আনন্দচন্দ্র কলেজের বার্ষিক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান চলাকালীন তৃণমূল ছাত্র পরিষদের এক দল সমর্থকের সঙ্গে বিজেপি যুব মোর্চার সমর্থকদের সংঘর্ষের অভিযোগ উঠল। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় কলেজ চত্বরে ঘটনাটি ঘটে। দুই তরফে একে অন্যের বিরুদ্ধে কোতোয়ালি অভিযোগ দায়ের করা হয়। জলপাইগুড়ির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জেমস কুজুর বলেন, “ঘটনাটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”
গত সোমবার থেকে কলেজে পাঁচদিনের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান চলছে। বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠান দেখার জন্য কলেজ চত্বরে ছাত্রদের পাশাপাশি প্রাক্তনীরও ভিড় করে। তৃণমূল ছাত্র পরিষদ পরিচালিত ছাত্র সংসদের অভিযোগ, অনুষ্ঠানের শেষপর্বে বহিরাগত দুজন সমর্থক মদ্যপ অবস্থায় মঞ্চের পাশে দাঁড়িয়ে সিগারেট ধরানোয় ছাত্রীরা আপত্তি জানালে গোলমাল হয়। ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক সৌরভ সরকার বলেন, “ওঁরা অনুষ্ঠানকে পন্ড করার চেষ্টা করছিল। প্রথম বর্ষের দুজন ছাত্র ওঁদের সরে যেতে বললে মারধর করে। দুই জনই যুব মোর্চার সদস্য।”
বিজেপির যুব মোর্চা নেতৃত্ব তৃণমূল ছাত্র পরিষদ সমর্থকদের অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দিয়েছে। তাঁদের পাল্টা অভিযোগ, “কলেজ সংলগ্ন এলাকার বাসিন্দা প্রাক্তন ছাত্র কয়েকজন সদস্য এদিন অনুষ্ঠান দেখতে যায়। গানের তালে নাচানাচি করলে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের ছেলেরা আচমকা হামলা চালায়।” সংগঠনের জেলা সভাপতি জয়ন্ত চক্রবর্তী বলেন, “মদ্যপ অবস্থায় তৃণমূল ছাত্র পরিষদের ছেলেরা আমাদের ছেলেদের উপরে হামলা চালায়। ওই ছেলেরা কলেজের প্রাক্তন ছাত্র। পুলিশের কাছে অভিযোগ জানানো হয়েছে।”
এদিকে, এক ছাত্রীর শ্লীলতাহানির ঘটনায় অভিযুক্ত আনন্দচন্দ্র কলেজের তৃণমূল ছাত্র পরিষদ পরিচালিত ছাত্র সংসদের সহসভাপতি এবং সংগঠনের শ্রেণিকক্ষ প্রতিনিধিকে গ্রেফতারের দবিতে আন্দোলন অব্যাহত। বৃহস্পতিবার ওই দাবিতে কলেজের সামনে পথ অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখায় ডিএসও কর্মী সমর্থকরা। গত বুধবার কোতোয়ালি থানার সামনে এসএফআই এবং ডিবিসি রোডে বিজেপি যুব মোর্চার কর্মী সমর্থকরা বিক্ষোভ দেখায়।
বৃহস্পতিবার কলেজ পরিচালন সমিতির বৈঠকে ছাত্রীর ওই বক্তব্য নিয়ে আলোচনা হয়। পরিচালন সমিতির অধ্যক্ষ আনন্দগোপাল ঘোষ বলেন, “ছাত্রীটি আমাদের কিছু না জানিয়ে সোজা থানায় চলে যায়। সেখানে মামলা রুজু হয়েছে। তিনি প্রথমে জানান, বিষয়টি ব্যক্তিগত। তাই কলেজকে জানায়নি। পরে ফোনে বলেন ভয়ে কলেজে যেতে পারেননি।”
তিনি জানান, অধ্যক্ষকে বলেছি ছাত্রীটিকে কলেজে আসলে কেউ উত্তক্ত করলে কলেজের পক্ষ থেকে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কলেজের অধ্যক্ষ ধিরাজ বসাক বলেন, “ছাত্রীটি নিজেই চায়নি কলেজের তরফে ঘটনা খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হোক। তাই সে পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছে।” এদিন ওই ছাত্রী বলেন, পরিবারের সম্মানের কথা চিন্তা করে কোন কথা বলব না। গত মঙ্গলবার ছাত্রী কোতোয়ালি থানার মহিলা সেলে ছাত্র সংসদের সহসভাপতি এবং সংগঠনের নির্বাচিত এক শ্রেণি কক্ষ প্রতিনিধির বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন। তাঁর অভিযোগ, সোমবার সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের প্রথমদিন সন্ধ্যায় বাড়ি ফেরার পথে ওই দুই তাঁকে অন্ধকারে ডেকে নিয়ে গিয়ে হাত ধরে টানাটানি করে বলে অভিযোগ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy