Advertisement
E-Paper

ছোট বাগানে ঘণ্টা প্রতি মজুরির প্রস্তাব

চা বাগানে কর্মসংস্কৃতি ফেরাতে নতুন মজুরি চুক্তি ঘণ্টার ভিত্তিতে চালু করার দাবি তুললেন উত্তরবঙ্গের ক্ষুদ্র চা চাষিদের একাংশ। রবিবার শিলিগুড়িতে ছোট চা চাষিদের সংগঠন, নর্থ বেঙ্গল স্মল টি প্ল্যান্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের বার্ষিক সাধারণ সভায় ওই দাবি তোলা হয়েছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৫ অগস্ট ২০১৪ ০২:০২

চা বাগানে কর্মসংস্কৃতি ফেরাতে নতুন মজুরি চুক্তি ঘণ্টার ভিত্তিতে চালু করার দাবি তুললেন উত্তরবঙ্গের ক্ষুদ্র চা চাষিদের একাংশ। রবিবার শিলিগুড়িতে ছোট চা চাষিদের সংগঠন, নর্থ বেঙ্গল স্মল টি প্ল্যান্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের বার্ষিক সাধারণ সভায় ওই দাবি তোলা হয়েছে। ছোট চা বাগান মালিকদের বক্তব্য, “উত্তরবঙ্গের বহু বাগানে শ্রমিকেরা ঠিকঠাক ৮ ঘণ্টা কাজ করেন না। ৪-৫ ঘণ্টা কাজ করে অনেকেই চলে যান। বিষয়টি নিয়ে চাপাচাপি করতে গেলে শ্রমিক অসন্তোষ হয়। তাই নতুন হারে যাই মজুরি চুক্তি হবে তা আট ঘণ্টার হিসেবে ভাগ করে ঘণ্টা হিসাবে শ্রমিকদের মজুরি দেওয়ার প্রক্রিয়া চালু করা দরকার। এতে যে শ্রমিক যত কাজ করবেন, তিনি তত টাকা পাবেন। বাগানের কর্মসংস্কৃতি এবং কাজের মানের উন্নয়ন হবে।”

যদিও ওই দাবির বিরোধিতা করে সরব ডান-বাম শ্রমিক সংগঠনগুলি। গত ৩১ মার্চ চা বাগানের শ্রমিক মজুরি চুক্তি শেষ হয়েছে। নতুন চুক্তির জন্য ইতিমধ্যে চা দফায় বৈঠকও হয়েছে। শেষ বার ১৬ জুলাই শিলিগুড়ির উত্তরকন্যায় ত্রিপাক্ষিক বৈঠক হয়েছে। বৈঠক ফলপ্রসূ না হওয়ায় ৭ এবং ৮ অগস্ট ফের উত্তরকন্যায় ত্রিপাক্ষিক বৈঠক ডেকেছে রাজ্যের শ্রম দফতর। এই বৈঠকের আগে ক্ষুদ্র চা চাষিদের এই দাবি ঘিরে বিতর্ক দেখা দিয়েছে।

নর্থবেঙ্গল স্মল টি প্ল্যান্টার্সের নবনিযুক্ত সম্পাদক নিতাই মজুমদার বলেন, “আমরা বাগান এবং কাজের মানের উন্নয়ন চাই। এর জন্য অনেক বাগানেই কর্মসংস্কৃতি ফেরানো দরকার। তাহলেই উন্নত মানের চা পাতা উপাদন হবে। শ্রমিকদের একাংশ বরাবর নানা সমস্যায় ফেলে। তাই আমরা চাই ঘণ্টা হিসাবে মজুরি দেওয়ার প্রক্রিয়া চালু হোক।” তিনি জানিয়েছেন, ইতিমধ্যে তৃণমূল, কংগ্রেস এবং বামেদের শ্রমিক সংগঠনগুলির নেতাদের মৌখিকভাবে দাবির কথা জানানো হয়েছে। নতুন চুক্তিতে যাই মজুরি ঠিক হোক, তাতে আমাদের কোনও আপত্তি নেই।

উত্তরবঙ্গের কোচবিহার, দার্জিলিং, জলপাইগুড়ি এবং দার্জিলিং জেলায় মূলত ছোট চা বাগানগুলি রয়েছে। এর সংখ্যা সরকারি হিসাবেই প্রায় ৪৫ হাজার। বাগানগুলির উপর নির্ভরশীল দু’লক্ষের উপরে মানুষ। উত্তরবঙ্গের মোট চা উৎপাদনের প্রায় ৩৫ শতাংশ কাঁচা পাতা এই বাগানগুলি থেকেই আসে। পরে তা বটলিফ এবং বড়-ছোট না কারখানায় পৌঁছয়। শেষ চা শ্রমিক মজুরি মেনে এই বাগানগুলি স্থায়ী শ্রমিকদের এখন ৯৫ টাকা করে রোজ মজুরি দেন। তবে বহু ছোট বাগানে ঘন্টার ভিত্তিতে অস্থায়ী শ্রমিকদের দিয়ে কাজ করানোর ব্যবস্থা চালু রয়েছে। ছোট চা চাষিদের সঙ্গে অবশ্য মজুরি ব্যবস্থা নিয়ে একমত নন বাম-ডান শ্রমিক সংগঠনগুলি। তৃণমূলের টি প্ল্যান্টার্স ওয়ার্কার্স ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় কমিটির কার্যকরী সভাপতি অলোক চক্রবর্তী বলেন, “ওই দাবি কোনও ভাবেই মানা যাবে না। ওই ভাবে মজুরি দেওয়া হলে, মালিকেরা ইচ্ছা মত কাজ করাবেন। ছোট বাগানের শ্রমিকদের পিএফ, মাতৃত্বকালীন ছুটি, সাধারণ ছুটি-সহ অন্যান্য সুযোগ সুবিধা নিয়ে ওই বাগান মালিকদের ভাবা দরকার।”

দাবির বিরোধিতা করেছে সিটুও। সংগঠনের দার্জিলিং জেলার নেতা তথা প্রাক্তন সাংসদ সমন পাঠক বলেন, “একাংশ শ্রমিকরা কাজে ফাঁকি দিতে পারেন। তবে তারজন্য সবাই তা করেন এমনটা নয়। আর ছোট চা বাগানের উৎপাদন তো দিনদিন বাড়ছে। তাহলে কর্মসংস্কৃতি না থাকলে কী করে উৎপাদন বাড়ছে। আমরা ওই দাবি মানব না।” একই ভাবে দাবির বিরোধিতা করেছেন কংগ্রেস প্রভাবিত এনইউপিডব্লুউ-র রাজ্যের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মণি ডার্নালও। তাঁর কথায়, “এতে স্থায়ী ও অস্থায়ী শ্রমিকদের মধ্যে পার্থক্য থাকবে না।” রবিবার বার্ষিক সভা থেকে চাষিদের সংগঠনটি স্মাট কার্ড চালুর উপর জোর দেওয়া ছাড়া চা চাষে জমির দ্রুত শংসাপত্র, সেস এবং কৃষি আয়কর মকুব করার জন্য রাজ্য সরকারের কাছে ফের দাবি জানানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

wage labourer siliguri
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy