শিলিগুড়ির কাঞ্চনজঙ্ঘা স্টেডিয়ামে তোলা নিজস্ব চিত্র।
কোকো সাকিবো, ড্যানিয়েল বিদেমি, স্ট্যানলে সাইপ্রিয়ান এবং বেলো রজাক! বৃহস্পতিবার শিলিগুড়ির কাঞ্চনজঙ্ঘা স্টেডিয়ামে ফ্লাড লাইটের ঝলমলে আলোয় দর্শকাসন থেকে যাদের দিকে নজর ছিল, তাঁরা হলেন ওই চার ফুটবলার। মহানন্দা স্পোর্টিং ক্লাবের চার বিদেশি। এ দিন মাঠে উপস্থিত তারকা ফুটবলার তাঁরাই। যে ফুটবলারদের কাঁধে ভর দিয়ে ২-০ গোলে শিলিগুড়ি সাইয়ের সঙ্গে প্রথম ম্যাচ জিতল মহানন্দা স্পোর্টিং।
শিলিগুড়ির জনপ্রিয় ফুটবল টুর্নামেন্ট কিরণচন্দ্র নৈশ ফুটবলে গত বারের চ্যাম্পিয়ন দল মহানন্দা। তারা অবশ্য এ বছর ক্রীড়া পরিষদের লিগেরও চ্যাম্পিয়ন দল। তবে ওই দলে ড্যানিয়েল, স্ট্যানলেরা ছিলেন না। সে দিক থেকে এই দল অনেক বেশি শক্তিশালী। মাঠে হাজির মহানন্দার সমর্থকদের তাই উৎসাহ ছিল তুঙ্গে। অন্য দিকে প্রতিপক্ষে অধিকাংশই অনূর্ধ্ব ১৮ সাইয়ের ফুটবলাররা। তাই জয় আরও বড় ব্যবধানে হোক সেটাই আশা করেছিলেন মহানন্দার সমর্থকরা। তবে সাইয়ের ফুটবলাররা তা হতে দেননি। হারলেও যা দেখে সাইয়ের কোচ বাধা বেনুগোপাল বলেন, “আমাদের ছেলেরা ভাল খেলেছে। বেশ ভাল খেলেছে। বিপক্ষের দলে বিদেশি ফুটবলার। বড় দলের সঙ্গে নিয়মিত ম্যাচ খেলছে তারা। সেই তুলনায় আমাদের ফুটবলাররা জুনিয়র। সে দিক থেকে অনেক ভাল খেলেছে।” তবে যে কয়েকটি সুযোগ আজারুদ্দিন মল্লিক, স্বরূপ বিশ্বাস, সিদ্ধান্ত ছেত্রীরা পেয়েছিলেন তাতে একটি গোল করতে পারলে তারা বাহবা পেতেন। সে কথা স্বীকার করেন সাইয়ের কোচও। তাঁর কথায়, “সমন্বয়, বোঝাপড়ার অভাব। লড়াই করে বল বিপক্ষের বক্সে নিয়ে গেলেও ‘ফিনিশিং’ নেই।” মূলত স্কোরার অভাবে সুযোগগুলি নষ্ট হয়েছে বলেই তিনি মনে করছেন। এ দিন গোল করতে তাঁর বড় ভরসা ছিল আজারুদ্দিন। ভাল খেললেও তিনি গোল পাননি।
অবশ্য সাইয়ের বিপর্যয় ঘটে গোড়াতেই। খেলা শুরুর মুহূর্তের মধ্যেই সেন্টার থেকে বাড়ান বল মহানন্দার ফুটবলারদের পাঁ ছুয়ে চলে যায় সাইয়ের পেনাল্টি বক্সের মধ্যে। ততক্ষণে সেখানে পৌঁছে গিয়েছে স্ট্যানলে। ৩৪ সেকেন্ডে প্রথম গোলটি করেন তিনি। শুরুতেই গোল খেয়ে এর পর তেড়ে ফুড়ে ওঠে সাই। হাতে সময়ও ছিল। তবে ৯০ মিনিট পর্যন্ত গোল শোধ করা তাদের পক্ষে সম্ভব হয়ে ওঠেনি। অন্য দিকে চার বিদেশিকে নিয়েও ৯০ মিনিট পর্যন্ত ১ গোল হওয়ায় ততক্ষণে মনমরা হয়ে পড়েছে মহানন্দার কর্মকর্তা থেকে ফ্যানরাও। দ্বিতীয়ার্ধের শেষের দিকে মহানন্দা অধিনায়ক বাপন বেরাকে তুলে নেন কোচ। তার বদলে গৌতম ঠাকুরকে নামান হয়। কোকো, ড্যানিয়েলরা নাগাড়ে চেষ্টা করেও দ্বিতীয়বার গোলের মুখ খুলতে পারছিলেন না। পোস্টের সামনে থেকে একটি ভাল সুযোগ নষ্ট করেন শির্বা নার্জারি। সুযোগের অপেক্ষায় অনেক্ষণ ধরেই চেষ্টা করছিলেন ড্যানিয়েল বিদেমি। গোল করতে গিয়ে অফ সাইডের শিকারও হন। কাঞ্চনজঙ্ঘার মাঠে আগেও একাধিক ম্যাচ খেলেছেন তিনি। খেলার শেষ মূহূর্তে ইনজুরি টাইমে তিনিই অপেক্ষার অবসান ঘটান। গোলের সামনে সতীর্থের বাড়ানো বল বিপক্ষের জালে ঠেলতে আর ভুল করেননি তিনি। খেলা শেষে মহানন্দার কোচ রঘু নন্দীও স্বীকার করেন, “আরও বড় ব্যবধানে জয় পাওয়া উচিত ছিল আমাদের। তবে প্রথম ম্যাচ। একটু সমস্যা হয়েই থাকে। পরের ম্যাচ থেকে আশা করি আরও ভাল ফুটবল উপহার দেবে দল।” আজ, শুক্রবার প্রথম সেমি ফাইনালে শিলিগুড়ি উল্কা মুখোমুখি হবে জিটিএসের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy