Advertisement
E-Paper

ফাঁকা মাঠেই আবার পৃথক রাজ্যের দাবি তুললেন গুরুঙ্গ

এতদিন তাঁর সভা মানেই ছিল মাঠে উপচে পড়া ভিড়। কিন্তু এ বছর শিপচু কাণ্ডের চতুর্থ ‘বলিদান দিবসে’ মোর্চা সভাপতি বিমল গুরুঙ্গের সভা মঞ্চে দেখা গেল না ভিড়ের সেই চেনা ছবি। গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা কি তবে জনসমর্থন হারাচ্ছে? আর সেই জন্যই কি রবিবার নাগরাকাটার শিপচুর সভায় আবারও গোর্খাল্যান্ডের দাবি নিয়ে সরব হলেন মোর্চা সভাপতি বিমল গুরুঙ্গ? শুরু হয়েছে জল্পনা।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০১:১৬
এমন ফাঁকা মাঠেই বলিদান দিবসের সভা করলেন মোর্চা সভাপতি বিমল গুরুঙ্গ। রবিবার শিপচুতে দীপঙ্কর ঘটকের তোলা ছবি।

এমন ফাঁকা মাঠেই বলিদান দিবসের সভা করলেন মোর্চা সভাপতি বিমল গুরুঙ্গ। রবিবার শিপচুতে দীপঙ্কর ঘটকের তোলা ছবি।

এতদিন তাঁর সভা মানেই ছিল মাঠে উপচে পড়া ভিড়। কিন্তু এ বছর শিপচু কাণ্ডের চতুর্থ ‘বলিদান দিবসে’ মোর্চা সভাপতি বিমল গুরুঙ্গের সভা মঞ্চে দেখা গেল না ভিড়ের সেই চেনা ছবি।

গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা কি তবে জনসমর্থন হারাচ্ছে? আর সেই জন্যই কি রবিবার নাগরাকাটার শিপচুর সভায় আবারও গোর্খাল্যান্ডের দাবি নিয়ে সরব হলেন মোর্চা সভাপতি বিমল গুরুঙ্গ? শুরু হয়েছে জল্পনা।

এমনিতেই সুবাস ঘিসিঙ্গের মৃত্যুর পরে পাহাড়ের মানুষের সহানুভূতির অনেকটাই এখন জিএনএলএফের দিকে। তার উপর ডুয়ার্সের সভায় ভিড় নেই তেমন। মোর্চা নেতাদের সাফাই, ডুয়ার্সের বিভিন্ন এলাকা থেকে শুধুমাত্র বাছাই প্রতিনিধিদেরই আসতে বলা হয়েছিল। মোর্চার কেন্দ্রীয় কমিটির নেতা তথা ডুয়ার্সের নেতা অশোক বিশ্বকর্মা বলেন, “ডুয়ার্সের সব ইউনিট থেকে নেতৃত্বকে আসতে বলা হয়েছিল। সাধারণ কর্মীদের ডাকা হয়নি। সে কারণেই ভিড় কম বলে মনে হয়েছে।” মোর্চার একটি সূত্রে অবশ্য জানা গিয়েছে, ভিড় নেই দেখে উদ্বিগ্ন গুরুঙ্গ নিজেই। আর তাই পালে হাওয়া টানতে এ দিন তিনি জানিয়ে দিয়েছেন, পৃথক গোর্খাল্যান্ডের দাবিই তাঁদের মূল লক্ষ্য। ডুয়ার্সের এলাকাও সেই পৃথক গোর্খাল্যান্ডের তালিকায় ছিল এবং থাকবে।

এ দিন গুরুঙ্গ বলেন, “ডুয়ার্সকে রেখেই পৃথক গোর্খাল্যান্ড তৈরি হবে। যতদিন বেঁচে থাকব, গোর্খাল্যান্ডের দাবি আমি ছাড়ব না।” যা শুনে ডুয়ার্সের আদিবাসী বিকাশ পরিষদের ডুয়ার্স তরাই আঞ্চলিক কমিটির সভাপতি পরিমল লগুন বলেন, “ডুয়ার্সকে গোর্খাল্যান্ডের অন্তর্ভূক্ত করার প্রশ্নই নেই। তেমন হলে আমরাও পাল্টা প্রতিরোধ করব।” উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেবেরও বক্তব্য, “এটা নিয়ে নতুন করে কিছু বলার নেই। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আগেই বলে দিয়েছেন, বাংলা ভাগ করা চলবে না।”

মোর্চা নেতাদের একাংশের ব্যাখ্যা, দার্জিলিঙের তিন মহকুমা এলাকা নিয়ে জিটিএ গঠনের পর থেকেই ডুয়ার্সে মোর্চার জনসমর্থনে কিছুটা ভাটার টান এসেছে। তার প্রতিফলনই এ দিন মাঠের ভিড়ে দেখা গিয়েছে। সে কথা উপলব্ধি করেই সম্ভবত এ দিনের সভা থেকে ডুয়ার্সকে পৃথক গোর্খাল্যান্ডের মধ্যে রাখার প্রস্তাব ফের সামনে এনেছেন গুরুঙ্গ।

২০১১ সালে পৃথক গোর্খাল্যান্ডের দাবিতে পাহাড় থেকে ডুয়ার্স পদযাত্রা কর্মসূচি নিয়েছিল মোর্চা। সেই সময়ে ডুয়ার্সের শিপচুতে পুলিশের সঙ্গে মোর্চা সমর্থকদের একাংশ ঝামেলায় জড়িয়ে পড়েন। ৮ ফেব্রুয়ারি পুলিশের গুলিতে মারা যান তিন মোর্চা সমর্থক। তার পর থেকেই প্রতি বছর এই দিনে শিপচুতে ‘বলিদান দিবস’ পালন করে আসছে মোর্চা।

এ দিনের সভায় রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে পাহাড়ে ‘বিভাজনের রাজনীতি’ নিয়ে সরব হন গুরুঙ্গ। জানুয়ারিতেই মুখ্যমন্ত্রী পাহাড় সফরে গিয়ে শেরপাদের জন্য পৃথক উন্নয়ন বোর্ড গঠনের সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেছেন। এর আগে লেপচা এবং তামাঙ্গ বোর্ড গঠনের রাজ্য সরকারের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ করেছিল মোর্চা। শেরপা বোর্ড গঠনের পরেও মোর্চা নেতারা তার সমালোচনা করেছিলেন। এ দিন গুরুঙ্গ বলেন, “পাহাড়ের বিভিন্ন জাতির মধ্যে বিভেদ তৈরি করে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চাকে দুর্বল করার চেষ্টা করা হচ্ছে। এর ফল ভয়ানক হবে। আমাদের সর্তক থাকতে হবে।”

এ দিন ঘিসিঙ্গের প্রশংসা করে তাঁকে ‘বড় নেতা’ বলে সম্বোধন করতে শোনা যায় গুরুঙ্গকে। পালে হাওয়া টানতে যেখানে জিএনএলএফ সুবাস ঘিসিঙ্গের ছেলে মনকে দলের সভাপতি ঘোষণা করেছে, সেখানে পিছিয়ে নেই মোর্চাও। শিপচুর সভায় লালকুঠিতে ঘিসিঙ্গের মূর্তি তৈরি বা তাঁর নামে রাস্তার নাম রাখা যায় কিনা, সেই প্রসঙ্গও টেনে আনেন। তা নিয়ে জিটিএ-র সভাতে আলোচনা করা হবে বলে জানিয়ে দেন গুরুঙ্গ।

separate state gurung malbazar
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy