Advertisement
E-Paper

গরমে ফাটছে মাটি, ক্ষতি ধান-পাট চাষে

প্রবল দাবদাহে উত্তরবঙ্গের বিস্তীর্ণ এলাকার ফসলের মাঠ পুড়ছে খালবিল শুকিয়ে কাঠ. বাতাসের আর্দ্রতা হু হু করে কমতে থাকায় শুকনো মাটিতে বীজ গজাচ্ছে না. বোরো ধানের জমি ফুটিফাটা চেহারা নিয়েছে. বিঘার পর বিঘা জমির পাট চারা ঝলসে যাচ্ছে. কৃষি দফতরের কর্তাদের আশঙ্কা, আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে বৃষ্টি না হলে পাট উ|পাদন মার খাবে।

বিশ্বজ্যোতি ভট্টাচার্য

শেষ আপডেট: ২৬ এপ্রিল ২০১৪ ০১:৫৭

প্রবল দাবদাহে উত্তরবঙ্গের বিস্তীর্ণ এলাকার ফসলের মাঠ পুড়ছে খালবিল শুকিয়ে কাঠ. বাতাসের আর্দ্রতা হু হু করে কমতে থাকায় শুকনো মাটিতে বীজ গজাচ্ছে না. বোরো ধানের জমি ফুটিফাটা চেহারা নিয়েছে. বিঘার পর বিঘা জমির পাট চারা ঝলসে যাচ্ছে. কৃষি দফতরের কর্তাদের আশঙ্কা, আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে বৃষ্টি না হলে পাট উ|পাদন মার খাবে। যার প্রভাব পড়বে আগামী পুজোর বাজারে। পরিস্থিতির দিকে সতর্ক নজরদারির জন্য শুক্রবার বিকেলে নবান্ন থেকে উত্তরবঙ্গ আঞ্চলিক কৃষি অধিকর্তার দফতরে জরুরি নির্দেশ পাঠানো হয়েছে।

কৃষি দফতরের সহ অধিকর্তা (বীজ) অমিয় দেবনাথ বলেন, “এবার কালবৈশাখী পাইনি। মাটিতে রস নেই। বীজ গজাচ্ছে না। এক সপ্তাহের মধ্যে বৃষ্টি না হলে পাট উৎপাদন মার খাবে। জলের অভাবে ধানের অবস্থাও ভাল নয়। উত্তরবঙ্গের পুজোর বাজারের অনেকটা এখনও পাট উৎপাদন ও বাজার দামের উপরে নির্ভরশীল। কিন্তু অনাবৃষ্টির কারণে চাষের জমির হাল দেখে আগামী পুজোর বাজার যে ভাল হবে না সেটা শুধু কৃষি দফতর নয় অন্য দফতরের কর্তারাও টের পাচ্ছেন। পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে জলপাইগুড়ি জেলা পরিষদ কর্তারা সোমবার জরুরি বৈঠক ডেকেছেন।” জেলা পরিষদের সভাপতি নূরজাহান বেগম বলেন, “ভয়াবহ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। পাট ঘরে উঠবে কিনা সন্দেহ আছে। পাটের উপরে পুজোর বাজার নির্ভর করে। বিরাট ক্ষতি হবে। পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে বিভিন্ন দফতরের কর্তাদের নিয়ে আগামী সোমবার বসব।”

গত বুধবার দফতরের অধিকর্তা জলপাইগুড়ি জেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখেন শুধু পাট নয় বোরো ধানের জমিও ফুটিফাটা হয়েছে। জলস্তর এত দ্রুত নিচে নামছে যে ছোট নদী, নালা ও ডোবাগুলি শুকিয়ে কাঠ হয়েছে। ফলে অনেক এলাকায় সেচের ব্যবস্থা করা সম্ভব হচ্ছে না। কৃষি দফতরের অতিরিক্ত অধিকর্তা সুজিত পাল বলেন, “তাপমাত্রার পারদ ৩৬ থেকে ৩৭ ডিগ্রির মধ্যে থাকছে। এ ভাবে চলতে থাকলে বড় ক্ষতি হবে।”

কৃষি দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, উত্তরবঙ্গের আড়াই লক্ষ হেক্টর কৃষি জমির মধ্যে প্রতি বছর প্রায় ৪০ হাজার থেকে ৪৫ হাজার হেক্টর জমিতে পাট চাষ হয়। এবার হয়েছে প্রায় ৩০ হাজার হেক্টর জমিতে। অনাবৃষ্টির কারণে তার মধ্যে ২০ শতাংশ জমির পাটের বীজ গজায়নি। যে জমিতে চারা উঠেছে তার ১৫ শতাংশ শুকিয়ে লাল হয়েছে। মাটি শুকিয়ে যাওয়ায় উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জেলার প্রচুর চাষি প্রস্তুতি নিয়েও পাট বীজ বুনতে পারেনি।

যেমন, উত্তর দিনাজপুর জেলায় ২০ হাজার হেক্টর জমিতে পাট চাষ হলেও এখন পর্যন্ত বীজ বোনা সম্ভব হয়েছে মাত্র দেড় হাজার হেক্টর জমিতে। জেলা কৃষি আধিকারিক জ্যোতির্ময় বিশ্বাস বলেন, “যে বীজ বোনা হয়েছে তার বেশির ভাগ গজায়নি।” শিলিগুড়ি মহকুমাতেও একই ছবি। খড়িবাড়ি ও ফাসিদেওয়া ব্লকে দেড় হাজার হেক্টর জমিতে পাট চাষ হয়ে থাকে। এবার এখন পর্যন্ত মাত্র ১১০ হেক্টর জমিতে বীজ ফেলা সম্ভব হয়েছে। খড়িবাড়ি ও ফাসিদেওয়া ব্লক কৃষি আধিকারিক মেহফুজ আহমেদ জানান, জমিতে রস না থাকায় ৬০ হেক্টর জমিতে বীজ গজায়নি। শিলিগুড়ি মহকুমা কৃষি আধিকারিক তুষারকান্তি ভূষণ বলেন, কয়েকদিনের মধ্যে বৃষ্টি না হলে ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে। কৃষি আধিকারিকরা জানান, ২০১৩ সালে কোচবিহারে ৫২ হাজার হেক্টর, জলপাইগুড়িতে ৩১৮৬ হেক্টর, দক্ষিণ দিনাজপুরে ৩৪ হাজার হেক্টর এবং মালদহে ২৫ হাজার ৮৬৩ হেক্টর জমিতে পাট চাষ হয়েছে। এ বার ছবিটা উল্টো। বৃষ্টির অভাবে শুকনো জমিতে বেশির ভাগ চাষি এ বার পাট বীজ বুনতেই পারেনি।

biswajit bhattacharya scorching heat
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy