াশায়। রাতের পর কোথাও কোথায় হালকা বৃষ্টিও হওয়ায় বৃহস্পতিবার সকাল থেকে অবস্থার আরও অবনতি হতে থাকে। ভোর থেকেই বাগডোগরা বিমানবন্দর-সহ আশপাশের এলাকায় ঘন কুয়াশায় ঢেকে থাকে। ক্রমে কমতে থাকে দৃশ্যমানতা। তার জেরেই বিঘ্নিত হয় বিমান পরিষেবা।
বিমানবন্দর সূত্রের খবর, বাগডোগরায় অবতরণের জন্য কম করে ২১০০ মিটার দৃশ্যমানতার দরকার হয়। বৃহস্পতিবার সকালে কুয়াশার জেরে দৃশ্যমানতা নেমে যায় ১০০০ মিটারে। বিকেল পর্যন্ত সেই পরিস্থিতির কোনও উন্নতি হয়নি। জানা গিয়েছে, এ দিন যে দশটি বিমানের বাগডোগরায় অবতরণ করার কথা ছিল, তার মধ্যে কলকাতা থেকে আসা পাঁচটি, দিল্লির চারটি এবং গুয়াহাটির একটি উড়ান ছিল। সকালের দিকে উড়ে যাওয়া বিমানগুলি মাঝরাস্তা থেকে মুখ ঘুরিয়ে অন্যত্র চলে যায়। দিল্লি থেকে উড়ে যাওয়া এয়ার ইন্ডিয়ার একটি বিমান মুখ ঘুরিয়ে চলে আসে কলকাতায়। পরে সেটি অবশ্য দিল্লিতে ফিরে যায়। সব মিলিয়ে এ দিন এয়ার ইন্ডিয়া, ইন্ডিগো, গো এয়ার এবং জেট এয়ারওয়েজের দু’টি করে এবং স্পাইসজেটের একটি বিমান বাতিল হয়।
পর পর বিমান বাতিল হওয়ায় এ দিন চরম সমস্যায় পড়ে যান প্রায় হাজার দেড়েক বিমানযাত্রী। তাঁদের সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত বসে থাকতে হয় বিমানবন্দরে। উল্লেখ্য, চলতি শীতের মরশুমে গত ডিসেম্বর মাসেও এক দিন পাঁচটি এবং অন্য আর এক দিন ন’টি বিমান বাগডোগরা থেকে বাতিল হয়। এই তালিকায় যোগ হল বৃহস্পতিবারের বিপত্তি। বাগডোগরা বিমানবন্দরের অধিকর্তা রাকেশ সহায় বলেন, ‘‘কম দৃশ্যমানতার জন্যই এ দিন কোনও বিমান নামতে পারেনি। যাত্রীদের সমস্যার জন্য আমারা দুঃখ প্রকাশ করছি।” তবে, ওই বিমানবন্দরে ইনস্ট্রুমেন্টাল লান্ডিং সিস্টেম (আইএলএস) থাকলে সমস্যা হত না বলে এএআই-র অফিসারেরা জানিয়েছেন। তবে তা বসানোর প্রক্রিয়া চলছে বলেও জানিয়েছেন বিমানবন্দর কর্তপক্ষ।
এ দিন সকাল থেকেই বিমানবন্দর চত্বর যাত্রীদের ভিড় চোখে পড়ে। একের পর এক উড়ান বাতিল হওয়ায় তাঁদের মধ্যে ক্ষোভও বাড়তে থাকে। দীর্ঘক্ষণ বিমানবন্দরে অপেক্ষা করার সময় সেখানকার পরিকাঠামো নিয়েও অসন্তোষ প্রকাশ করেন অনেকেই। সঞ্চালী রায় নামের এক যাত্রী বলেন, “ছেলে চাকরিতে যোগ দিতে যাচ্ছিল। বিমান বাতিল হওয়ায় এখন রাতের ট্রেনে কলকাতা যেতে হচ্ছে।” সঞ্চালীর মতো আরও বহু যাত্রীদের এ দিন উড়ানের টিকিট বাতিল করে ট্রেন বা বাসে রওনা দিতে দেখা যায়।
শীতের মরশুমের অন্য সময়ের তুলনায় এই অঞ্চলে পর্যটকদের সংখ্যা কমই থাকে। তবে এ দিন বেশ দুর্ভোগে পড়তে হয়েছে কিছু পর্যটককেও। ইস্টার্ন হিমালয়া ট্রাভেল অ্যান্ড ট্যুর অপারেটর্স অ্যাসোসিয়েশনের কার্যকরী সভাপতি সম্রাট সান্যাল বলেন, “কিছু পর্যটককে হোটেলে রেখে আজ, শুক্রবার বিমানে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy