Advertisement
০১ মে ২০২৪

ডাইনি সন্দেহে প্রৌঢ়াকে মারধর কোচবিহারে

ডাইনি সন্দেহে মহিলাকে গাছে বেঁধে মারধর করার অভিযোগ উঠল ছয় বাসিন্দার নামে। বৃহস্পতিবার কোচবিহার কোতোয়ালি থানায় ওই ৬ জনের নামে অভিযোগ দায়ের করেন ওই মহিলার বিবাহিত মেয়ে রুমা ওরাও।ঁ মহিলার নাম পুষ্প ওরাও।ঁ তাঁর বাড়ি ওই থানার আমবাড়ির ভাটলাগুড়িতে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কোচবিহার শেষ আপডেট: ০২ অগস্ট ২০১৪ ০২:০১
Share: Save:

ডাইনি সন্দেহে মহিলাকে গাছে বেঁধে মারধর করার অভিযোগ উঠল ছয় বাসিন্দার নামে। বৃহস্পতিবার কোচবিহার কোতোয়ালি থানায় ওই ৬ জনের নামে অভিযোগ দায়ের করেন ওই মহিলার বিবাহিত মেয়ে রুমা ওরাও।ঁ মহিলার নাম পুষ্প ওরাও।ঁ তাঁর বাড়ি ওই থানার আমবাড়ির ভাটলাগুড়িতে। মারধরের সময়ে তাঁর স্বামী মাকনা ওরাওঁ বাধা দিতে গেলে তাঁকে মারধর করা হয়। দু’জনকেই আলিপুরদুয়ার জেলা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। ঘটনার তদন্তে শুক্রবার ওই গ্রামে যায় পুলিশ। অভিযুক্ত কাউকে গ্রেফতার করা যায়নি। অভিযুক্তদের গ্রেফতারের দাবিতে সরব হয়েছে স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব। কোচবিহারের পুলিশ সুপার রাজেশ যাদব বলেন, “অভিযুক্তদের খোঁজে তল্লাশি শুরু করা হয়েছে ঘটনার তদন্ত চলছে।”

স্থানীয় বাসিন্দাদের কয়েক জনের অভিযোগ, দু’মাসের বেশি সময় ধরে ওই গ্রামে পুষ্পদেবীর উপর অত্যাচার চলছে। সে সময় রোগে ভুগে এলাকার এক যুবকের মৃত্যু হয়। কিছুদিন পরে এলাকার এক যুবকের স্ত্রী অন্য এক যুবকের সঙ্গে পালিয়ে যায়। ওই সময়ই স্থানীয় এক গৃহবধূর গর্ভের সন্তানের মৃত্যু হয়। প্রত্যেকটি ক্ষেত্রে পুষ্পদেবীকে দোষারোপ করে স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দা। ওই গ্রামের সেই বাসিন্দাদের সঙ্গে পাশের গ্রাম মরিচবাড়ি-খোল্টার আরও কয়েকজন বাসিন্দা ২৯ জুলাই মঙ্গলবার দুপুরে ওই বাড়িতে চড়াও হয় বলে অভিযোগ সে সময় বাড়িতে পুষ্পদেবী বাড়িতে ছিলেন না। তিনি পাশের একটি বাড়িতে দিনমজুরির কাজ করছিলেন। সেখান থেকে তাঁকে টেনে নিয়ে গিয়ে তাঁর বাড়ির সামনে একটি গাছে বেঁধে মারধর করা হয়।

ওই দম্পতি কোনওরকমে সেখান থেকে পালিয়ে অরুণ দাস নামে স্থানীয় এক বাসিন্দার বাড়িতে আশ্রয় নেন। সেখানে গিয়েও দুষ্কৃতীরা তাঁকে মারধর করার চেষ্টা করলে এলাকার কয়েজন বাসিন্দাই তাঁদের রক্ষা করেন। পরদিন বুধবার বিকালে দুই জন বেশি অসুস্থ হয়ে পড়লে তাঁদের আলিপুরদুয়ার হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। মাকনা ওঁরাও বলেন, “আমাদের মেরেই ফেলত ওরা। স্থানীয় কিছু বাসিন্দা এগিয়ে এলে আমরা রক্ষা পাই।”

বৃহস্পতিবার রুমা বলেন, বাড়িতে তাঁর মা, বাবা, এক ভাই থাকেন। অন্য দুই ভাই কাজের জন্য বাইরে থাকেন। তিনি বলেন, “সেই সুযোগ নিয়ে ওই কয়েকজন হামলা করে মিথ্যে কতগুলি অভিযোগ নিয়ে আমার মা ও বাবাকে মারধর করেছে।” প্রথমে স্থানীয় তৃণমূল নেতাদের কাছে বিচার করার আর্জি জানিয়েছিলেন তাঁরা। কিন্তু কিছুদিন আগে সালিশি সভায় এক যুবককে কুপিয়ে খুন করার ঘটনার পর এলাকায় সালিশি সভা বন্ধ হয়েছে। এলাকার তৃণমূল যুব নেতা সুব্রত দেব বলেন, “এই সময়েও এমন ঘটনা কিছুতেই মেনে নেওয়া যায় না। মাকনা ওরাওঁ আমাদের দল করছেন। যারা হামলা করে তারা সিপিএমের। রাজনৈতিক উদ্দেশ্যেই তাঁকে মারধর করা হতে পারে।” সিপিএমের দাবি, “অভিযোগ ভিত্তিহীন। তদন্তেই সব স্পষ্ট হবে।”

গ্রামের কয়েকটি বাড়িতে বিদ্যুৎ রয়েছে। তবে পুষ্পদেবীদের বাড়িতে বিদ্যুৎ আসেনি। স্বাক্ষরতার হার ৫০ শতাংশ। প্রাথমিক বা হাইস্কুল রয়েছে গ্রাম থেকে আড়াই কিলোমিটার দূরে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

cooch behar witch allegation beaten up
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE