সোশ্যাল নেটওয়ার্কে ‘হাতেখড়ি’ হয়েছে লোকসভা নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার পরে। এ বার ‘অনলাইন চ্যাটে’ ভোটারদের প্রশ্নের উত্তর দেবেন কোচবিহার লোকসভা কেন্দ্রের বামফ্রন্ট প্রার্থী দীপক রায়। তবে, নিজের পেজে নয়, কোচবিহার জেলা সিপিএমের পেজেই অনলাইনে বসবেন তিনি। বুধবার সিপিএমের কোচবিহার জেলা অফিসে সাংবাদিক বৈঠক করে ‘সিপিআইএম কোচবিহার জেলা কমিটি’ নামে সেই পেজের উদ্বোধন করেন সিপিএমের কোচবিহার জেলা সম্পাদক তারিণী রায়।
তারিণীবাবু বলেন, “তরুণ প্রজন্ম এখন ইন্টারনেটমুখী। ওঁদের অনেকেই এখন আর মিটিং, মিছিলে যান না। কোচবিহারেও সেই সংখ্যাটা অনেক বেশি। সেদিকে তাকিয়ে আমরা সোশ্যাল নেটওয়ার্কের সাহায্য নিচ্ছি। প্রার্থী নিজেও অনলাইনে বসে ভোটারদের প্রশ্নের উত্তর দেবেন।” ফরওয়ার্ড ব্লক নেতা প্রার্থী দীপকবাবু বলেন, “এমনিতে আমরা সাধারণ মানুষের বাড়ি বাড়ি গিয়ে প্রচার করছি। আমাদের কথা বলছি। সে সব কথা ইন্টারনেটের মাধ্যমেও ছড়িয়ে দিতে চাই। কারও যদি কোনও জিজ্ঞাসা থাকে অনলাইনে তাঁর উত্তর দিতেও আমি প্রস্তুত।”
দক্ষিণবঙ্গে সিপিএমের হেভিওয়েট প্রার্থীদের অনেকেই সোশ্যাল নেটওয়ার্ককে কাজে লাগিয়ে ভোটারদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন। কোচবিহারে প্রধান রাজনৈতিক দলগুলির প্রার্থীদের কেউই অবশ্য সোশাল নেটওয়ার্কে সে ভাবে পরিচিত নন। নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার পর দীপকবাবু ফেসবুকে অ্যাকাউন্ট খোলেন। সেখানে তিনি ভোটারদের উদ্দেশ্যে একাধিক বার্তা দেন। কেন তাঁকে জেতাতে হবে সে ব্যাপারেও একাধিক যুক্তি দেন। তবে সময়ের অভাবে তিনি নিয়মিত ফেসবুকে আসতে পারেন না। সেই সমস্যা এড়াতে সিপিএমই উদ্যোগী হয়েছে। জেলা পার্টি অফিসের একটি ঘরে কম্পিউটার বসানো হয়েছে। সেখানে দলের কর্মীরাই ওই ‘পেজ’-এ দলের বক্তব্য, প্রার্থীর প্রচার তুলে ধরবেন। ডিওয়াইএফের কোচবিহার জেলা সম্পাদক মহানন্দ সাহা বলেন, “শীঘ্রই ফেসবুক পেজে জানিয়ে দেওয়া হবে প্রার্থী কবে চ্যাট করবেন। উচ্চ মাধ্যমিক শেষ হলেই কোচবিহারে প্রচারে আসবেন সূর্যকান্ত মিশ্র, বৃন্দা কারাতের মতো নেতারা। সে সব বিষয়ও তুলে ধরা হবে প্রচারে।”
তারিণীবাবু জানান, কোথাও শাসক দলের হাতে দলের কর্মীরা আক্রান্ত হলে সে সবও ভোটারদের জানানো হবেও বলে তিনি জানান। ইতিমধ্যে দল ও প্রার্থীর সমর্থনে বেশ কিছু ছবি সেখানে দেওয়া হয়েছে। একটি ছবিতে দেখা যাচ্ছে প্রার্থী হাত জোড় করে রয়েছেন। দীপকবাবুর বক্তব্যে লেখা হয়েছে, ‘আমি তোমাদেরই লোক।’ ছবির নিচে দু’লাইনের ছড়া, ‘এ বার যেন না হয় ভুল/ উপড়ে ফেলুন জোড়াফুল।’’
এই উদ্যোগকে অবশ্য কটাক্ষ করেছেন তৃণমূলের কোচবিহার জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষ। তিনি বলেন, “৩৪ বছরে ওঁরা যা করেছেন তাতে প্রার্থী, নেতারা মানুষের কাছে যেতে ভয় পাচ্ছেন। এ জন্য ওই সব চেষ্টা করছেন। আমরা গত তিন বছরের ঊন্নয়ন, সুশাসনের কথা তুলে ধরে সরাসরি মানুষের কাছে যাচ্ছি আমাদের এ সবের দরকার নেই।”