বছরখানেক ধরেই প্রকাশ্যে রমরমিয়ে চলছিল পাঁচটি মদের ঠেক। পাশেই রয়েছে একটি প্রাথমিক স্কুল ও একটি হাইস্কুল। মালদহের ইংরেজবাজারের কাজিগ্রাম গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার গোপালনগরে মদ্যপদের আনাগোনায় ভয়ে সিঁটিয়ে থাকতেন পাড়ার মহিলা থেকে স্কুলপড়ুয়ারা। সন্ধ্যার পরে রাস্তায় বেরনোরও উপায় ছিল না। বেশ কয়েকবার পরিস্থিতির কথা পুলিশকে জানিয়েও কোনও লাভ হয়নি বলে অভিযোগ। শেষ পর্যন্ত বুধবার দুপুরে লাঠিসোঁটা নিয়ে মদের ঠেক ভাঙলেন মহিলারাই। একে একে গুড়িয়ে দিলেন পাঁচটি ঠেকই। বাধা দিতে সাহস পাননি মদের ঠেকের মালিকেরাও।
মালদহের পুলিশ সুপার প্রসূন বন্দোপাধ্যায় বলেন, “পুলিশের বিরুদ্ধে নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ ঠিক নয়। মাঝেমধ্যেই অভিযান চালানো হয়। আর যাতে ওই ঠেক চালু না হয় তা পুলিশ দেখবে।” পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বছর দুয়েক আগে গোপালনগর এলাকায় একটি মদের ঠেক গড়ে ওঠে। তারপর একে একে সেখানে আরও পাঁচটি ঠেক গড়ো তোলা হয়। আশপাশের এলাকাগুলি থেকেও ঠেকে ভিড় জমতে শুরু করে। বাসিন্দারা জানান, প্রতিদিন সকাল থেকে অনেক রাত পর্যন্ত ঠেকগুলি চলতে থাকায় রাতে দুষ্কৃতীরাও ভিড় করতে শুরু করে।
এ দিকে, কাছেই মদের ঠেক হওয়ায় এলাকার বেশিরভাগ মানুষই রোজগারের সামান্য টাকা মদের পিছনে খরচ করে ফেলছিলেন। বহু পরিবারেই অভাবের পাশাপাশি অশান্তিও নিত্যনৈমিত্তিক বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছিল। এছাড়া কচিকাঁচা পড়ুয়ারাও ভয়ে তটস্থ হয়ে ওই রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করত। প্রতিবাদ করলে ঠেক মালিক ও তাঁর সাঙ্গপাঙ্গরা বাসিন্দাদের হুমকি দিতেন বলে অভিযোগ। এমনকি, স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্য বিষয়টি একাধিকবার লিখিতভাবে পুলিশকে জানালেও ফল হয়নি বলে অভিযোগ। গৃহবধূ সুষমা মণ্ডল, আরতি মণ্ডলেরা বলেন, “আমাদের জীবন অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছিল। পুলিশ ব্যবস্থা না নেওয়ায় নিজেরাই ভেঙে দিয়েছি।” কাজিগ্রাম গ্রাম পঞ্চায়েতের স্থানীয় কংগ্রেস সদস্য চন্দন মণ্ডল বলেন, “আমি দু’বার লিখিতভাবে বিষয়টি পুলিশকে জানালেও কোনও ফল হয়নি। বাধ্য হয়ে মহিলাদের পথে নামতে হয়েছে।”