Advertisement
০৭ মে ২০২৪
গঙ্গারামপুর

তৃণমূলের গোষ্ঠী সংঘর্ষে জখম ছ’জন

জমি নিয়ে দুই পরিবারের গন্ডগোলের জের শেষপর্যন্ত দাঁড়াল তৃণমূলের গোষ্ঠী সংঘর্ষে। বাড়ি ভাঙচুর, ধারাল অস্ত্রের আঘাতে জখম হলেন এক মহিলা সহ দুপক্ষের ছ’জন। বুধবার রাতে দক্ষিণ দিনাজপুরের গঙ্গারামপুর থানার কাদিঘাট এলাকায় ঘটনাটি ঘটেছে। গঙ্গারামপুর থানার পুলিশের ভূমিকা নিয়ে সরব হয়েছেন বাসিন্দারা।

হাসপাতালে চিকিত্‌সাধীন এক আহত।

হাসপাতালে চিকিত্‌সাধীন এক আহত।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বালুরঘাট শেষ আপডেট: ৩১ অক্টোবর ২০১৪ ০২:৩৪
Share: Save:

জমি নিয়ে দুই পরিবারের গন্ডগোলের জের শেষপর্যন্ত দাঁড়াল তৃণমূলের গোষ্ঠী সংঘর্ষে। বাড়ি ভাঙচুর, ধারাল অস্ত্রের আঘাতে জখম হলেন এক মহিলা সহ দুপক্ষের ছ’জন। বুধবার রাতে দক্ষিণ দিনাজপুরের গঙ্গারামপুর থানার কাদিঘাট এলাকায় ঘটনাটি ঘটেছে। গঙ্গারামপুর থানার পুলিশের ভূমিকা নিয়ে সরব হয়েছেন বাসিন্দারা।

তাঁদের অভিযোগ, প্রথমে গোলমালের অভিযোগ পেয়েও পুলিশ কোনও ব্যবস্থা নেয়নি। পরে তা সংঘর্ষের আকার নেয়। দুপক্ষই গঙ্গারামপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করেছে। যদিও এখনও কেউ গ্রেফতার হয়নি। দক্ষিণ দিনাজপুরের পুলিশ সুপার শীষরাম ঝাঝারিয়া বলেন, “ঘটনার খোঁজ নিচ্ছি। থানার ভূমিকা খতিয়ে দেখা হবে।”

পুলিশ সূত্রের খবর, এলাকার তৃণমূল সমর্থক সুশীল মজুমদারের বাড়িতে রাতে দলবল নিয়ে হামলা চালায় একই দলের সমর্থক প্রতিবেশী মনোতোষ সরকার। একটি জমি নিয়ে দুজনের মধ্যে গণ্ডগোলের শুরু বলে অভিযোগ। গুরুতর জখম অবস্থায় সুশীলবাবু, তাঁর ভাইয়ের বউ কল্পনাদেবী এবং দুই ছেলে শঙ্কর ও প্রীতমকে রাতেই স্থানীয় মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। তাদের বেধড়ক মারধর করে ধারাল অস্ত্র দিয়ে আঘাত করা হয় বলে অভিযোগ। হামলায় অভিযুক্ত মনোতোষবাবুর দলের দুজনের মাথাতেও আঘাত লাগে। পরে তা দুই গোষ্ঠীর গোলমালের আকার নেয় বলে অভিযোগ। দুই পক্ষের লোকজন গোলমালে জড়িয়ে পড়ে।

তৃণমূলের জেলা সভাপতি তথা আইন পরিষদীয় সচিব বিপ্লব মিত্র বলেন, “ব্যক্তিগত ব্যাপার নিয়ে গন্ডগোল বলে শুনেছি। ঘটনার সঙ্গে রাজনীতির যোগ নেই। এখন সকলেই নিজেদের তৃণমূল সমর্থক বলে দাবি করেন, তাই দলের নাম এসে যায়।”

ভাঙচুর করা হয়েছে বাড়ি।

এদিন হাসপাতালের শয্যায় শুয়ে সুশীলবাবু জানিয়েছেন, জমি নিয়ে বিবাদের জেরে দুসপ্তাহ আগে ভাইয়ের স্ত্রী কল্পনাকে প্রতিবেশী মনোতোষ ও তার পরিবারের লোকেরা কটুক্তি ও ধাক্কাধাক্কি করে। কল্পনা গঙ্গারামপুর থানায় মনোতোষদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছিলেন। কিন্তু পুলিশ ব্যবস্থা নেয়নি।” এর পরে সুশীলবাবুরা বুধবার বুনিয়াদপুরে গিয়ে মহকুমা আদালতে মনোতোষবাবুদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন। আদালতের মাধ্যমে মামলা দায়ের হতেই হামলা চালানো হয় বলে সুশীলবাবুর অভিযোগ। মনোতোষবাবু অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, “মিথ্যা হামলার অভিযোগ তোলা হয়েছে। বরং সুশীলবাবুরাই হামলা চালালে দুজন জখম হন। তাদের মাথা ফেটে যায়। পুলিশকে সব জানিয়েছি।”

বাসিন্দারা জানান, রাত ১০’টা নাগাদ মনোতোষবাবুরা এলাকার একটি ক্লাবের ছেলেদের নিয়ে গিয়ে সুশীলবাবুদের বাড়িতে চড়াও হন বলে অভিযোগ। হাসপাতালে শুয়ে জখম কল্পনাদেবী অভিযোগ করেন, “২০-২৫ জনের একটি দল বাড়িতে চড়াও হয়। ধাক্কা দিয়ে ঘরের দরজা ভেঙে ফেলে। ঘরের আসবাবপত্র ভাঙতে থাকে। বাধা গিতে গেলে মারধোর করে এবং ধারাল অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে। সেই সময় ঘরের নিচু টিনের কোণায় আঘাত লেগে হামলাকারী দুজনের মাথা কেটে যায়।” এলাকার তৃণমূল নেতা রতন ঘোষ বলেন, “পুরোটা ব্যক্তিগত গোলমাল। উভয়পক্ষকে নিয়ে বসে বিবাদ মেটানো হবে।”

পুলিশ জানায়, তৃণমূল সমর্থক সুশীল ও মনোতোষবাবু দুই বন্ধু ছিলেন। বছর খানেক আগে দুজনে মিলে কাদিঘাট এলাকায় দশ কাঠা জমি কেনেন। সম্প্রতি সুশীলবাবুরা জানতে পারেন, জমিটি মনোতোষবাবু নিজের নামে রেকর্ড করে নিয়েছেন। তার পর থেকে গোলমালের সূত্রপাত। মনোতোষবাবু অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, “জমিটি আমার নামেই কিনেছি। মিথ্যা অভিযোগ তুলে সুশীলবাবুরা গোলমাল শুরু করে।”

ছবি: অমিত মোহান্ত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

balurghat group conflict tmc
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE