ধূপগুড়িতে রেললাইনের ধারে ঝোপজঙ্গল থেকে উদ্ধার করা চারটি দেহ এবং পরে হাসপাতালে মৃত ব্যক্তিকে শনাক্ত করলেন আত্মীয়রা। সদর হাসপাতালে চিকিত্সাধীন চার বছরের শিশুকন্যার সঙ্গেও তাঁরা দেখা করেন।
রবিবার সকালে মৃতদের চারজন আত্মীয় অসমের নলবাড়ি থেকে ধূপগুড়িতে পৌঁছে থানায় যান। সেখানে পুলিশ কর্তাদের সঙ্গে কথা বলে দুপুর নাগাদ সদর হাসপাতালের মর্গে দেহ শনাক্ত করেন। পুলিশ জানায়, মৃতরা হলেন সেকেন্দার আলি (৫০), আলেকজান বিবি (৩৫), খালেক আলি (১০), মালেক আলি (৮) এবং ছয় মাসের শিশুকন্যা রিনা। হাসপাতালে যে চার বছরের জখম শিশু কন্যার চিকিসা চলছে তাঁর নাম খালিদা প্রত্যেকে অসমের নলবাড়ি এলাকার বনকুড়া গ্রামের বাসিন্দা।
গত ২৫ নভেম্বর ধূপগুড়ি ব্লকের গধেয়াকুঠি গ্রাম পঞ্চায়েতের বগরিবাড়ি এলাকার হোগলাপাতা গ্রামে রেল লাইনের ধারে ঝোপ জঙ্গল থেকে চারটি দেহ উদ্ধার হয়। চার বছরের শিশুকন্যা খালিদা এবং সেকেন্দারকে মারাত্মক জখম অবস্থায় জলপাইগুড়ি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে সেকেন্দার মারা যান। ধূপগুড়ি থানার আইসি যুগলচন্দ্র বিশ্বাস বলেন, “দরিদ্র ওই পরিবারের আত্মীয়রা দেহ শনাক্ত করার পরে জানান তাঁদের পক্ষে সেগুলি গ্রামে ফিরিয়ে নেওয়া সম্ভব নয়। জখম শিশু কন্যা সুস্থ হলে ওঁরা নিয়ে যাবেন।” জলপাইগুড়ির মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক প্রকাশ মৃধা বলেন, “কয়েকজন দেহ শনাক্ত করে পরিজনেরা ওই শিশুকন্যার সঙ্গে দেখা করেছে।”
পুলিশ জানায়, মৃতরা প্রত্যেকেই একই পরিবারের সদস্য। কানপুরেও তাঁদের আত্মীয়রা থাকেন। কয়েক মাস আগে কাজের খোঁজে ছ’সদস্যের ওই পরিবারটি নলবাড়ি থেকে কানপুরে যায়। গত ২২ নভেম্বর কানপুর থেকে নলবাড়ি ফেরার জন্য গাঁধীধাম-কামাখ্যা এক্সপ্রেসে ওঠে। এর পর থেকে আত্মীয়েরা তাঁদের কোনও খোঁজ পাননি।
রবিবার ধূপগুড়ি থানায় পৌঁছে মৃতদের আত্মীয় মজিবুল হক জানান, বিভিন্ন সূত্রে বগরিবাড়ি এলাকার হোগলাপাতা গ্রামে রেল লাইনের ধারে ঝোপজঙ্গল থেকে দেহ উদ্ধারের খবর পেয়ে তাঁরা ধূপগুড়ি থানায় যোগাযোগ করেন। পুলিশের বিবরণের সঙ্গে তাঁদের আত্মীয়দের পরিচয় মিলে যাচ্ছে। জলপাইগুড়িতে পৌঁছে দেহগুলি শনাক্ত করে মজিবুল বলেন, “মৃত আলেকজান আমার স্ত্রীর বোন। ওঁরা কাজ করতে কানপুরে গিয়েছিল। ফিরে আসার জন্য ২২ নভেম্বর ট্রেনে ওঠে। সেকেন্দার সাদাসিধে মানুষ ছিলেন অনেকে ওঁকে পাগল বলত। কেমন করে ঘটনাটি ঘটল বুঝতে পারছি না।”
ধূপগুড়ি থানার আইসি জানান, ২৫ নভেম্বর রাতে গাঁধীধাম-কামাখ্যা এক্সপ্রেস ট্রেন যখন জলঢাকা সেতু অতিক্রম করছিল, তখন ঘন কুয়াশায় ট্রেনের গতি কম ছিল। কোনও কারণে চলন্ত ট্রেন থেকে নামতে গিয়ে ওঁরা দুর্ঘটনার কবলে পড়েন বলে বিভিন্ন সূত্রে খবর মিলেছে। তবে শিশুকন্যাটি সুস্থ হলে তাঁর সঙ্গে কথা বলতে চান পুলিশ কর্তারা। তাঁদের কথায়, অন্য কোনও ঘটনা হয়ে থাকলে তার কথায় সূত্র মিলতে পারে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy