Advertisement
E-Paper

নিরাপত্তা চায় এমসিসি-স্কোয়াড

জনা পাঁচেক ভোট কর্মী, দুই জনের হাতে ক্যামেরা। একটি ভিডিও, একটি স্টিল ক্যামেরা। দু’জন পুলিশ কর্মীও সঙ্গে রয়েছেন। গাড়ি থেকেই নেমেই সুর নামিয়ে এক জন ক্যামেরা হাতে দু’জনকে নির্দেশ দিলেন, ‘ঢুকিয়ে রাখো, না বলা পর্যন্ত চালু করবে না’। একটু দূরে বামেদের একটা জটলা। তাদের পদযাত্রা তৃণমূল সমথর্কদের বাধায় আটকে রয়েছে বলে অভিযোগ।

নমিতেশ ঘোষ

শেষ আপডেট: ০৭ এপ্রিল ২০১৪ ০১:৩৫

জনা পাঁচেক ভোট কর্মী, দুই জনের হাতে ক্যামেরা। একটি ভিডিও, একটি স্টিল ক্যামেরা। দু’জন পুলিশ কর্মীও সঙ্গে রয়েছেন। গাড়ি থেকেই নেমেই সুর নামিয়ে এক জন ক্যামেরা হাতে দু’জনকে নির্দেশ দিলেন, ‘ঢুকিয়ে রাখো, না বলা পর্যন্ত চালু করবে না’।

একটু দূরে বামেদের একটা জটলা। তাদের পদযাত্রা তৃণমূল সমথর্কদের বাধায় আটকে রয়েছে বলে অভিযোগ। সেখানেই গেলেন সবাই। কিছুক্ষণের মধ্যে আর এক গাড়ি পুলিশ এল। এ দিক-ও দিক তাকিয়ে ক্যামেরা চালু করলেন দু’জন। পরে আরও দুই গাড়ি পুলিশ এল। হাফ ছেড়ে বাঁচলেন মডেল কোড অফ কন্ডাক্টের (এমসিসি) কর্মীরা। এক জন তো বলেই ফেললেন, “ভয় ভয় করে ঘুরতে হচ্ছে আমাদের। কখন যে কী হয়? দুই জন পুলিশ কর্মী থাকেন। আরও থাকলে ভাল হয়।’’ কোচবিহারের এখন পুলিশকে সঙ্গে না নিয়ে ঘুরতে চাইছেন না স্কোয়াডকর্মী।

হাবড়া এবং হাওড়ার ঘটনা ঘটে গিয়েছে। দিন কয়েক আগে তার আগে কোচবিহারের সুটকাবাড়িতে পোস্টার, ব্যানার খুলতে গিয়ে আক্রান্ত হন এমসিসি-র কর্মীরা। পুলিশকে পর্যন্ত মারধর করা হয় বলে অভিযোগ ওঠে। তাই বেশি সংখ্যক পুলিশ না থাকলে ভরসা পাচ্ছেন না ভোট কর্মীরা।

কোচবিহার সদরের মহকুমাশাসক বিকাশ সাহা বলেন, “নির্বাচন বিধি যাতে দলগুলি লঙ্ঘন করতে না পারে। সে জন্য এমসিসি দল রয়েছে। দলের সদস্য হিসেবে পুলিশ কর্মীদেরও রাখা হয়েছে। সুটকাবাড়িতে একটি ঘটনা ছাড়া, কোচবিহারে তেমন কিছু ঘটেনি। কর্মীরা আক্রান্ত হলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” প্রশাসনিক সূত্রে খবর, কোচবিহারে ১২ টি ব্লকের জন্য ১২টি এমসিসি দল তৈরি করা হয়েছে। ওই দলের সঙ্গে ভিডিওগ্রাফি দল জুড়ে দেওয়া হয়েছে। কোচবিহার শহরের জন্য আলাদা দল গঠন করা হয়েছে। প্রত্যেক দলে নজরদারির জন্য ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট পর্যায়ের অফিসারকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তাঁরা কোথাও সরকারি জায়গায় ব্যানার, পোস্টার, ফেস্টুন, হোর্ডিং রয়েছে কি না তা দেখে রিপোর্ট দেন। মহকুমাশাসক বা বিডিও সংশ্লিষ্ট দলকে তা খুলে ফেলার জন্য নির্দেশ দেন। তার পরেও তা না খোলা হলে এমসিসি দল সেগুলি বাজেয়াপ্ত করে। এ ছাড়া সমস্ত মিটিং, মিছিল, পদযাত্রায় নির্বাচন বিধি লঙ্ঘন করা হচ্ছে কি না তা লক্ষ রাখছেন এমসিসি- সদস্যরা।

কিন্তু সর্বত্র যেন সঙ্গে ভয় নিয়ে যাচ্ছেন তাঁরা। সম্প্রতি পসারিহাটের কাছে রাশিডাঙায় বামেদের পদযাত্রায় আতঙ্কিত হয়ে পড়েন এমসিসি কর্মীরা। ক্যামেরা চালু করলে পরে মার পড়তে পারে এই আশঙ্কাতেই ঘাম ছুটে যায় তাঁদের। কিছুক্ষণ আতঙ্কে কাটানোর পর অবশ্য ৩টি পুলিশের গাড়ি ঢুকলে তাঁরা আশ্বস্ত হন। তাঁদেরই এক জন বললেন, “সুটকাবাড়িতে লোকজনের কাছে কত কাকুতি, মিনতি করেছি। পুলিশের ভয় পর্যন্ত পায়নি ওরা কেউ। শারীরিক ভাবে হেনস্থা হতে হয়েছে।”

সিপিএমের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য অনন্ত রায় বলেন, “ভোটকর্মীরা যাতে নিরপেক্ষ ভাবে কাজ করতে না পারে সে জন্য তাঁদের ভয় দেখানো হচ্ছে। তৃণমূল কংগ্রসের এক প্রধান ভোট কর্মীদের মারধরের ঘটনায় প্রধান অভিযুক্ত। তাঁকে এখনও গ্রেফতার করা হয়নি। আমরা সমস্ত কথা নির্বাচন কমিশনে জানিয়েছি।” তৃণমূলের জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষ এদিন বলেন, “নির্বাচন বিধি মেনে আমরা সমস্ত জায়গায় প্রচার করছি। দলীয় কর্মীদের সেই নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে। তবে ভোট কর্মীরা অনেকেই আইন জানেন না। নোটিস না দিয়েই তাঁরা ফ্ল্যাগ, ব্যানার আর ফেস্টুন খুলছেন। আমরা কাউকে কোথাও কাজে বাধা দিচ্ছি না।”

nomitesh gosh
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy