Advertisement
E-Paper

জায়গা না ছেড়েই রাস্তার পাশে ভবন, বিতর্ক

রাস্তার গা ঘেঁষে কোনও জায়গা না ছেড়ে কী ভাবে একটি বাণিজ্যিক ভবন তৈরি হচ্ছে, তা নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়েছে শিলিগুড়িতে। শহরের অন্যতম ব্যস্ত রাস্তা বিধান রোডের একটি বাণিজ্যিক ভবন তৈরি নিয়েই বিতর্কের সূত্রপাত। পুর বিধি অনুযায়ী, রাস্তা ও কোনও বাড়ি বা বাণিজ্যিক কেন্দ্রের নির্মাণের মাঝে ন্যূনতন কিছু জায়গা রাখা বাধ্যতামূলক। কিন্তু বিধান রোডের ওই বাণিজ্যিক কেন্দ্রের দেওয়াল, সিঁড়ি একেবারে রাস্তা ঘেঁষেই উঠেছে।

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ০২:৪২
এ ভাবেই রাস্তার ধার ঘেঁষে তৈরি হচ্ছে ভবন। শিলিগুড়ির বিধান রোডে। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক।

এ ভাবেই রাস্তার ধার ঘেঁষে তৈরি হচ্ছে ভবন। শিলিগুড়ির বিধান রোডে। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক।

রাস্তার গা ঘেঁষে কোনও জায়গা না ছেড়ে কী ভাবে একটি বাণিজ্যিক ভবন তৈরি হচ্ছে, তা নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়েছে শিলিগুড়িতে।

শহরের অন্যতম ব্যস্ত রাস্তা বিধান রোডের একটি বাণিজ্যিক ভবন তৈরি নিয়েই বিতর্কের সূত্রপাত। পুর বিধি অনুযায়ী, রাস্তা ও কোনও বাড়ি বা বাণিজ্যিক কেন্দ্রের নির্মাণের মাঝে ন্যূনতন কিছু জায়গা রাখা বাধ্যতামূলক। কিন্তু বিধান রোডের ওই বাণিজ্যিক কেন্দ্রের দেওয়াল, সিঁড়ি একেবারে রাস্তা ঘেঁষেই উঠেছে। ফলে বিধান রোড থেকে হেঁটে বিমান মার্কেটের দিকে যেতে চাইলে বিপদের ঝুঁকি নিয়ে রাস্তার মাঝখান দিয়ে যেতে হবে। না হলে দেওয়াল ঘেঁষে হাঁটতে হবে।

বাসিন্দা ও নিত্যযাত্রীদের বক্তব্য, দু’টি ক্ষেত্রেই দুর্ঘটনার আশঙ্কা রয়েছে। শুধু তা-ই নয়, এখন রাস্তার উপরেই বড় বড় বাঁশ বসিয়ে নির্মাণ কাজ চলছে। ফলে, রাস্তা আরও সরু হয়ে পড়েছে। পুজোর সময়ে সেখানে ভিড় উপচে পড়ে। তাতে যে কোনও মুহূর্তে রাস্তায় দাঁড় করানো, বাঁশ খুলে বিপদের আশঙ্কাও উড়িয়ে দিচ্ছেন না পুজো কমিটির উদ্যোক্তাদের অনেকেই। অবিলম্বে ওই বাঁশ খোলানোর দাবি তুলেছেন বাসিন্দারা। শিলিগুড়ি পুরসভার কমিশনার সোনম ওয়াংদি ভুটিয়া বলেন, “বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে। রাস্তা দখল করে বাঁশ বাঁধা উচিত নয়।” কিন্তু কবে বাঁশ খোলানো হবে, তা নিয়ে স্পষ্ট করে কিছুই জানাতে পারেননি কমিশনার। নির্মাতা সংস্থার অন্যতম কর্ণধার নিরঞ্জন মিত্তাল বলেন, “নির্মাণ কাজে কোনও অনিয়ম আছে কি না, তা প্রশাসন খতিয়ে দেখতে পারে। কারও যাতায়াতে যাতে সমস্যা না হয় নিশ্চয়ই দেখা হবে।”

পুরসভা সূত্রের খবর, ওই বাণিজ্যিক ভবনটি এসজেডিএ ও একটি বেসরকারি সংস্থার যৌথ উদ্যোগে তৈরি হচ্ছে। ফলে এসজেডিএ-এর বিরুদ্ধেও মর্জিমাফিক কাজে মদত দেওয়ার অভিযোগ তুলেছেন নিত্যযাত্রী ও এলাকার বাসিন্দাদের অনেকেই। বাম আমলে ওই বেসরকারি সংস্থার সঙ্গে এসজেডিএ-র সমঝোতাপত্র সই হয়। বেসরকারি সংস্থাটির অন্যতম কর্ণধার নিরঞ্জন মিত্তাল।

ভবিষ্যতের সমস্যার কথা না ভেবে জনবহুল বিধান রোডে ওই ধরনের বাণিজ্যিক নির্মাণের ব্যাপারে কেন প্রাক্তন পুরমন্ত্রী অশোক ভট্টাচার্য আগ্রহী হয়েছিলেন, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে এলাকায়। ভুক্তভোগী বাসিন্দাদের অনেকেরই বক্তব্য, পুর বিধির তোয়াক্কা না করে যে ভাবে ওই কেন্দ্রটি তৈরি হচ্ছে, তাতে আগামী দিনে জটিলতা তৈরি হতে পারে। বিশেষত রাস্তার অন্য পাশে রয়েছে কাঞ্চনজঙ্ঘা স্টেডিয়াম, যেখানে নিয়মিত বড় মাপের খেলার আসর, অনুষ্ঠানও হয়ে থাকে। প্রতি বছর উত্তরবঙ্গ উত্‌সবের একাধিক অনুষ্ঠানও হয় সেখানে। অশোকবাবুর আমলেও নানা অনুষ্ঠান হয়েছে সেখানে। বাম আমলেও ওই ভবনটি তৈরি করার বিরোধিতা করেছিল কংগ্রেস। যুব কংগ্রেস নেতা সুজয় ঘটকের নেতৃত্বে আন্দোলনের জেরে নির্মাতা সংস্থা ও এসজেডিএ কিছুটা পিছু হটে। তখন নির্মিত ভবনের কিছুটা ভেঙে রাস্তা চওড়া হয়। পরে সেই চওড়া অংশের গা ঘেঁষে নির্মাণ হচ্ছে। অশোকবাবু বলেন, “রেলের থেকে জমিটি কিনতে হয়েছিল। তখন এসজেডিএ-র হাতে বেশি টাকা ছিল না। পার্কিং এবং বাণিজ্যিক ভবন তৈরির জন্য পদ্ধতি মেনে একটি সংস্থাকে কাজের বরাত দেওয়া হয়। রাস্তা সরু হয়ে যাবে বলে নানা মহল সরব হওয়ায় প্রথম দিকে ওই ভবনের কিছুটা অংশ ভেঙেও দেওয়া হয়। এখন যে ভাবে নির্মাণ হচ্ছে তাতে আমার উপলব্ধি, বাণিজ্যিক কেন্দ্রটি ওখানে গড়ার সিদ্ধান্ত না নিলেই ভাল হত।”

এসজেডিএ-এ বর্তমান চেয়ারম্যান তথা উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব বলেন, “বাম আমলে এসজেডিএ-র নানা কাজে অনিয়ম, পক্ষপাতিত্ব, দুর্নীতি হয়েছে বলে বিস্তর অভিযোগ। বিধান রোডের ওই প্রকল্পটি নিয়েও অনেক বিতর্ক রয়েছে। আমরা ক্ষমতায় আসার পরে ওই সংস্থাটিকে তাদের দেওয়া টাকা সুদ সমেত ফিরিয়ে, জায়গাটি চেয়েছিলাম। সেটায় ওই সংস্থা রাজি হলে এত জটিলতা বাড়ত না।”

siliguri bidhan road commercial building construction
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy