ব্যবসা-বন্ধে সুনসান জয়গাঁ।
থানায় ভাঙচুর চালানোয় প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগে জয়গাঁ ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদককে ৮ দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে আদালত। বুধবার ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক রামাশঙ্কর গুপ্তকে আলিপুরদুয়ারের অতিরিক্ত মুখ্য বিচারবিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেট শুভদীপ চৌধুরীর এজলাশে তোলা হয়। এ দিকে, সম্পাদককে গ্রেফতারের প্রতিবাদে বুধবার জয়গাঁতে ব্যবসাতে বন্ধ ডেকেছিল ব্যবসায়ী সমিতি। যার জেরে এ দিন সকাল থেকে রাত পর্যন্ত জয়গাঁর দোকান-বাজার সবই বন্ধ ছিল।
এলাকার এক ঠিকাদারকে খুনের অভিযোগে গত রবিবার সকালে জয়গাঁ থানা চত্বর রণক্ষেত্রের চেহারা নেয়। থানার ভিতরে দু’টি পুলিশের গাড়ি সহ পাঁচটি গাড়িতে ভাঙচুর চালানোর অভিযোগ ওঠে বাসিন্দাদের একাংশের বিরুদ্ধে। তিনটি গাড়িতে আগুন লাগানোর ঘটনাও ঘটে। ওই ঘটনায় বাসিন্দাদের প্ররোচিত করার অভিযোগে গত মঙ্গলবার ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদককে গ্রেফতার করে পুলিশ। পুলিশের দাবি, ঘটনার সময়ের ভিডিও ফুটেজে ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদকের জড়িত থাকার প্রমাণ মিলেছে। জেলা পুলিশ সুপার অনুপ জায়সবাল জানিয়েছে, থানায় ভাঙচুরের ঘটনায় আরও কয়েকজনের জড়িত থাকার তথ্য হাতে এসেছে। সকলকে গ্রেফতার করা হবে।
মঙ্গলবার গ্রেফতারের পরে অবশ্য বিক্ষোভের আশঙ্কায় ধৃতকে রাতে জয়গাঁ থানায় না রেখে আলিপুরদুয়ার থানায় নিয়ে আসা হয়। সেখান থেকেই এ দিন সকালে আদালতে পাঠানো হয় ধৃতকে। আলিপুরদুয়ারের সরকারী আইনজীবী মহম্মদ রফি বলেন, “ঘটনার সময়ে তোলা ভিডিও ফুটেজ পুলিশের কাছে রয়েছে তাতে উস্কানির অভিযোগের প্রমাণ রয়েছে। অভিযুক্ত রামা শংকর গুপ্তাকে ৮ দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেন বিচারক।”
এ দিন অবশ্য আদালত চত্বরে দাঁড়িয়ে নিজেকে ফের নির্দোষ বলে দাবি করেছেন রামাশঙ্করবাবু। রামাশঙ্করবাবুর আইনজীবী সু্হৃদ মজুমদার বলেন, “ব্যবসায়ী সমিতিও থানায় ভাঙচুরের নিন্দা করেছিল। তারপরেও পুলিশ নিজেদের ব্যর্থতা ঢাকতে ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদকে গ্রেফতার করেছে।” পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে ব্যবসায়ীদের সংগঠনও। আলিপুরদুয়ার চেম্বার অফ কর্মাস অ্যান্ড ইন্ড্রাস্ট্রিজের সাধারণ সম্পাদক প্রসেনজিত্ দে বলেন, “বিষয়টি নিয়ে ব্যবসায়ীদের মধ্যে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে।” পরবর্তী আন্দোলন কর্মসূচি স্থির করতে এ দিন রাতে ফের বৈঠকে বসে ব্যবসায়ী সংগঠন। ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদককে গ্রেফতার নিয়ে রাজনৈতিক মহলেও প্রতিক্রিয়া হয়েছে। তৃণমূলের আলিপুরদুয়ার জেলার সভাপতি সৌরভ চক্রবর্তী বলেন,“কী ঘটনা ঘটেছে তা জানতে জয়গাঁয় ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈঠক করব। খুনের ঘটনায় পুলিশ দু’জনকে গ্রেফতার করেছে। থানায় ভাঙচুর হয়েছে। পুলিশ আইনি পদক্ষেপ নিয়েছে।” আরএসপি নেতা নির্মল দাস বলেন, “ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদককে কেন গ্রেফতার করা হল বোঝা যাচ্ছে না। উনি সমাজসেবা মূলক নানা কাজে জড়িত ছিলেন।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy