Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
মালতিপুরে অভিযুক্ত বিধায়কই

নিজে বিয়ে করায় মেয়েকে হুমকি বাবার

নিজের মেয়েকেই হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠল মালদহের মালতিপুরের আরএসপি-র বিধায়ক আব্দুর রহিম বক্সির বিরুদ্ধে। রহিম বক্সির ছোট মেয়ে নিজেই এই অভিযোগ করেছেন জেলা পুলিশ সুপারের কাছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
মালদহ শেষ আপডেট: ১১ জুলাই ২০১৪ ০২:০৭
Share: Save:

নিজের মেয়েকেই হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠল মালদহের মালতিপুরের আরএসপি-র বিধায়ক আব্দুর রহিম বক্সির বিরুদ্ধে। রহিম বক্সির ছোট মেয়ে নিজেই এই অভিযোগ করেছেন জেলা পুলিশ সুপারের কাছে। বৃহস্পতিবার রহিম বক্সির কন্যা আইনজীবীকে সঙ্গে নিয়ে জেলা পুলিশ সুপারের দফতরে গিয়ে লিখিত অভিযোগ করেন।

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, গত সোমবার থেকে বিধায়কের মেয়ে নিখোঁজ বলে অভিযোগ। বিধায়ক রহিমবাবু থানায় নিখোঁজ ডায়েরিও করেছিলেন। যদিও এ দিন রহিমবাবুর মেয়ে আইনজীবীর মারফত্‌ জেলা পুলিশ সুপারকে জানিয়েছেন, তিনি মোটেই নিখোঁজ নন। তিনি নিজের পছন্দ মতো পাত্রকে বিয়ে করেছেন। সেই বিয়ে মেনে নিতে না পারায় তাঁর বাবা হুমকি দিচ্ছেন।

জেলা পুলিশ সুপার প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “বিধায়কের মেয়ের আইনজীবী আমার সঙ্গে দেখা করেছেন। অভিযোগ খতিয়ে দেখে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” যদিও মেয়ের তোলা অভিযোগ প্রসঙ্গে রহিমবাবু বলেন, “জেলা পুলিশ সুপারকে ফোন করে জানিয়েছি যে আমার মেয়ে নিখোঁজ। আমার মেয়ে পালিয়ে বিয়ে করছে, এটা হতেই পারে না।” তাঁর দাবি, “আমার মেয়েকে জোর করে করে চাপ দিয়ে অভিযোগ করানো হচ্ছে।” সেই সঙ্গে মেয়েকে হুমকি দেওয়ার প্রসঙ্গে তাঁর বক্তব্য, “মেয়ে কোথায় রয়েছে তাই জানি না, সুতরাং ওকে হুমকি দেওয়ার প্রশ্নই ওঠে না।”

এদিন পুলিশ সুপার বিধায়ক কন্যার সঙ্গে দেখা না করলেও তাঁর আইনজীবীর সঙ্গে দেখা করেছেন। জেলা পুলিশ সুপারকে বিধায়কের ছোট মেয়ে লিখিত ভাবে জানিয়েছেন, ‘আমি সাবালিকা ও আমি ভালবেসে যাকে বিয়ে করছি সেও সাবালক।’ জেলা পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মালতিপুরের আরএসপি বিধায়কের দুই মেয়ে এক ছেলে। বড় মেয়ের বিয়ে হয়ে গিয়েছে। ছোট মেয়ে মালদহ মহিলা কলেজের ছাত্রী। কলেজের হস্টেলে থেকেই তিনি পড়াশোনা করতেন। গত ৬ জুলাই তিনি রতুয়ার সাহাপুরের খানপুরের বাড়িতে গিয়েছিলেন। পরদিন সকাল থেকে তাঁর খোঁজ মেলেনি বলে দাবি।

বিধায়ক কন্যার আইনজীবী প্রশান্ত রায় বলেন, “গত ৮ ই এপ্রিল রহিমবাবুর মেয়ে রেজিস্ট্রি করে বিয়ে করেছে। বিয়ের কথা জানাজানি হওয়ার পরই বিধায়ক মেয়েকে বাড়ি ফিরে আসার জন্য হুমকি দিতে শুরু করেন। এ দিন ওই বিধায়ক আদালতে অনেক লোক পাঠিয়ে মেয়েকে তুলে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টাও করেন। আমরা বাধা দেওয়ায় তারা পিছু হটে।” আইনজীবীর দাবি, বিধায়কের মেয়ে আদালতে হলফনামা দায়ের করে সব জানিয়েছেন। তাঁর শ্বশুরবাড়ির সদস্যদের উপর অত্যাচার চালানো হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেছেন তিনি। মানিকচকের মথুরাপুরের বাসিন্দা এমএ পাঠরত এক যুবকের সঙ্গে ওই তরুণীর বিয়ে হয়েছে বলে আইনজীবী জানিয়েছেন।

কোনও অভিযোগই অবশ্য মানতে চাননি রহিমবাবু। তাঁর কথায়, “পুলিশ যদি আমার মেয়েকে উদ্ধার না করে তবে আমি অপহরণের মামলা করব। আদালতের দ্বারস্থ হব। ও যে স্বেচ্ছায় বিয়ে করেছে, সেটা মেয়ের মুখেই শুনতে চাই।”

আরএসপি বিধায়কের কন্যাকে যিনি বিয়ে করেছেন, সেই যুবকের দাবি, “আমরা পরস্পরকে ভালবাসি। রেজিস্ট্রি করে বিয়েও করেছি। আমাদের বিয়ের কথা জানাজানি হওয়ার পর আমার শ্বশুরবাড়ির লোকেরা মেনে নিতে চাননি। তখন আমরা পালাতে বাধ্য হই।” তিনি বলেন, “আমি পালিয়ে যাওয়ার পর রতুয়া থানার ওসি আমার বাবাকে বার বার ফোন করে আমার স্ত্রীকে ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য চাপ দিচ্ছিলেন। বাধ্য হয়ে আজকে নিরাপত্তার জন্য পুলিশ সুপারের দ্বারস্থ হই। পুলিশ সুপারের আশ্বাসের পর স্ত্রীকে বাড়িতে নিয়ে এসেছি।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

threatoffather malatipur marriage maldah
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE