Advertisement
E-Paper

নিরাপত্তার দাবিতে কর্মবিরতি

অধিকাংশ সময়ই রেসিডেন্সিয়াল মেডিক্যাল অফিসার বা সিনিয়র চিকিৎসকরা থাকছেন না। কখনও জীবনদায়ী ওষুধ নেই। নিরাপত্তা ব্যবস্থা ঠিক না থাকায় রোগীর চিকিৎসা পরিষেবা নিয়ে গোলমালে অনেক সময়ই আক্রান্ত হচ্ছেন ইন্টার্নরা। এই অভিযোগে রবিবার থেকেই কর্মবিরতি করছেন উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ওই চিকিৎসকরা। সোমবার রোগী কল্যাণ সমিতির বৈঠকে যোগ দিতে গেলে প্লাক্যার্ড, কাগজে বিভিন্ন দাবি লিখে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেবের গাড়ি ঘিরে বিক্ষোভ দেখান তাঁরা।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০১ জুলাই ২০১৪ ০২:১২
মন্ত্রীর গাড়ি ঘিরে বিক্ষোভ। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক।

মন্ত্রীর গাড়ি ঘিরে বিক্ষোভ। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক।

অধিকাংশ সময়ই রেসিডেন্সিয়াল মেডিক্যাল অফিসার বা সিনিয়র চিকিৎসকরা থাকছেন না। কখনও জীবনদায়ী ওষুধ নেই। নিরাপত্তা ব্যবস্থা ঠিক না থাকায় রোগীর চিকিৎসা পরিষেবা নিয়ে গোলমালে অনেক সময়ই আক্রান্ত হচ্ছেন ইন্টার্নরা। এই অভিযোগে রবিবার থেকেই কর্মবিরতি করছেন উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ওই চিকিৎসকরা। সোমবার রোগী কল্যাণ সমিতির বৈঠকে যোগ দিতে গেলে প্লাক্যার্ড, কাগজে বিভিন্ন দাবি লিখে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেবের গাড়ি ঘিরে বিক্ষোভ দেখান তাঁরা। মন্ত্রী বৈঠক সেরে তাঁদের দাবির বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করবেন বলে আশ্বাস দেন। আলোচনার পর উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী বলেন, “ইন্টার্নদের দাবির অনেকটাই যুক্তিযুক্ত। কাজ বন্ধ করে আন্দোলন করা ঠিক নয়। তা ছাড়া মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের নিরাপত্তার বিষয়টি নিয়ে আমি পুলিশ কমিশনারের সঙ্গেও কথা বলব।” নিরাপত্তার স্বার্থে বিভিন্ন ওয়ার্ডে সিসি ক্যামেরা লাগানোর বিষয়টি নিয়ে এ দিন বৈঠকে আলোচনা হয়েছে বলে জানান।

বিক্ষুব্ধ ওই চিকিৎসকরা অবশ্য এ দিনও কাজে যোগ দেননি। তাদের দাবি, মন্ত্রী সমস্যার কথা স্বীকার করে নিয়ে কিছু ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেছেন। সেই সঙ্গে তিনি কাজ বন্ধ করলে ইনটার্নদের ‘রেজিস্ট্রেশন’ বাতিল করা এবং আন্দোলন করলে গ্রেফতার হওয়ার ভয় দেখান। ইনটার্নদের পক্ষে সরিফুদ্দিন মণ্ডল, অভিষেক মণ্ডলরা বলেন, “মন্ত্রী নিরাপত্তা দেবেন বললেই হবে না। এ দিন সন্ধ্যায় প্রসূতি বিভাগে এবং জরুরি বিভাগে আমাদের কয়েক জন কাজে যোগ দেবেন। তার মধ্যে নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা না হলে এবং সিনিয়র চিকিৎসকরা না থাকলে তারা ফিরে আসবেন। নিরাপত্তা ঠিক থাকলে এবং সিনিয়র চিকিৎসকরা থাকলে মঙ্গলবার থেকে আমরা কাজে যোগ দেব। অন্যথায় এই কর্মবিরতি চলবে।” সরিফুদ্দিনরা জানান, তাঁরা শিক্ষানবীশ। তাঁরা কাজে না গেলে মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পরিষেবা ব্যহত হওয়ার কথা নয়। হাসপাতালে চিকিৎসক রয়েছেন। তাঁদের উপর নির্ভর করেই চলা উচিত। করিশ্মা দে, তৃষা বৈদ্যরা জানান, জরুরি বিভাগে রোগীর পরিবারের লোকেরা অনেক সময় নানা ভাবে হেনস্থা করেন। তাই ২৪ ঘন্টা সুষ্ঠু নিরাপত্তা ব্যবস্থার দাবি করছেন তারা। শনিবার এক রোগীর মৃত্যু নিয়ে চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ ওঠে। সে সময় ওয়ার্ডে থাকা ইনটার্ন চিকিৎসকদের হেনস্থা হতে হয় বলে অভিযোগ। তা ছাড়া স্নায়ুর রোগে আক্রান্ত এক তরুণীর চিকিৎসা পরিষেবা দেওয়ার ক্ষেত্রে নার্সদের একাংশের বিরুদ্ধে অভব্য আচরণের অভিযোগ ওঠে। নার্সদেরও রোগীর পরিবারের হাতে হেনস্থা হওয়ার অভিযোগ তোলা হয়।

মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ১১০ জন ইন্টার্ন রয়েছেন। রোগীর চাপ থাকায় পরিষেবা দেওয়া ক্ষেত্রে ইনটার্ন এবং জুনিয়র চিকিৎসকদের উপর অনেকটাই নির্ভর করতে হয় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে। মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের অধ্যক্ষ অনুপ রায় বলেন, “ইন্টার্নদের সমস্যা এবং দাবির বিষয়গুলি মন্ত্রী শুনেছেন। তিনি ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন। এর পর ইন্টার্নদের এ ধরনের আন্দোলন তুলে নেওয়া উচিত। বিষয়টির উপর নজর রাখা হয়েছে। স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিকর্তাকে তা জানানো হয়েছে।

এ দিন রোগীকল্যাণ সমিতির বৈঠকে হাসপাতালের ক্যাম্পাস সাফসুতরো করতে দু’লক্ষ টাকা মঞ্জুর করা হয়েছে। ওয়ার্ডগুলির করিডরে দেওয়ার এবং গ্রিল বসানোর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। মেডিক্যাল কলেজে সিটি স্ক্যান-সহ কয়েকটি যন্ত্রাংশ কেনার জন্য উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতর থেকে ইতিমধ্যেই ১০ কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে। তা খরচের জন্য স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যের সঙ্গে গৌতমবাবু কথা বলবেন বলে জানান। সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের কাজের জন্য কেন্দ্রীয় প্রকল্পে যে ১৪০ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়ার কথা হয়েছে তা দিয়ে সার্জিক্যাল ব্লক করার বিষয়টি এ দিন বৈঠকে আলোচনা হয়। হেমাটোলজি বিভাগ তৈরি, মেডিসিন বিভাগ এবং ক্যান্সারের চিকিৎসায় কেমোথেরাপি বিভাগের উন্নয়নের পরিকল্পনাও রয়েছে ওই প্রকল্পে।

siliguri demand for security agitation
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy