Advertisement
E-Paper

পালাল ১২ কিশোর, প্রশ্ন হোমের নজরদারি নিয়ে

সরকারি হোমের পাঁচিল টপকে দল বেঁধে পালাল ১২ জন কিশোর। রবিবার ভোর ৪টে নাগাদ বালুরঘাটের সমাজকল্যাণ দফতর পরিচালিত শুভায়ণ হোমের ঘটনা। পুলিশ ও প্রশাসনিক সূত্রের খবর, শহরের অদূরে হোসেনপুর এলাকার ওই হোমের শৌচালয়ের দেওয়াল ফুটো করে ইট সরিয়ে বড় গর্ত তৈরি করা হয়েছিল।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০১:৩৩

সরকারি হোমের পাঁচিল টপকে দল বেঁধে পালাল ১২ জন কিশোর।

রবিবার ভোর ৪টে নাগাদ বালুরঘাটের সমাজকল্যাণ দফতর পরিচালিত শুভায়ণ হোমের ঘটনা। পুলিশ ও প্রশাসনিক সূত্রের খবর, শহরের অদূরে হোসেনপুর এলাকার ওই হোমের শৌচালয়ের দেওয়াল ফুটো করে ইট সরিয়ে বড় গর্ত তৈরি করা হয়েছিল। ওই বারো জন কিশোর ওই গর্ত দিয়ে মূল হোমের ভবন থেকে বেরিয়ে উঁচু সীমানা পাঁচিল টপকে হিলি-বালুরঘাট সদর রাস্তায় উঠে পালায়। হোমের অদূরে এক ট্রাক টার্মিনাসেপ ভিতর থেকে এক কিশোরকে উদ্ধার করা হয়।

মায়ানমারের বাসিন্দা বছর পনেরোর ওই কিশোর পাঁচিল টপকানোর সময়ে পায়ে আঘাত পাওয়ায় বেশি দূর যেতে পারেনি। তাকে বালুরঘাট জেলা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। এর পরে আরেক কিশোরকে বালুরঘাট বাসস্ট্যান্ড থেকে উদ্ধার করা হয়।

পুলিশের অনুমান, বেশ কিছু দিন ধরেই পরিকল্পনা করে তারা একাজ করেছে।

এ দিন সকালে হোমের কর্মীরা বিষয়টি টের পেয়ে পুলিশকে খবর দেন। আবাসিকদের খোঁজ শুরু হয়। বাকি ১০ জন কিশোরের খোঁজে পুলিশ তল্লাশি শুরু করেছে। হোম সূত্রের খবর, পলাতক ১০ কিশোরের মধ্যে ৮ জন বাংলাদেশ, একজন অসম এবং একজন দক্ষিণ দিনাজপুরেরই বাসিন্দা। প্রত্যেকেরই বয়স ১৪-১৬ বছরের মধ্যে।

জেলা সমাজকল্যাণ আধিকারিক সনত্‌ ঘোষ জানান, কাঁটাতারের বেড়ার ওপর গাছের ডাল পালা ফেলে তার উপর দিয়ে কিশোরেরা পালিয়েছে বলে হোমের তরফে জানানো হয়েছে। হোমের কোনও কর্মীর কোনও গাফিলতি রয়েছে কিনা খতিয়ে দেখতে তদন্ত শুরু হয়েছে। রবিবার দুপুরে থানার আইসিকে নিয়ে হোমে তদন্তে যান ডিএসপি চিত্তরঞ্জন চট্টোপাধ্যায়। তিনি বলেন, “পলাতক কিশোরদের খোঁজা হচ্ছে। জেলার সবক’টি থানাকে সতর্ক করা হয়েছে।”

পুলিশ ও প্রশাসন সূত্রের খবর, ২-৩ বছর আগে ছোটখাটো অপরাধ এবং অবৈধ অনুপ্রবেশের অভিযোগে জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে পুলিশ তাদের ধরেছিল। জুভেনাইল কোর্টের নির্দেশে ওই সরকারি হোমের একটি ভবনে রাখা হয়েছিল তাদের। হোমেরই আর একটি ভবনে অনাথ ও দুঃস্থ আবাসিকেরাও থাকে। পলাতকদের অধিকাংশেরই বিচার শেষ হয়ে গিয়েছিল। তাদের বাংলাদেশে ফেরত পাঠাতে পদক্ষেপ করা হলেও মাঝপথে ওই প্রক্রিয়া থেমে যায়। অতিরিক্ত জেলাশাসক সজলকান্তি টিকাদারের দাবি, বাংলাদেশের তরফে ওই কিশোরদের নাগরিকত্ব অস্বীকার করা হয়েছিল। তিনি বলেন, “ওই কিশোরদের নাম ঠিকানা দিয়ে তাদের ফেরত পাঠানোর উদ্যোগ নেওয়া হলেও বাংলাদেশের দিক থেকে তাদের পরিচয় অস্বীকার করা হচ্ছিল। পরে সমস্যা মেটে। ২ মার্চ ৩ জনকে বাংলাদেশে পুশব্যাক করানোর কথা।”

বিচার শেষে দীর্ঘদিন আটকে থাকার কারণেই ওই কিশোরেরা এই পদক্ষেপ করেছে বলে জেলা প্রশাসনের তরফে বিভাগীয় মন্ত্রীকে এদিন ওই রিপোর্ট পাঠানো হয়েছে।

তবে ভোর রাতে ওই কিশোরের দল হোমের তারকাঁটা লাগানো উঁচু পাঁচিল কী করে টপকে পালাল, তা নিয়ে সন্দেহ দানা বেঁধেছে। হোমের আধিকারিক এবং কর্মীদের বিরুদ্ধে নজরদারিতে গাফিলতির অভিযোগ উঠেছে। বিশেষ করে শৌচালয়ের দেওয়ালে বড় গর্ত তৈরি হল, তাও কী ভাবে কারও নজরে তা আসল না, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

গত কয়েক বছরের মধ্যে একাধিকবার একইভাবে ওই হোমের কাঁটাতারের বেড়ার পাঁচিল টপকে বাংলাদেশি কিশোর বন্দি পালানোর ঘটনা ঘটেছে। হোম কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে ঢিলেঢালা নজরদারির অভিযোগও উঠেছে। যদিও হোমের ভারপ্রাপ্ত সুপার দীপালি চক্রবর্তী বিষয়গুলি নিয়ে কোনও কথা বলতে চাননি। হোমে গেলে তিনি দেখাও করেননি।

balurghat social welfare department surveillance
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy