দফতরে অবস্থা্ন বিক্ষোভ করে শিলিগুড়ি প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদের চেয়ারম্যানকে হেনস্থা করার অভিযোগ উঠেছে পশ্চিমবঙ্গ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির বিরুদ্ধে। মঙ্গলবার শিলিগুড়ি প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদের দফতরে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের অস্থায়ী বদলি স্থায়ীকরণের দাবিতে এবং তাঁদের সমস্যা নিয়ে পশ্চিমবঙ্গ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির তরফে স্মারকলিপি দেওয়া হয়, অবস্থান বিক্ষোভ করা হয়। আন্দোলনের নেতৃত্বে ছিলেন তৃণমূল নেতা তথা প্রাক্তন ডেপুটি মেয়র রঞ্জন শীলশর্মা। অভিযোগ, সম্প্রতি যে সমস্ত প্রাথমিক শিক্ষক-শিক্ষিকাদের অস্থায়ী বদলি হয়েছে তা স্থায়ীকরণ করা উচিত বলে জোর করে চেয়ারম্যানকে দিয়ে এ দিন রঞ্জনবাবু লিখিয়ে নেন। তা ছাড়া কেন শিলিগুড়ি থেকে কোনও শিক্ষকের নাম শিক্ষারত্ন পুরস্কারের মনোনয়নের জন্য পাঠানো হয়নি তা নিয়েও জবাব চান রঞ্জনবাবু। এই ‘অপদার্থতার’ জন্য কে দায়ী সেই প্রশ্ন তোলেন। রঞ্জনবাবুর দাবি, চেয়ারম্যান তাঁর জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছেন। এর পর চেয়ারম্যানকে পদ ছেড়ে দিতে বলেন রঞ্জনবাবুরা। বেলা সাড়ে ৪টা থেকে সাড়ে ৭ টা পর্যন্ত দফতরের মধ্যে অবস্থান বিক্ষোভ চলে। পরে চাপ দিয়ে অস্থায়ী বদলি স্থায়ীকরণ করা উচিত চেয়ারমানকে দিয়ে তা লিখিয়ে নেওয়া হয় বলে অভিযোগ। দফতরের কর্মীদের একাংশ এই ঘটনায় অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন।
রঞ্জনবাবু বলেন, “আমরা শান্তিপূর্ণ ভাবে চেয়ারম্যানকে স্মারকলিপি দিয়েছি। কোনও রকম হেনস্থা করা হয়নি। এ ধরনের অভিযোগ ভিত্তিহীন। শিক্ষক-শিক্ষিকাদের অস্থায়ী বদলি স্থায়ী করা হোক অথবা বাতিল করা হোক বলে চেয়ারম্যানের কাছে আমরা দাবি করি। অস্থায়ী বদলি স্থায়ীকরণ করা উচিত বলে পরে তিনি লিখিতভাবে মত দিলে আমরা চলে আসি।” এর আগে আন্দোলন করতে গিয়ে স্কুল পরিদর্শকের মুখে থুতু ছেটানোর অভিযোগ ওঠে শিক্ষক নেতা রঞ্জনবাবুর বিরুদ্ধে। তা নিয়ে শিলিগুড়ি থুতু কাণ্ড নামে হইচই পড়ে।
চেয়ারম্যান মুকুল কান্তি ঘোষ অবশ্য ফোন ধরতে চাননি। তাঁর পরিবারের তরফে জানানো হয় রাতে তিনি দফতর থেকে বিধ্বস্ত হয়ে বাড়িতে ফেরেন। তৃণমূলের শিক্ষা সেলের তরফেও ঘটনার নিন্দা করা হয়েছে। দলের দার্জিলিং জেলা শিক্ষা সেলের আহ্বায়ক জয়ন্ত কর বলেন, “জোর করে এ ভাবে কিছু লিখিয়ে নেওয়া ঠিক নয়। তা ছাড়া অস্থায়ী বদলি এ ভাবে মুখের কথায় স্থায়ীকরণ করা যায় না। রঞ্জনবাবু বলে নয়। যাঁরাই শিক্ষক-শিক্ষিকারা এ দিন আন্দোলনে ছিলেন তাঁরা এ ধরনের আচরণ করলে ছাত্রছাত্রীরা তাঁদের কাছ থেকে কী শিখবে ভাবা উচিত।”
পশ্চিমবঙ্গ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির তরফে অভিযোগ, জানানো হয়, অস্থায়ী বদলি হওয়া শিক্ষক-শিক্ষিকারা তাদের চাকরির তথ্য দিতে গিয়েও সমস্যায় পড়েছেন। সরকারি নির্দেশে তাঁরা কোন স্কুলে রয়েছেন, কত দিন রয়েছেন এমন বিভিন্ন তথ্য দিতে বলা হয়েছে। যে স্কুলে তারা অস্থায়ী ভাবে রয়েছেন সেই স্কুলে তাদের সার্ভিস বুক নেই। সেই স্কুলে তাঁরা চাকরি করছেন লিখতে পারছেন না। আবার যে স্কুল ছেড়ে অস্থায়ীভাবে বদলি হয়েছেন সেখান থেকে তাদের ছাড়া হয়েছে বলে স্কুল কর্তৃপক্ষ তাদের সেই স্কুলের শিক্ষক হিসাবে বলতে পারছেন না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy