Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

দীপার হারে কংগ্রেসের অন্তর্দ্বন্দ্ব শুরু

দীপা দাশমুন্সির পরাজয়কে কেন্দ্র করে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব শুরু হয়েছে রায়গঞ্জে। গত শনিবার কালিয়াগঞ্জের বিধায়ক তথা ব্লক সভাপতি প্রমথনাথ রায়কে দলের প্রার্থীর হারের জন্য দায়ী করে বিক্ষোভ দেখিয়েছিলেন একদল কংগ্রেস সমর্থক। বিধায়কের উপস্থিতিতেই কালিয়াগঞ্জের পার্টি অফিসের তিনটি চেয়ার ভাঙচুরও করা হয় বলে অভিযোগ।

নিজস্ব সংবাদদাতা
রায়গঞ্জ শেষ আপডেট: ১৯ মে ২০১৪ ০১:৩৫
Share: Save:

দীপা দাশমুন্সির পরাজয়কে কেন্দ্র করে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব শুরু হয়েছে রায়গঞ্জে। গত শনিবার কালিয়াগঞ্জের বিধায়ক তথা ব্লক সভাপতি প্রমথনাথ রায়কে দলের প্রার্থীর হারের জন্য দায়ী করে বিক্ষোভ দেখিয়েছিলেন একদল কংগ্রেস সমর্থক। বিধায়কের উপস্থিতিতেই কালিয়াগঞ্জের পার্টি অফিসের তিনটি চেয়ার ভাঙচুরও করা হয় বলে অভিযোগ। এই ঘটনায় ‘অপমানিত’ প্রমথনাথবাবু দলের শহর ও ব্লক পার্টি অফিসে আর যাবেন না বলে রবিবার ঘোষণা করেছেন।

কংগ্রেস সূত্রের খবর, দীপাদেবী পরাজিত হওয়ার জন্য দলের কর্মী সমর্থকদের একাংশ কালিয়াগঞ্জের বিধায়ক তথা ব্লক কংগ্রেস সভাপতিকেই দায়ী করেছেন। এ দিন প্রমথবাবু পাল্টা দলের জেলা নেতৃত্বকে তাঁর ক্ষোভ জানিয়েছেন। পার্টি অফিসে না যাওয়ার সিদ্ধান্তও তিনি দলের নেতৃত্বকে জানিয়েছেন। আগামী জুন মাসে কালিয়াগঞ্জ পুরসভা ভোট হওয়ার কথা। এই পরিস্থিতিতে প্রমথবাবুর ক্ষোভ ভাঙাতে আসরে নেমেছেন কালিয়াগঞ্জ শহর কংগ্রেস সভাপতি তথা কালিয়াগঞ্জ পুরসভার চেয়ারম্যান অরুণ দে সরকার। অরুণবাবু ফোন করে প্রমথনাথবাবুকে পার্টি অফিসে যাওয়ার অনুরোধ করলেও তিনি তা প্রত্যাখ্যান করেছেন বলে দল সূত্রে জানা গিয়েছে। জেলা কংগ্রেস সভাপতি মোহিত সেনগুপ্ত জানান, “প্রমথনাথবাবু ও দলের কর্মী সমর্থকদের সঙ্গে কথা বলে বিষয়টি মিটিয়ে ফেলা হচ্ছে।” দীপাদেবী ভোটের পরের দিন দিল্লি চলে গিয়েছেন।

প্রমথনাথবাবু অবশ্য তাঁর ক্ষোভের কথা গোপন করেননি। তিনি বলেন, “আমি দলীয় কার্যালয়ে বসে থাকার সময়েই দলের কিছু কর্মী সমর্থক আচমকা ঢুকে পড়েন। দীপাদেবী পরাজিত হওয়ার জন্য আমাকে দায়ী করে বিক্ষোভ দেখান তাঁরা। বিক্ষোভকারীরা দলীয় কার্যালয়ের তিনটি প্লাস্টিকের চেয়ার ভাঙচুর করে বেরিয়ে যায়। এই ঘটনায় আমি অসম্মানিত বোধ করছি। কিছুদিন দলীয় কার্যালয়ে না যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।”

কেন ক্ষোভ তৈরি হয়েছে স্থানীয় বিধায়কের বিরুদ্ধে?

পুরসভার কংগ্রেস চেয়ারম্যান অরুণবাবু বলেন, “কালিয়াগঞ্জের ব্লকের ৮টি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় দীপাদেবী ১০ হাজারেরও বেশি ভোটে পিছিয়ে পড়েন। স্বভাবতঃই দলীয় কর্মী সমর্থকদের একাংশ সেই কারণে প্রমথনাথবাবুকে দীপাদেবী পরাজিত হওয়ার জন্য দায়ী করেছেন।”

প্রসঙ্গত, রায়গঞ্জ লোকসভা কেন্দ্রের নির্বাচনে বামফ্রন্ট প্রার্থী সিপিএমের মহম্মদ সেলিম ১৬৩৪ ভোটে দীপাদেবীকে পরাজিত করেছেন। কালিয়াগঞ্জের ৮টি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় দীপাদেবী বাম প্রার্থীর থেকে ১০ হাজারের বেশি ভোটে পিছিয়ে ছিলেন। তবে কালিয়াগঞ্জ পুর এলাকায় দীপাদেবী বেশি ভোট পাওয়ায়, পুরসভা ও গ্রামপঞ্চায়েত এলাকাগুলি নিয়ে গঠিত কালিয়াগঞ্জ বিধানসভা এলাকায় সেই ব্যবধান কমে যায়। মাত্র ১৪২৯ ভোটে পিছিয়ে থাকতে হয় কংগ্রেস প্রার্থীকে। যদিও গত লোকসভায় এই কালিয়াগঞ্জ বিধানসভা থেকে দীপাদেবী প্রায় ১৮ হাজার ভোটে এগিয়ে ছিলেন। অরুণবাবু জানিয়েছেন, কালিয়াগঞ্জের আটটি পঞ্চায়েত এলাকায় পিছিয়ে না থাকলে দীপা দেবী হারতেন না। তাঁর কথায় “যেহেতু প্রমথবাবু কালিয়াগঞ্জের বিধায়ক এবং ব্লক কংগ্রেস সভাপতির পদেও রয়েছেন, তাই দলের কিছু কর্মী সমর্থক হতাশায় তাঁকে দায়ী করে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

raiganj deepa dasmunshi bjp congress
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE