Advertisement
E-Paper

ফুটবল মাঠে মিললেন দু’দেশের রক্ষীরা

দু’দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর ফুটবলকে ঘিরে মিলনক্ষেত্র হয়ে উঠল সিতাইয়ের কায়েতের বাড়ি গ্রাম। কেউ মাঠে ভিড় করে খেলা দেখলেন। কেউ কাটাতারের ওপার ঠায় দাঁড়িয়ে থেকে ‘গোল’ কে দিল? সে প্রশ্ন ছুঁড়লেন বার বার। শেষ অবধি ৬-৫ গোলে বাংলাদেশ বর্ডার গার্ডকে হারিয়ে জয়ী হল ভারতীয় সীমান্ত রক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)।

নমিতেশ ঘোষ

শেষ আপডেট: ১২ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০২:৪৮
বাংলাদেশ (সবুজ জার্সি) ও ভারতের (নীল জার্সি) সীমান্তরক্ষী বাহিনীর মধ্যে ফুটবল ম্যাচ চলছে সিতাইয়ে। বুধবার ছবিটি তুলেছেন হিমাংশুরঞ্জন দেব।

বাংলাদেশ (সবুজ জার্সি) ও ভারতের (নীল জার্সি) সীমান্তরক্ষী বাহিনীর মধ্যে ফুটবল ম্যাচ চলছে সিতাইয়ে। বুধবার ছবিটি তুলেছেন হিমাংশুরঞ্জন দেব।

দু’দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর ফুটবলকে ঘিরে মিলনক্ষেত্র হয়ে উঠল সিতাইয়ের কায়েতের বাড়ি গ্রাম। কেউ মাঠে ভিড় করে খেলা দেখলেন। কেউ কাটাতারের ওপার ঠায় দাঁড়িয়ে থেকে ‘গোল’ কে দিল? সে প্রশ্ন ছুঁড়লেন বার বার। শেষ অবধি ৬-৫ গোলে বাংলাদেশ বর্ডার গার্ডকে হারিয়ে জয়ী হল ভারতীয় সীমান্ত রক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)।

বন্ধুত্বপূর্ণ খেলা। তাই হারজিতের চেয়েও সৌহার্দ্য ছিল বেশি। বাংলাদেশের বিজিবির এক জওয়ান বললেন, “খেলায় হারজিৎ তো থাকবেই। সব থেকে বড় কথা আমরা আরও আন্তরিক হয়ে উঠলাম। এখানে মন খারাপের কিছু নেই।

বুধবার কায়েতের বাড়ি জুনিয়র হাইস্কুলের মাঠে বসেছিল ফুটবলের আসর বিএসএফের ফালাকাটা রেঞ্জের উদ্যোগেই ওই খেলার আয়োজন করা হয় বাংলাদেশ বর্ডার গার্ডের রংপুর রেঞ্জের সঙ্গে খেলা হয় বিএসএফের ওই খেলা ঘিরে সকাল থেকেই এলাকায় বসেছিল উৎসবের আসর। খেলা শুরু হয় দুপুর আড়াইটে নাগাদ। তার আগেই সাজিয়ে তোলা হয় মাঠ বিএসএফের ব্যান্ডপার্টির সঙ্গে ‘ভাংড়া’ নাচে স্বাগত জানানো হয় বাংলাদেশের দলকে। খেলা দেখতে সে সময় মাঠে ভিড় উপচে পড়েছে। কিছুটা দূরেই কাটাতার ওপাশে বাংলাদেশের রংপুর। কাঁটাতারের ওপারে কয়েক হাজার মানুষ জমা হন। সেখান থেকে অবশ্য মাঠ দেখা যায় না। তাতেও উৎসাহে কমতি নেই। তাঁরা বারবারই হাঁক দিচ্ছিলেন, “কে এগিয়ে? গোল কি কেউ দিল?” উত্তরটা জানিয়ে দিচ্ছিলেন বিএসএফ জওয়ানরাই।

বিএসএফের ফালাকাটা রেঞ্জের ডিআইজি অশোক কুমার বলেন, “এটা সম্প্রীতির খেলা। মৈত্রীর খেলা। এই খেলার মধ্যে দিয়ে আমাদের সম্পর্ক অনেক দৃঢ় হবে।” বিজিবির রংপুর রেঞ্জের ডিআইজি জুলফিকার আলি বলেন, “দুই দেশের সম্পর্কের ইতিহাস অনেক লম্বা। সে কারণে আমরা পরস্পরের প্রতি অনেক বেশি আন্তরিক। এই ধরনের খেলা আমাদের সেই আন্তরিকতাকে আরও বাড়িয়ে তুলবে। শুধু তাই নয়, সীমান্তে নানা সময়ে বিভিন্ন ধরনের ঘটনা ঘটে তাতেও অনেক কমতি দেখা যাবে।”

এ দিন দুই বাহিনীর জওয়ানদের মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হয়। নির্ধারিত সময়ের প্রথমার্ধে কেউ গোল দিতে পারেনি। দ্বিতীয়ার্ধের খেলা শুরু হওয়ার দশ মিনিটের মাথায় বাংলাদেশের নয়ন মিয়াঁ গোল করে দলকে এগিয়ে দেন। খেলা শেষ হওয়ার মিনিট পাঁচেক আগে বিএসএফের সূরজ টোপ্পো গোল শোধ করেন। ওই অবস্থাতেই খেলা শেষ হয়। অতিরিক্ত সময়েও কেউ গোল দিতে পারেনি। শেষ পর্যন্ত ট্রাইব্রেকারে ৬-৫ গোলে বিএসএফ জয়ী হয়। খেলা দেখতে মাঠে হাজির হয়েছিলেন কয়েক হাজার সাধারণ মানুষ স্কুলের ছাত্রছাত্রী, শিক্ষক থেকে পঞ্চায়েত সদস্যরাও হাজির ছিলেন মাঠে পুরো খেলা দেখে বাড়ি ফেরেন তাঁরা।

শিক্ষক পরিতোষ বর্মন বলেন, “শোনার পর থেকে ওই খেলার অপেক্ষায় ছিলাম। দু’দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর জওয়ানেরা খেললেন। জয়ের থেকেও বেশি খুশি হলাম সবাইকে একসঙ্গে দেখে।” পঞ্চায়েত সদস্য নুর ইসলাম মিয়াঁ বলেন, “এমন খেলা হলে দু’দেশের সম্পর্কের অনেক উন্নতি হবে।” খেলা দেখতে হাজির হয়েছিলেন ওপার বাংলার হাসান আলি, আলম হোসেন-সহ অন্তত তিন হাজার মানুষ। কিন্তু কাটাতার থেকে মাঠ খানিকটা ভিতরে হওয়ায় তাঁরা খেলা উপভোগ করতে পারেননি। হাসান আলি বললেন, “খুব ইচ্ছে ছিল খেলা দেখব। তা আর হয়ে উঠল না।” অবশ্য শেষ পর্যন্ত অপেক্ষা করে খেলার ফলাফল শুনেই বাড়ি ফিরেছেন তাঁরা।

namitesh ghosh sitai border security force india bangladesh border
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy