Advertisement
E-Paper

প্রদীপ-খুনে নেতার শাস্তি দাবি তৃণমূলে

তৃণমূল কর্মী খুনের ঘটনায় অভিযোগ দায়ের হয়েছে দলেরই ২৩ জন নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে। তিন জন গ্রেফতার হলেও বাকিরা ধরা পড়েনি। এ বার দোষীদের গ্রেফতারির দাবি তুলে আন্দোলনের ডাক দিল তৃণমূলই। ঘটনা ঘিরে প্রকাশ্যে এসেছে দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বও।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১০ অক্টোবর ২০১৪ ০২:২০

তৃণমূল কর্মী খুনের ঘটনায় অভিযোগ দায়ের হয়েছে দলেরই ২৩ জন নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে। তিন জন গ্রেফতার হলেও বাকিরা ধরা পড়েনি। এ বার দোষীদের গ্রেফতারির দাবি তুলে আন্দোলনের ডাক দিল তৃণমূলই। ঘটনা ঘিরে প্রকাশ্যে এসেছে দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বও।

সপ্তমীর রাতে কোচবিহারের মাথাভাঙার নয়ারহাটে প্রদীপ বর্মন (৩৭) নামে এক তৃণমূল কর্মীকে কুপিয়ে খুন করার অভিযোগ ওঠে দলেরই অন্য গোষ্ঠীর কিছু কর্মীর বিরুদ্ধে। ওই এলাকার বিধায়ক ও তৃণমূল নেতা হিতেন বর্মন দাবি করেন, “দলেরই একটি অংশ বামেদের সঙ্গে মিলে প্রদীপবাবুকে খুন করেছেন। প্রদীপবাবুর স্ত্রী যে এফআইআর করেছেন তাতে এলাকার পরিচিত তৃণমূল কর্মীদের নাম রয়েছে।” দোষীদের ধরার দাবিতে আগামী ১৩ অক্টোবর মাথাভাঙা শহরে মিছিলের ডাক দিয়েছে শাসক দল। ওই দিনই মাথাভাঙা থানা এবং মহকুমাশাসকের দফতরেও বিক্ষোভ দেখাবে তারা।

তবে তৃণমূলেরই আরেক বিধায়ক তথা কোচবিহারে দলের জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষ ঘটনার পিছনে গোষ্ঠী কোন্দলের কথা উড়িয়ে দিয়েছেন। রবীন্দ্রনাথবাবু বুধবার নয়ারহাটে নিহত কর্মীর বাড়িতে যান। তিনি নিহতের স্ত্রী ললিতাদেবীর সঙ্গেএ কথা বলেন। তিনি বলেন, “প্রদীপবাবু আমাদের একনিষ্ঠ কর্মী ছিলেন। তাঁর খুনের পিছনে দলীয় কোনও কোন্দল নেই। কারা কী কারণে তাঁকে খুন করল তা নিয়ে পুলিশ তদন্ত করছে। আমার সন্দেহ বিরোধীরা ওই ঘটনার পিছনে থাকতে পারে।”

দলীয় সূত্রের খবর, নয়ারহাট পঞ্চায়েতে অনাস্থা প্রস্তাবকে নিয়ে তৃণমূলের দু’টি গোষ্ঠীর বিরোধ চরমে উঠেছিল। ১৭ আসন বিশিষ্ট ওই পঞ্চায়েতে তৃণমূলের ১২টি, সিপিএমের দু’টি, ফরওয়ার্ড ব্লকের একটি ও নির্দলের হাতে দু’টি আসন রয়েছে। বামেদের সঙ্গে নিয়ে হিতেন গোষ্ঠীর ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত প্রধান মহেশ বর্মনকে সরিয়ে দেন তৃণমূলের পাঁচ পঞ্চায়েত সদস্য। তা নিয়ে উত্তেজনা ছিল ওই এলাকায়। সপ্তমী রাতে ১১টা নাগাদ ১৫-১৬ জনের একটি দল প্রদীপবাবুকে বাড়ি থেকে ডেকে বের করে ধারাল অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে খুন করে বলে অভিযোগ।

বুধবার নিহত প্রদীপবাবুর বাড়ি গিয়ে রবীন্দ্রনাথবাবু বলেন, “প্রদীপবাবু স্ত্রীর সঙ্গে আমি কথা বলেছি। খুনিদের কাউকে তিনি চিনতে পারেননি বলে আমাকে জানিয়েছেন।” ঘটনার পরে অবশ্য রবীন্দ্রনাথবাবুর ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত জেলা পরিষদ সদস্য নজরুল হক, মাথাভাঙা-১ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি আবু তালেব আজাদ-সহ ২৩ জনের নামে অভিযোগ দায়ের করেছিলেন নিহতের স্ত্রী ললিতাদেবী।

তবে দলের কোন্দলের কথা কার্যত স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে স্থানীয় শীতলখুচি বিধানসভা এলাকার বিধায়ক হিতেন বর্মনের অভিযোগে। হিতেনবাবু বলেন, “একেক জনের দেখার দৃষ্টিভঙ্গী একেক রকম হতে পারে। আমি সরেজমিনে দেখে যতটুকু জেনেছি তাতে পরিষ্কার নয়ারহাট পঞ্চায়েতে অনাস্থা না আসলে খুনের ঘটনা ঘটত না।”

পুলিশ অবশ্য স্পষ্ট জানিয়েছে, অভিযোগপত্রে নাম থাকলেই তাঁরা কাউকে গ্রেফতার করবে না। জেলা পুলিশ সুপার রাজেশ যাদব বলেন, “তদন্ত হচ্ছে। তাতে যাঁদের নাম উঠে আসছে তাঁদেরই গ্রেফতার করা হবে।” এখনও পর্যন্ত পুলিশ মিঠুন বর্মন, সুবাস বর্মন, আব্বাস আলি নামে তিন জনকে গ্রেফতার করেছে। অভিযোগে নাম রয়েছে নজরুল হক, আবু তালেব আজাদের মতো তৃণমূল নেতার। এলাকায় তাঁরা রবীন্দ্রনাথবাবুর ঘনিষ্ঠ বলেই পরিচিত। তাঁদের অভিযোগ, “ওই ঘটনায় চক্রান্ত করে আমাদের নাম দেওয়া হয়েছে।” মাথাভাঙার তৃণমূল শ্রমিক সংগঠনের নেতা আলিজার রহমান বলেন, “দোষীদের গ্রেফতার করে শাস্তি না দেওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে।”

pradip burman murder case
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy