পানশালায় গোলমালের ঘটনায় জড়িয়ে পড়ায় অভিযোগ উঠল তৃণমূল কংগ্রেসের এক নেত্রীর স্বামীর বিরুদ্ধে। শনিবার রাতে শিলিগুড়ির প্রধাননগর থানার জংশন এলাকার একটি পানশালায় ঘটনাটি ঘটেছে। পুলিশ সূত্রের খবর, ওই তৃণমূল নেত্রী জলপাইগুড়ি জেলার রাজগঞ্জ ব্লকের একটি গ্রাম পঞ্চায়েতে কয়েকদিন আগে অবধি গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে ছিলেন। তবে তাঁর স্বামী বেশ কিছুদিন ধরেই তৃণমূল কংগ্রেস করেন। এলাকায় দলের নেতা হিসাবেই পরিচিত। রবিবার রাতে অবধি পানশালা কর্তৃপক্ষ তো বটেই ওই নেতাও পুলিশে লিখিতভাবে কোনও অভিযোগ দায়ের করেননি।
পুলিশের তরফেও ঘটনার খোঁজখবর শুরু করা হয়েছে। শিলিগুড়ির পুলিশ কমিশনার জগমোহন বলেন, “ঘটনার কোনও লিখিত অভিযোগ জমা পড়েনি। তা পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” বিষয়টি নিয়ে অস্বস্তিতে পড়েছেন তৃণমূল কংগ্রেসের নেতৃত্ব। দলের রাজগঞ্জের বিধায়ক খগেশ্বর রায় অবশ্য বলেছেন, “বিষয়টি আমাকে কেউ জানাননি। খোঁজখবর নিয়ে দেখব।”
তৃণমূল এবং পুলিশ সূত্রের খবর, ওই তৃণমূল নেতা রায়গঞ্জ ব্লকে জমিজমা এবং গাড়ি ভাড়ার ব্যবসা করেন। শিলিগুড়ি শহরে দুইজন পরিচিতের সঙ্গে একটি দূরপাল্লার গাড়ি ভাড়ার কাজে আসেন। তার সঙ্গীরাও এলাকায় তৃণমূল কর্মী বলে পরিচিত। সন্ধ্যায় পর তিনজনে পানশালায় যান। সেখানে পানভোজনের সঙ্গে গানের আসরও বসে। তাঁরা সকলে মিলে বেশ কিছুক্ষণ ধরে সেখানে খাওয়াদাওয়া করেন। অভিযোগ, তিনি পানশালার কয়েকজন কর্মীকে লক্ষ্য করে নানা ধরণের কথাবার্তা বলেন। এই নিয়ে পাশের টেবিলে থাকা আরেক গ্রাহকের সঙ্গেও বাদানুবাদে জড়িয়ে পড়েন।
দুই পক্ষের জোর গোলমাল শুরু হয়। মধ্যস্থতার জন্য পানশালার কয়েকজন কর্মী এগিয়ে আসেন। সেই সময় ওই নেতা তাঁদের লক্ষ্য করে আপত্তিকর কথা কথা বলেন বলে অভিযোগ। এমনকী, দলের নেতাদের বলে পানশালাটি বন্ধ করে দেওয়ার হুমকি দিতে থাকেন বলে অভিযোগ। কথাকাটাকাটির মধ্যে পানশালার কয়েকজন কর্মীর সঙ্গে তাঁর মারপিট হয় বলে অভিযোগ। এদিন বিষয়টি জানার পর পুলিশের তরফে খোঁজখবর করা হয়।
এদিকে, তৃণমূল কংগ্রেসের নেতার নাম ঘটনায় জড়িয়ে যাওয়ায় পুলিশে অভিযোগ জানানো নিয়ে ধন্দ্বে আছেন পানশালা কর্তৃপক্ষও। তাঁদের অবশ্য দাবি, ওই ব্যক্তি নিজেকে একটি রাজনৈতিক দলের নেতা বলে পরিচয় দিয়ে গোলমাল করছিলেন। একসময় পানশালাটি বন্ধ করে দেওয়ারও হুমকি দেন। নানা ধরণের কথাবার্তা বলছিলেন। পরবর্তীতে লোক দিয়ে তাঁকে বাইরে বার করে দেওয়া হয়। পানশালার কর্মীরা কাউকে মারধর করেনি। ওই পানশালার অন্যতম মালিক পাপ্পু দাস বলেন, “ওই ব্যক্তি নানা ধরণের কথাবার্তা বলছিলেন। চিত্কার চেঁচামেচিও করেন। পাশের টেবিলের লোকের সঙ্গে গোলমাল করেন। তাঁকে বাইরে বার করে দেওয়া হয়। ভিতরে কোনও মারধরের ঘটনা ঘটেনি। পুলিশকে মৌখিকভাবে সব জানানো আছে। আইনজীবীদের সঙ্গে কথা বলব। প্রয়োজনে লিখিত অভিযোগ করব।”
ঘটনার খবর পৌঁছেছে স্থানীয় সিপিএম নেতাদের কাছেও। দলের পুরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ডের সদ্য প্রাক্তন কাউন্সিলর তথা সিপিএমের জোনাল সম্পাদক মুকুল সেনগুপ্ত বলেন, “ঘটনার কথা আমরাও শুনেছি। আমরা বিস্তারিত খোঁজখবর নিচ্ছি।” তিনি জানান, শিলিগুড়ি শহরের পানশালাগুলিতে নানা ধরণের ঘটনা ঘটেছে। পুলিশের সন্ধ্যার পর পানশালা এলাকাগুলিতে নজরদারি আরও বাড়ানো দরকার।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy