Advertisement
E-Paper

পত্রিকা বিলি করায় মার, কাঠগড়ায় মন্ত্রী গৌতম

কর্মিসভায় শিলিগুড়ির একটি মাসিক পত্রিকা বিলি করায় সংবাদপত্রের সম্পাদককে কিল-চড় মারার অভিযোগ উঠেছে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেবের বিরুদ্ধে। শনিবার শিলিগুড়ি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে তৃণমূলের কর্মিসভা শুরুর মুখে ঘটনাটি ঘটে। রাতে থানায় গিয়ে পুলিশে অভিযোগ জানান প্রাণগোবিন্দ মিত্র নামে ওই ব্যক্তি।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২২ জুন ২০১৪ ০১:২৯
শিলিগুড়ি থানায় উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী গৌতম দেবের বিরুদ্ধে মারধরের অভিযোগ দায়ের করছেন প্রাণগোবিন্দ মিত্র। ছবি তুলেছেন বিশ্বরূপ বসাক।

শিলিগুড়ি থানায় উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী গৌতম দেবের বিরুদ্ধে মারধরের অভিযোগ দায়ের করছেন প্রাণগোবিন্দ মিত্র। ছবি তুলেছেন বিশ্বরূপ বসাক।

কর্মিসভায় শিলিগুড়ির একটি মাসিক পত্রিকা বিলি করায় সংবাদপত্রের সম্পাদককে কিল-চড় মারার অভিযোগ উঠেছে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেবের বিরুদ্ধে। শনিবার শিলিগুড়ি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে তৃণমূলের কর্মিসভা শুরুর মুখে ঘটনাটি ঘটে। রাতে থানায় গিয়ে পুলিশে অভিযোগ জানান প্রাণগোবিন্দ মিত্র নামে ওই ব্যক্তি। শিলিগুড়ির পুলিশ কমিশনার জগমোহন বলেন, “অভিযোগ যথার্থ কি না, তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

প্রাণবাবুর বাড়ি দেশবন্ধুপাড়ায়। মাসিক পত্রিকার সম্পাদকের পাশাপাশি তিনি হোমিওপ্যাথি চিকিৎসকও। তাঁর দাবি, তিনি এ দিন খবর সংগ্রহের জন্য কর্মিসভায় গিয়েছিলেন। সভা শুরুর আগে সেখানে উপস্থিত তৃণমূল অনেক নেতাকে তাঁর পত্রিকা বিলিও করেন। মঞ্চে অতিথিদের বসার জায়গার সামনে টেবিলেও তা রেখে আসেন। বিজেপি’র সংসদ দখল, শিলিগুড়ির আসন্ন পুরভোটে বিজেপি ভাল ফল করবে তাতে এমন কয়েকটি খবর ছিল। তৃণমূল নেতৃত্ব তা ভাল চোখে দেখেননি। সভাস্থলে উপস্থিত উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রীর কানে পৌঁছয় সেই খবর। তিনি গিয়ে ওই ব্যক্তির কলার ধরে চড়-ঘুষি মারেন বলে অভিযোগ। কয়েক জন নেতা গিয়ে পত্রিকার সম্পাদককে ধরে বাইরে বের করে দেন। গৌতমবাবু সেই সময় তাঁকে লাথিও মারেন বলে অভিযোগ। তবে গৌতমবাবুর দাবি, “তেমন কোনও ব্যাপার নয়। লোকটির মাথা খারাপ। ওঁকে আমি চিনি। পরে ওঁর সঙ্গে কথা বলে নেব।”

ঘটনার পরেই প্রাণগোবিন্দবাবু অসুস্থ বোধ করতে থাকেন। তিনি জানান, গত তিন বছর ধরে তিনি পত্রিকাটি চালাচ্ছেন। এমন অভিজ্ঞতার মুখে কখনও পড়েননি। এ দিন সাংবাদিকতার কাজেই গিয়েছিলেন। বিভিন্ন লোককে পত্রিকা দিচ্ছিলেন। তাঁর অভিযোগ, “আপত্তি কিছু থাকলে গৌতমবাবু আমাকে নিষেধ করে সেগুলি নিয়ে চলে যেতে বলতে পারতেন। তিনি আমার দিকে হনহন করে আসছেন দেখে প্রথমে বুঝতে পারিনি। কাছে এসে উনি আমাকে ‘বিজেপির পত্রিকা, বিজেপির লোক’ বলে কলার ধরে চড়-ঘুষি মারেন। ‘কেন মারছেন’ জিজ্ঞাসা করতেই মন্ত্রীর দলের কয়েক জন এসে আমায় ধরেন। পিছন থেকে লাথি মেরে আমায় বার করে দেন। পুলিশে অভিযোগ জানিয়েছি।”

তৃণমূলের অন্যতম নেতা কৃষ্ণ পাল সব অভিযোগ উড়িয়ে দাবি করেন, “মন্ত্রী ওই লোকটিকে বের করে দিয়েছেন, মারধর করেছেন, কে বলল? ওই ভদ্রলোক দলের কর্মিসভায় বিজেপির হয়ে প্রচার করছিলেন। অন্য কেউ থাকলে তিনি মার খেতেন। আমরা থাকায় তা করা হয়নি।” মহিলা তৃণমূল নেত্রী জ্যোৎস্না অগ্রবাল এ নিয়ে মন্তব্য করতে চাননি।

প্রাক্তন পুরমন্ত্রী, সিপিএমের অশোক ভট্টাচার্য বলেন, “মন্ত্রী হলেও গৌতমবাবুর বোধশক্তি পরিণত হয়নি। কী বলা উচিত, কী করা উচিত, তা তিনি জানেন না। তিনি ওই ব্যক্তিকে কিল-ঘুষি, লাথি মেরেছেন বলে শুনেছি। এর জন্য শাস্তি হওয়া উচিত। আমরা গৌতমবাবুর গ্রেফতারি দাবি করছি।” কংগ্রেসের দার্জিলিং জেলা সভাপতি শঙ্কর মালাকারের কটাক্ষ, “ক্ষমতার দম্ভে মন্ত্রী দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। মানুষকে মানুষ বলে

মনে করছেন না।” বিজেপির জেলা সভাপতি রথীন্দ্র বসু বলেন, “মন্ত্রী নিজে ওই ব্যক্তিকে মারধর করে থাকলে তা দুর্ভাগ্যজনক। অভিযোগ সত্যি হলে, আইনি ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। কারণ, রাজনীতিতে সমালোচনা, কটাক্ষ, তির্যক মন্তব্য হতেই পারে। তা সহ্য করাই সুস্থতার পরিচয়।”

gautam deb tmc siliguri indoor stadium magazine editor attacked magazine editor attack
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy