মালদহের চাঁচল মহকুমা হাসপাতালের উন্নয়নের দাবিতে নাগরিক মঞ্চের ডাকে ছ’ ঘণ্টা পরিবহণ ধর্মঘটের জেরে মঙ্গলবার নাজেহাল হলেন নিত্যযাত্রীরা। এমনকী যে হাসপাতালের উন্নয়নের দাবিতে মঞ্চের আন্দোলন, যানবাহন না থাকায় সেই হাসপাতালে পৌঁছাতেও ভোগান্তিতে পড়তে হয় রোগীদের। মঙ্গলবার সকাল ছ’টা থেকে পরিবহণ ধর্মঘট শুরু হওয়ার পর আন্দোলনকারীদের একাংশ বিভিন্ন এলাকায় তাণ্ডব চালান বলে অভিযোগ।
বিভিন্ন জায়গায় যাত্রীদের টেনে হিঁচড়ে গাড়ি থেকে নামানো, বাঁশ-লাঠি নিয়ে যাত্রীদের তাড়া করার মতো একাধিক অভিযোগ পেলেও পুলিশ কোনও ব্যবস্থা নেয়নি বলে অভিযোগ উঠেছে। হরিশ্চন্দ্রপুরের একটি স্কুলের শিক্ষিকা অচিরা হালদার ও আলপনা দাস জানান, ছোট গাড়ি ভাড়া করে যাওয়ার সময় রাস্তায় বাঁশ-লাঠি নিয়ে তাড়া করে গাড়ি দাঁড় করিয়ে তাঁদের নামিয়ে দেওয়া হয়। পুলিশকে জানিয়েও লাভ হয়নি কোনও। কনুয়া এলাকার বাসিন্দা মুরেফা বিবি বলেন, “অসুস্থ ছেলেকে নিয়ে অটোয় চেপে হাসপাতালে যাচ্ছিলাম। পুলিশের সামনেই অটো দাঁড় করিয়ে আমাদের নামিয়ে দেওয়া হল। তারপর প্রায় দেড় কিলোমিটার হেঁটে গিয়ে হোসপাতালে পৌঁছাই। আন্দোলনের নামে কেন এই তাণ্ডব? প্রশ্ন তুলেছেন বাসিন্দারা।
চাঁচলের মহকুমাশাসক সঞ্জীব দে বলেন, “আন্দোলনকারীদের সঙ্গে কথা বলে সমস্যা মেটাতে বিডিওকে পাঠানো হয়েছিল। নাগরিকদের সমস্যায় ফেলে এ রকম আন্দোলন মেনে নেওয়া যায় না।” বছর তিনেক আগে চাঁচলের বিভিন্ন সমস্যা সামনে আনতে ওই অরাজনৈতিক মঞ্চ তৈরি হয়। গত ৩ জুন হাসপাতালের উন্নয়ন নিয়ে আন্দোলনের সময় এক স্বাস্থ্য কর্তার মুখে কালি দেওয়ার ঘটনার পরও নাগরিক মঞ্চের কার্যকলাপ নিয়ে বিতর্ক হয়েছিল। তৃণমূলের অভিযোগ, এর মধ্যেই দু’শো শয্যার মহকুমা হাসপাতালের অনুমোদন মেলে। মাল্টি স্পেশালিটি হাসপাতালের কাজ শুরু হয়েছে। রাজ্য সরকারকে হেয় করতে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে মঞ্চ এখন আন্দোলন চালাচ্ছে।
তৃণমূল নেতা তথা চাঁচল-১ ব্লকের প্রাক্তন সভাপতি মজিবর রহমান বলেন, “নাগরিক মঞ্চ রাজনৈতিক মঞ্চে পরিণত। নাগরিকদের সমস্যা হয়, এমন আন্দোলনের যৌক্তিকতা নেই। এদিন আন্দোলনের নামে যা হল তা মানা যায় না। যাত্রীরা নাজেহাল হলেও পুলিশ প্রশাসন নীরব ছিল।”
নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ মানতে চাননি চাঁচলের আইসি তুলসীদাস ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, “পুলিশে কেউ অভিযোগ জানাননি। আর পুলিশের সামনে ঘটনা ঘটেনি।” নাগরিক মঞ্চের আহ্বায়ক দেবব্রত ভোজ অবশ্য বলেন, “বৃহত্তর স্বার্থেই আমরা হাসপাতালের উন্নয়ন নিয়ে আন্দোলনে নেমেছি। তাই এখানে কোনও রকম রাজনীতি নেই। মঞ্চে ঢুকে কিছু মানুষ বদনাম করতে চাইছে। তাদের চিহ্নিত করে মঞ্চ থেকে বার করে দেওয়া হবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy