Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪

গণধর্ষণের মামলা নিয়ে দুই পক্ষের মারামারি

গণধর্ষণের মামলা নিয়ে অভিযুক্ত এবং অভিযোগকারী দু’পক্ষের মারামারির ঘটনা ঘটল শিলিগুড়িতে। রবিবার সকালে অন্যতম অভিযুক্ত ছোটু যাদবের বাড়িতে গিয়ে তাঁর স্ত্রীর উপরে অভিযোগকারিনী হামলা করেন বলে অভিযোগ। এরপরেই গোয়ালাপট্টি এলাকার বাসিন্দাদের একাংশ ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে বলে জানা গিয়েছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ২৫ অগস্ট ২০১৪ ০১:৩১
Share: Save:

গণধর্ষণের মামলা নিয়ে অভিযুক্ত এবং অভিযোগকারী দু’পক্ষের মারামারির ঘটনা ঘটল শিলিগুড়িতে। রবিবার সকালে অন্যতম অভিযুক্ত ছোটু যাদবের বাড়িতে গিয়ে তাঁর স্ত্রীর উপরে অভিযোগকারিনী হামলা করেন বলে অভিযোগ। এরপরেই গোয়ালাপট্টি এলাকার বাসিন্দাদের একাংশ ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে বলে জানা গিয়েছে। এ দিন দু’দফায় অভিযোগকারিনীর বাড়ির উপরে চড়াও হয় গোয়ালাপট্টি এলাকার বাসিন্দাদের একাংশ। দুপক্ষই থানায় অভিযোগ জানায়। অবস্থা সামাল দিতে ঘটনাস্থলে যান শিলিগুড়ি থানার পুলিশ। রাত পর্যন্ত এলাকায় উত্তেজনা ছিল।

এ দিন সকাল থেকেই এলাকায় উত্তেজনা ছিল। বাসিন্দাদের অভিযোগ, বেলা ১০ টা নাগাদ অন্যতম অভিযুক্ত ছোটুর বাড়িতে গিয়ে তাঁর স্ত্রীকে মারধর করে অভিযোগকারিনী। এলাকার বাসিন্দা শঙ্কর যাদবের অভিযোগ, “ধর্ষণের অভিযোগকারী মহিলার পরিবার বিভিন্নরকম বেআইনি ও সমাজবিরোধী কাজের সঙ্গে যুক্ত। তার প্রতিবাদ যারা করেছে, তাঁদের নামেই বিভিন্ন সময়ে তাঁরা নানারকম অপবাদ-অভিযোগ দেয়। এবারে সকলে ক্ষেপে গিয়েছে।”

এ দিন দুপুরে এলাকার বাসিন্দাদের একাংশ অভিযোগকারিনীর বাড়িতে পাল্টা হামলা চালায় বলে অভিযোগ। অভিযোগকারীর ভাই অমিত গুপ্ত পাল্টা অভিযোগ করে বলেন, “আমার দাদা ও মাকে মারধর করে কিছু লোক। অভিযোগ তুলে নেওয়ার জন্য চাপ দেওয়া হচ্ছে। এ বিষয়ে থানায় অভিযোগ জানিয়েছি।” গত শনিবার শিলিগুড়ি থানায় গোয়ালাপট্টির বাসিন্দা ওই মহিলা তিন যুবক মিলে গণ ধর্ষণ করে বলে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। তারই ভিত্তিতে পুলিশ ছোটু যাদব নামে একজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে।

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, শনিবার মাঝরাতে রাতে ওই বধূর ডাক্তারি পরীক্ষা করা হয়। পুলিশের দাবি, ডাক্তারি পরীক্ষায় প্রাথমিক ভাবে শারীরিক অত্যাচারের কোনও চিহ্ন মেলেনি। যদিও, পরীক্ষার চূড়ান্ত রিপোর্ট পেলেই বিষয়টি নিষ্চিত করে জানা যাবে। এ দিকে, ঘটনায় অন্যতম অভিযুক্ত ছোটু যাদবকে এখনও গ্রেফতার না করলেও, তাকে জেরা করা হচ্ছে পুলিশ জানিয়েছে। শিলিগুড়ির পুলিশ কমিশনার জগমোহন বলেন, “ডাক্তারি পরীক্ষায় ধর্ষণের প্রমাণ মেলেনি। তবু আমরা কোনও ঝঁুকি নিতে চাইছি না। আমরা প্রত্যেক অভিযুক্তদেরও ডাক্তারি পরীক্ষা করাব।’’

অনান্য অভিযুক্তদের খোঁজে তল্লাশি চলছে বলে পুলিশ কমিশনার জানিয়েছেন। এই ঘটনায় আরও দুই অভিযুক্তের মোবাইল ফোন বাজেয়াপ্ত করেছে পুলিশ। দু’জন এলাকায় নেই বলে পুলিশের দাবি। তাদের বাড়ি থেকে ফোন বাজেয়াপ্ত করার কথা জানিয়েছে পুলিশ। এ দিকে পুলিশের ভূমিকায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অভিযোগকারিনীর আইনজীবী অত্রি শর্মা। তিনি অভিযোগ করেন, “আমার মক্কেলকে মামলা তুলে নেওয়ার জন্য বিভিন্ন মহল থেকে চাপ দেওয়া হচ্ছে। তবে আমরা মামলা তুলছি না। প্রয়োজনে হাইকোর্টে যাব।” অভিযুক্তরাও এলাকায় ঘোরাফেরা করছে বলে দাবি করে আইনজীবীর প্রশ্ন, “এলাকায় তৃণমূলের সমর্থক হওয়াতেই কী তাদের ধরা হচ্ছে না?”

যদিও ঘটনায় দলের কোনও যোগ নেই বলে এ দিনও দাবি করেছেন তৃণমূল জেলা কমিটির সদস্য মিলন দত্ত। তিনি বলেন, “পুলিশকে নিরপেক্ষভাবে কাজ করতে অনুরোধ করেছি। অভিযুক্তদের সঙ্গে দলের সঙ্গে কোনও সম্পর্ক নেই। তবে অভিযোগকারীরা নিজেরাই বিভিন্ন অপরাধমূলক কাজের সঙ্গে যুক্ত বলে এলাকাবসীদের দাবি। যতদূর শুনেছি ওই মহিলাও এখন অভিযোগ প্রত্যাহার করতে চাইছে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

gang-rape case siliguri clash
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE