পুড়ে যাওয়া বাড়ি। বিশ্বরূপ বসাকের তোলা ছবি।
বাড়িতে অগ্নিদগ্ধ হয়ে মৃত্যু হল এক দম্পতি এবং তাঁদের কিশোরী মেয়ের। শুক্রবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে শিলিগুড়ির চম্পাসারির ঢাকনিকাটাতে। পুলিশ ও দমকল সূত্রে জানা গিয়েছে, রাত সাড়ে দশটার কিছু পরে এলাকার একটি দরমা বেড়ার ঘরে রান্নার গ্যাস সিলিণ্ডার থেকে আগুন লেগে যায়। ঘটনার খবর পেয়ে দমকলের ইঞ্জিন পৌঁছেলেও সঙ্কীর্ণ রাস্তা দিয়ে ইঞ্জিন ঢুকতে পারেনি বলে অভিযোগ।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, উত্তম সাহা (৪০) তাঁর স্ত্রী আদরীদেবী (৩৮) এবং তাঁদের মেয়ে বন্দনা-র (১২) মৃত্যু হয়েছে। রাতেই দগ্ধ ঘর থেকে মা-মেয়ের দগ্ধ দেহ উদ্ধার করা হয়। দমকল কর্মীরা জানিয়েছেন, দগ্ধ অবস্থাতেই উত্তমবাবু ঘর থেকে বের হয়ে এসেছিলেন। তাঁকে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি করানো হয়েছিল। শনিবার সকালে উত্তমবাবুর মৃত্যু হয় বলে মেডিক্যাল কলেজ সূত্রে জানানো হয়েছে। যে গ্যাস সিলিন্ডার থেকে আগুন লাগে সেটি বৈধ কিনা তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। দম্পতির কুড়ি বছরের ছেলে থাকলেও, ঘটনার সময়ে তিনি বাড়িতে ছিলেন না বলে জানা গিয়েছে।
টিনের ছাউনি দেওয়া একটি দরমা বেড়ার ঘরেই ছেলে-মেয়ে সহ ওই দম্পতি থাকতেন। একটি ঘরেই চারজনে থাকতেন, সেই ঘরেই রান্না হতো। শুক্রবার রাতে রান্নার সময়ে গ্যাস সিলিন্ডার থেকে ঘরে আগুন লেগে যায় বলে জানা গিয়েছে। প্রাথমিক তদন্তের পরে দমকল জানিয়েছে, গ্যাস সিলিন্ডার ফেটেই ঘরে আগুন লেগে থাকতে পারে। তবে এ দিন সকালে পোড়া সিলিন্ডারটিকে অক্ষত অবস্থাতেই দেখা গিয়েছে। দমকল কর্মীরা জানিয়েছেন, অনেক সময়ে সিলিন্ডারের মুখ ফেটে যায়, সে ক্ষেত্রে সিলিন্ডার অক্ষতই থাকে। তবে আগে থেকে গ্যাস ‘লিক’ করতে শুরু হয়ে থাকতে পারে বলে অনুমান।
পুলিশ জানতে পেরেছে, শুক্রবার রান্নার সময় নিজেদের গ্যাস সিলিন্ডার শেষ হয়ে গেলে, এলাকারই বাসিন্দা এক পরিচিতের বাড়ি থেকে আরেকটি সিলিন্ডার নিয়ে আসেন উত্তমবাবু। সেই সিলিন্ডারটি থেকেই আগুন লেগে যায়। তবে সিলিন্ডারটি কোন কোম্পানির কিংবা তার বৈধ সংযোগ ছিল কিনা তা নিয়ে ধন্দে পুলিশ। এমনকী গ্যাস সিলিন্ডারটি ফাটার আগে লিক করেছিল কিনা পুলিশ সে বিষয়েও তদন্ত শুরু করেছে। চম্পাসারি এলাকারই যে বাড়ি থেকে সিলিন্ডারটি আনা হয়েছিল, সেই বাড়িরও খোঁজ করছে পুলিশ। খোঁজ নেওয়া হচ্ছে সংশ্লিষ্ট গ্যাসটি কোথা থেকে সরবারহ হয়েছিল তারও।
শিলিগুড়ির পুলিশ কমিশনার জগমোহন বলেন, “চম্পাসারিতে আগুনে পুড়ে তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। তবে কি থেকে ওই আগুন ছড়িয়েছে, তা আমাদের কাছে পরিস্কার নয়। দমকল বিষয়টি দেখছে। পুলিশও খোঁজখবর করছে।” দমকলের বিভাগীয় আধিকারিক দীপক নন্দী বলেন, “প্রাথমিকভাবে সিলিন্ডার ফেটেই আগুন লেগেছে বলে মনে হচ্ছে। তবে তদন্তের পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট পাওয়ার আগে কিছু বলা সম্ভব নয়।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy