ধূপগুড়িতে রেল লাইনের ধারে ঝোপ থেকে উদ্ধার হওয়া চারটি দেহ এবং পরে হাসপাতালে মৃত ব্যক্তির পরিচয় সম্পর্কে প্রাথমিক সূত্র মিলেছে বলে দাবি পুলিশের।
জলপাইগুড়ি জেলা পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, পরিবারটির কানপুর থেকে অসমে যাওয়ার কথা ছিল। মঙ্গলবার ভোর নাগাদ কোনও কারণে চলন্ত ট্রেন থেকে নামতে গিয়ে দুর্ঘটনার কবলে পড়েন তারা। তাঁদের আত্মীয়রা বিভিন্ন সূত্রে রেল লাইনের ধার থেকে দেহ উদ্ধারের খবর পেয়ে শুক্রবার ফোনে ধূপগুড়ি থানার সঙ্গে যোগাযোগ করেন। এর পরে পরিবারটির পরিচয় সম্পর্কে পুলিশ কর্তারা অনেকটা নিশ্চিত হন। আজ, শনিবার আত্মীয়দের জলপাইগুড়িতে আসতে বলা হয়েছে। তাঁরা পৌঁছলে মৃতদেহ গুলি শনাক্ত করা হবে। সদর হাসপাতালে চিকিত্সাধীন শিশুকন্যাকেও দেখানো হবে। জেলা পুলিশ সুপার কুণাল অগ্রবাল বলেন, “পরিজনের বিবরণের সঙ্গে দেহগুলি মিলে যাচ্ছে। পরিবারটিকে কানপুর থেকে কোন ট্রেনে তুলে দেওয়া হয়েছিল সেটাও আত্মীয়রা জানিয়েছে। ওঁদের আসতে বলা হয়েছে। এলে দেহ সনাক্ত করানো হবে।”
জেলা পুলিশ মৃতদের সম্পর্কে যে তথ্য পেয়েছে তা হল, প্রত্যেকে একই পরিবারের সদস্য। ভবঘুরে না হলেও অভাবের তাড়নায় কাজের খোঁজে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ঘুরে বেড়াতো ওঁরা। অসমের নলবাড়ি এলাকার বাসিন্দা তাঁদের একদল আত্মীয় কানপুরে থাকে। কয়েক মাস আগে কাজের খোঁজে ছয় সদস্যের পরিবারটি নলবাড়ি থেকে কানপুরে যায়। রবিবার কানপুর থেকে নলবাড়িতে ফিরে যাওয়ার জন্য ট্রেনে তুলে দেওয়ার পরে আত্মীয়রা তাঁদের কোন খোঁজ পায়নি। অবশেষে বিভিন্ন সূত্রে ধূপগুড়িতে রেল লাইনের ধারে ঝোপজঙ্গল থেকে দেহ উদ্ধারের খবর পেয়ে ধূপগুড়ি থানায় যোগাযোগ করেন।থানার আইসি যুগলচন্দ্র বিশ্বাস বলেন, “শনিবার ওঁদের আসার কথা। তখন পুরোটা স্পষ্ট হবে।”
গত মঙ্গলবার ধূপগুড়ি ব্লকের গধেয়াকুঠি গ্রাম পঞ্চায়েতের বগরিবাড়ি এলাকার হোগলাপাতা গ্রামে রেল লাইনের ধারে ঝোপ জঙ্গল থেকে চারজনের দেহ উদ্ধার করা হয়। চার বছরের শিশু কন্যা সহ এক ব্যক্তিকে মারাত্মক জখম অবস্থায় উদ্ধার করে জলপাইগুড়ি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে জখম ব্যক্তি মারা যান।
এ দিকে উদ্ধার করা জখম চার বছরের শিশু কন্যার সঙ্কট এখনও কাটেনি। জলপাইগুড়ি হাসপাতালের ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিটে তন্দ্রাচ্ছন্ন অবস্থায় রয়েছে সে। তাকে জোর করে তরল খাবার দেওয়া হচ্ছে। হাসপাতাল সুপার পার্থ দে বলেন, “শিশুটির সঙ্কট কাটেনি। বিশেষজ্ঞ চিকিত্সকদের নজরদারির মধ্যে চিকিত্সা চলছে। শিশুটি কথা বলতে পারছে না। কখনও চিত্কার করে ‘মা’ বলে ঘুমিয়ে পড়ছে।” তিনি জানান, স্ক্যান-সহ বিভিন্ন পরীক্ষা করে জানা গিয়েছে শিশুটির কপালের ক্ষত এতটাই গভীর যে মাথার হাড়েও চিড় ধরেছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy