বাঁ পায়ে গুলি লাগার কথা সোমবার হাসপাতালে এসে একাধিকবার জানিয়েছিল মালদহের সাহাপুরের অষ্টম শ্রেণির ছাত্র। কিন্তু মালদহ মেডিক্যাল কলেজে ছাত্রকে প্রাথমিক চিকিত্সার পরেই ছেড়ে দেওয়া হয়। পায়ে গুলি লাগেনি বলে দাবি করে, ব্যান্ডেজ বেঁধে ছেড়ে দেওয়া হয় ছাত্রকে। মঙ্গলবার বেসরকারি নার্সিংহোমে এক্সরে রিপোর্টে জানা যায়, গোড়ালির উপরের দিকে হাড়ের ভিতরে আস্ত একটি গুলি বিঁধে রয়েছে। ফের তাকে ভর্তি করানো হয় মালদহ মেডিক্যাল কলেজে।
সোমবার দুপুরে সাহাপুরে একটি জমি দখলকে কেন্দ্র করে দু’পক্ষের মধ্যে বচসায় গুলি চালানোর অভিযোগ ওঠে তৃণমূল কর্মী বলে পরিচিত পাণ্ডব দাস ও কয়েক জনের বিরুদ্ধে। পবন দাস নামে ওই ছাত্রের পায়ে গুলি লেগেছিল বলে জানায় তার পরিবার। অথচ মালদহ মেডিক্যাল কলেজে নিয়ে গেলেও কেন চিকিত্সকরা গুলি নেই বলে জানালেন, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে ছাত্রের পরিবারের সদস্যেরা। সংশ্লিষ্ট চিকিত্সক বা কর্মীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্তা নেওয়ার দাবি তুলেছে গ্রামবাসীদের একাংশ।
ছাত্রের পরিবার সূত্রে খবর, মেডিক্যাল কলেজ থেকে বাড়ি ফিরে সারা রাত পায়ের যন্ত্রনায় পবন ঘুমোতে পারেনি। মঙ্গলবার তাকে একটি বেসরকারি নার্সিংহোমে নিয়ে যাওয়া হয়। জানা যায়, গুলি আটকে রয়েছে। ফের মেডিক্যাল কলেজেই ভর্তি করানো হয় তাকে।
তবে এ দিনও ছাত্রের অস্ত্রোপচার হয়নি বলে জানা গিয়েছে। আজ বুধবার ফের এক্সরে করে রিপোর্ট দেখে অস্ত্রোপচার করা হবে বলে জানিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। হাসপাতালের সুপার তথা সহকারি অধ্যক্ষ মহম্মদ আব্দুর রশিদ বলেন, “এমন ঘটনা কাম্য নয়। চিকিত্সকের গাফিলতির অভিযোগ প্রমাণিত হলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
এ দিন হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে পবন বলে, “আমি কিন্তু বারবার চিকিত্সককে বলেছিলাম যে পায়ে গুলি বিঁধে রয়েছে। তিনি বললেন, সে সব নেই। এমনিই ভাল হয়ে যাব।”
এই ঘটনায় তৃণমূল কর্মী পাণ্ডব দাস ছাড়াও ঝড়ু মণ্ডল ও মিঠুন মণ্ডল নামে দু’জনকে ধরেছে পুলিশ। তাদের আট দিনের জেল হাজত হয়েছে। মালদহের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অভিষেক মোদী বলেন, “যে অভিযোগ করা হয়েছিল, তাতে গুলি চালানোর উল্লেখ ছিল না। মামলায় গুলি চালানোর বিষয়টি রাখা হয়নি। ছাত্রের পায়ে গুলি বিঁধে থাকার রিপোর্ট হাতে এলে সেই মতো পদক্ষেপ করা হবে।” হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, শল্যচিকিত্সক অর্কপ্রভ রায় ছাত্রের ডাক্তারি পরীক্ষা করেছিলেন। বছরখানেক আগে কলকাতা থেকে অর্কবাবু মালদহ মেডিক্যাল কলেজে কাজে যোগ দেন। ঘটনার কথা জানতে চেয়ে অর্কবাবুকে ফোন করা হলে তিনি মন্তব্য করতে চাননি। ‘ব্যস্ত রয়েছি’ বলে তিনি ফোনের সংযোগ কেটে দেন। হাসাপাতাল কর্তৃপক্ষের ভূমিকা নিয়ে ক্ষুব্ধ বাসিন্দারা। তৃণমূলের জেলা সভাপতি মোয়াজ্জেম হোসেন অবশ্য কোনও মন্তব্য করতে চাননি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy