Advertisement
E-Paper

পরিবেশ থেকে সামাজিক বিষয়, নানা থিমে সাজছে একটাই মণ্ডপ

এক মণ্ডপে অনেক থিম। পরিবেশ-নদী থেকে শুরু করে বৃদ্ধ বাবা-মাকে অবহেলা। ব্যর্থতা-অবসাদের চাপে জীবনের লড়াই থেকে পালিয়ে না যাওয়া। এমনই নানা বার্তা পুজোর মণ্ডপে। কন্যাকুমারীর বিবেকানন্দ সংগ্রহশালার মতো দেখতে মণ্ডপের ভিতরে-বাইরে থাকবে নকশা কাটা বিভিন্ন বোর্ড।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ০২:১৮

এক মণ্ডপে অনেক থিম। পরিবেশ-নদী থেকে শুরু করে বৃদ্ধ বাবা-মাকে অবহেলা। ব্যর্থতা-অবসাদের চাপে জীবনের লড়াই থেকে পালিয়ে না যাওয়া। এমনই নানা বার্তা পুজোর মণ্ডপে। কন্যাকুমারীর বিবেকানন্দ সংগ্রহশালার মতো দেখতে মণ্ডপের ভিতরে-বাইরে থাকবে নকশা কাটা বিভিন্ন বোর্ড। সেই বোর্ডেই থাকবে এক-একটি বার্তা। জলপাইগুড়ি পুরাতন পুলিশ লাইনের পুজো মণ্ডপ থিম-ভাবনায় তাই অভিনব-ই বলা যায়।

পুজোর থিমে রয়েছে করলা নদীও। জলপাইগুড়ি শহরের বুক চিরে বয়ে যাওয়া করলা নদীর নাব্যতার সমস্যা দীর্ঘদিনের। নদীকে ঘিরে নানা সময়ে একাধিক পরিকল্পনা গ্রহণ করা হলেও, তার রূপায়ণ নিয়ে শহরবাসীর বিস্তর অভিযোগ রয়েছে। বছর তিনেক আগে বিষকাণ্ডে নদী জুড়ে মাছের মড়কের পরে পরিবেশপ্রেমীরাও উদ্বেগে। যে নদীকে ঘিরে পর্যটনের সুযোগ ছিল সেই নদীতে অকাতরে আবর্জনা ফেলা হয় বলে অভিযোগ। পুরাতন পুলিশ লাইনের পুজো উদ্যোক্তারা করলা নদীকে বাঁচাতে আর্জি জানাবেন দর্শনার্থীদের। সেই সঙ্গে ‘করলা যদি বুজে যায়, বন্যা ছাড়া নেই উপায়’ এই ছড়ায় নদী সংস্কারের দাবিও জোরালো করার আবেদনও থাকবে মণ্ডপে।

ছড়া বা ছন্দমিল দিয়েই বিভিন্ন বার্তা লেখা হবে মণ্ডপে। উদ্যোক্তাদের দাবি, নীরস ভাবে কোনও কিছু লেখা থাকলে তা আগ্রহ তৈরি করে না। পুজোর ভিড়ে উত্‌সবের মেজাজে সেই সব ‘তত্বকথা’ বাসিন্দাদের কাছে খুব একটা বার্তাও বহন করে না বলে উদ্যোক্তারা মনে করছেন। সে কারণেই ছন্দে মিল দিয়েই সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করা সম্ভব হবে বলে তাঁরা মনে করছেন। উদাহরণ হিসেবে পারিবারিক মূল্যবোধ নিয়ে লেখা আরেকটি ছড়ার কথা জানানো হল, পুজো কমিটির তরফে। “বাবা-মাকে দূরে ফেলে, লাভ কী একা চলে? রেখে তাঁদের বৃদ্ধাশ্রমে, কী সুখ থেকে এসি-রুমে।” এমনই নানা ছাড়ার অন্তমিলে দেও।য়া হবে পরিবেশ-থেকে সামাজিক মূল্যবোধের নানা বার্তা।

পুজো কমিটির আহ্বায়ক অলকসুধীর সরকার বলেন, “সকলে মিলে ভাল থাকাই আমাদের মূল থিম বলা যায়। ভাল থাকতে হল অন্যদেরও ভাল রাখতে হয়, পরিবেশ ভাল রাখতে হয়। তাই সব কিছু ভাল রাখার বার্তা-ই তুলে ধরা হবে পুজো মণ্ডপে। তাতে মূল্যবোধের ভাবনা যেমন থাকবে, তেমনিই ব্যর্থতা থেকে বেরিয়ে এসে আত্মবিশ্বাসী হওয়ার অনুপ্রেরণাও জোগাবে মণ্ডপের বিভিন্ন বার্তা।”

উদ্যোক্তারা জানালেন, আরও একটি থিম-ভাবনার। তবে মণ্ডপের কোনও বার্তায় নয়, সেই ভাবনা মিশে থাকবে মণ্ডপের সাজসজ্জায়। একচালা দেবী প্রতিমার আশেপাশে মণ্ডপ জুড়ে থাকবে নানা নকশা, আলপনা। থার্মোকল বা বোর্ডের উপর পোয়াল দিয়ে তৈরি হবে অসংখ্য মডেল। সব মডেলেই প্রকাশ পাবে মাতৃস্নেহ। যেমন কোনটায় দেখা যাবে মায়ের কোলে গণেশ, কোথায় কৃষ্ণ-যশোদাকে। আপাতত এই মডেলগুলি তৈরি চলছে সেনপাড়ার একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার স্কুল ঘরে। সেখানে মডেল তৈরিতে ব্যস্ত আবেয়া, অনুপ, লক্ষ্মী, কল্পনারা। ১৮ পার হওয়া এই তরুণ-তরুণীরা সকলেই মূক ও বধির। স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা স্বপ্নতোরণের দেবাশিস চক্রবর্তী জানালেন, প্রতিবন্ধী শিশু কিশোরদের স্বনির্ভর করতেই সংস্থার প্রতিষ্ঠা। হাতের কাজের মাধ্যমে এই সংস্থা এখন পরিচিত নাম। আবেয়া-লক্ষ্মীরা হাতের কাজে এখন অনেকটাই স্বনির্ভর। পুজো মণ্ডপে ওদের কাজ প্রশংসিত হলে সেটা ওদের বাড়তি অনুপ্রেরণা দেবে বলে মনে করেন দেবাশিসবাবু।

পুজোর অন্যতম উদ্যোক্তা অলকবাবুর কথায়, “প্রতিবন্ধী শিল্পীদের তৈরি করা হাতের কাজ দিয়ে মণ্ডপ সাজিয়ে, ওদের প্রতিভার কথা আরও বেশি মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়া যাবে।” এই ভাবনাও পুজোর থিমে-ই মিশে গিয়েছে।

durga puja 2014 theme siliguri pujo
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy