Advertisement
E-Paper

তৃণমূলকেই সমর্থন, জানিয়ে দিলেন ঘিসিঙ্গ

গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার সঙ্গে তৃণমূলের সাম্প্রতিক দূরত্বের সুযোগ নিতে খোলাখুলি আসরে নেমে পড়লেন জিএনএলএফ প্রধান সুবাস ঘিসিঙ্গ। শুক্রবার দার্জিলিঙে জিএনএলএফ-এর তরফে ঘোষণা করা হয়েছে, লোকসভা ভোটে দার্জিলিং আসনে তৃণমূল প্রার্থী ভাইচুং ভুটিয়াকে সমর্থন করা হবে। তৃণমূল সেই প্রস্তাবকে সমর্থনও করেছে।

কিশোর সাহা, রেজা প্রধান

শেষ আপডেট: ০৫ এপ্রিল ২০১৪ ০২:৪২

গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার সঙ্গে তৃণমূলের সাম্প্রতিক দূরত্বের সুযোগ নিতে খোলাখুলি আসরে নেমে পড়লেন জিএনএলএফ প্রধান সুবাস ঘিসিঙ্গ। শুক্রবার দার্জিলিঙে জিএনএলএফ-এর তরফে ঘোষণা করা হয়েছে, লোকসভা ভোটে দার্জিলিং আসনে তৃণমূল প্রার্থী ভাইচুং ভুটিয়াকে সমর্থন করা হবে। তৃণমূল সেই প্রস্তাবকে সমর্থনও করেছে। তবে তৃণমূলের দিকে বন্ধুত্বের হাত বাড়ালেও তা যে নিঃশর্ত নয়, প্রেস বিবৃতিতে সেই বার্তাও দিয়েছে জিএনএলএফ। তাতে বলা হয়েছে, দার্জিলিং পাহাড়কে সংবিধানের ষষ্ঠ তফসিলের আওতায় আনার যে প্রক্রিয়া ঘিসিঙ্গের আমলে প্রায় চূড়ান্ত হয়েছিল, তা সম্পূর্ণ করতে হবে। যত দিন তা না-হয়, ততদিন জিটিএ নয়, সাবেক দার্জিলিং গোর্খা পার্বত্য পরিষদকে (ডিজিএইচসি) কার্যকর রাখতে হবে। এই প্রসঙ্গে তৃণমূল কোনও মন্তব্য করেনি।

অসুস্থ সুবাস ঘিসিঙ্গ সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হননি। দলের কেন্দ্রীয় কমিটির নেত্রী শিরিং দহেল বলেছেন, “দার্জিলিং গোর্খা পার্বত্য পরিষদকে (ডিজিএইচসি) সামনে রেখে আমাদের চেয়ারম্যান পাহাড়কে ষষ্ঠ তফসিলের আওতায় আনার প্রক্রিয়া চূড়ান্ত করেছিলেন। দুর্ভাগ্যক্রমে তা হয়নি। তৃণমূল ক্ষমতাসীন হওয়ার পরে জিটিএ গঠন করেছে। সেটা ভুল হয়েছে বলেই মনে করি।” তাঁর দাবি, পাহাড়কে সংবিধানের ষষ্ঠ তফসিলের আওতায় আনার প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ না হওয়া পর্যন্ত ডিজিএইচসি-র মাধ্যমে পাহাড়ে স্বশাসন চালানোর ব্যবস্থা হোক।

তৃণমূলের দার্জিলিং জেলা সভাপতি তথা উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব জানান, পাহাড়ে শান্তি, গণতন্ত্র ও উন্নয়নের জন্য তাঁরা সকলের কাছ থেকেই সমর্থন চেয়েছিলেন। জিএনএলএফের কাছেও চাওয়া হয়েছিল। তিনি বলেন, “জিএনএলএফ-কে স্বাগত জানাচ্ছি।” তবে জিটিএ-র বদলে ডিজিএইচসিকে কার্যকর করার প্রসঙ্গে গৌতমবাবুর মন্তব্য, “রাজনৈতিক দল হিসেবে জিএনএলএফ-এর নিজস্ব দাবি, কর্মসূচি থাকতেই পারে। কিন্তু ভাইচুং ভুটিয়াকে সমর্থনের জন্য কোনও পূর্ব শর্ত জিএনএলএফ দেয়নি। কাজেই তা নিয়ে আমি কোনও মন্তব্য করব না।”

জিএনএলএফ-এর তৃণমূলকে সমর্থনের সিদ্ধান্তকে ‘প্রত্যাশিত’ বলে দাবি করেছেন মোর্চা সভাপতি বিমল গুরুঙ্গ। গুরুঙ্গ এর আগে প্রকাশ্য সভাতেই ঘিসিঙ্গের কাছ থেকে সমর্থন চেয়েছিলেন। তারপরে এ দিন জিএনএলএফ-এর ঘোষণা জানার পরে তাঁর প্রতিক্রিয়া পাহাড়ে ‘অশুভ আঁতাত’ হয়েছে। পাহাড়ে ঘিসিঙ্গের দলের কোনও শক্তি নেই বলে দাবি করেছেন তিনি। তবে তৃণমূল-জিএনএলএফ জোটের শক্তিকে যে তিনি গুরুত্ব দিচ্ছেন, তা-ও বোঝা গিয়েছে তাঁর ওই বার্তায়। তাঁর কথায়, “এ বার লোকসভা ভোটে দার্জিলিং আসনে বিজেপি প্রার্থী যদি হারেন, তা হলে পাহাড়বাসী গোর্খাল্যান্ড চান না বলে রাজ্য ও কেন্দ্রের কাছে বার্তা যাবে।” এর পরেই পাহাড়বাসীর প্রতি গুরুঙ্গের আহ্বান, “গোর্খাল্যান্ডের দাবিতে এটা অন্তিম পর্যায়ের লড়াই। সে জন্যই ছোট রাজ্যের পক্ষপাতী বিজেপি প্রার্থীকে জেতাতে হবে।”

এ দিন সকালে দার্জিলিঙে ঘিসিঙ্গের বাড়িতে কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠক হয়। দলীয় সূত্রের খবর, সেখানে মোর্চা-তৃণমূলের দূরত্ব কাজে লাগানোর উপরে সকলেই জোর দেন। জিএনএলএফ-এর একাধিক নেতা ওই বৈঠকে জানান, ভোটের ফলাফল যাই-ই হোক না কেন, ভোটের পরে পাহাড়ে নির্বিঘ্নে রাজনৈতিক কর্মকান্ড চালানোর কথা মাথায় রেখে রাজ্যের শাসক দলের সঙ্গে হাত মেলানো জরুরি। তখনই জিএনএলএফ প্রধান নিজেই সেখানে আশঙ্কা প্রকাশ করেন, সম্পূর্ণ নিঃশর্ত সমর্থন দিলে আগামী দিনে পাহাড়ে নানা প্রশ্নের মুখে পড়তে হতে পারে। তখন ঠিক হয়, সরাসরি শর্ত না-দিলেও দলের তরফে প্রেস বিবৃতিতে ষষ্ঠ তফসিল ও ডিজিএইচসির দাবির বিষয়টি উল্লেখ করা হবে।

আগামী দিনে কী দু-দল যৌথ প্রচারে সামিল হবে? জিএনএলএফের তরফে শিরিঙ্গ দহেলরা বলেছেন, “এটা সময়ই বলবে। আমরা পদ্মশ্রী প্রাপ্ত ভারতীয় ফুটবল দলের প্রাক্তন অধিনায়ককে ভোট দেওয়ার জন্য সব রকম ভাবে প্রচার করব।”

kishore saha tmc
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy