চা-শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধি নিয়ে সমাধান সূত্র মিলল না ষষ্ঠ ত্রিপাক্ষিক বৈঠকেও। বৃহস্পতিবারের পরে শুক্রবারেও উত্তরকন্যায় মজুরি বৃদ্ধি নিয়ে ত্রিপাক্ষিক বৈঠক হয়। ত্রিপাক্ষিক বৈঠকের পরে, শ্রমিক এবং মালিকদের সঙ্গে পৃথকভাবেও আলোচনা করেছেন সরকারপক্ষ। তবে মজুরি বৃদ্ধির হার নিয়ে শ্রমিক এবং মালিকপক্ষ সহমত হতে না পারায় এ দিনের বৈঠকও নিষ্ফলাই রইল। সপ্তাহ দুয়েক পরে ফের ত্রিপাক্ষিক বৈঠক হবে বলে জানানো হয়েছে।
শুক্রবার সকাল ১১টা থেকে প্রায় সাড়ে চার ঘণ্টা ধরে বৈঠক চলে। শ্রমমন্ত্রী মলয় ঘটক অবশ্য এ দিনের বৈঠকে কোনও সমাধানসূত্র বের হয়নি বলে মানতে চাননি। তিনি বলেন, “বৈঠকে সদর্থক আলোচনা হয়েছে। শ্রমিক-মালিক দু’পক্ষেরই প্রস্তাব শোনা হয়েছে। আগামী ১৫ দিনের মধ্যে ফের বৈঠক ডাকা হবে। ওইদিনই মজুরি বৃদ্ধির হার নিয়ে সমাধানসূত্র মিলবে বলে আশা করছি। ন্যুনতম মজুরি কাঠামোও দ্রুত কার্যকর করার বিষয়ে চিন্তা ভাবনা করা হচ্ছে।”
বর্তমানে সমতলের চা শ্রমিকদের দৈনিক মজুরি ৯৫ টাকা। সরকারি সূত্রের খবর, এ দিনের বৈঠকে শ্রমিক এবং মালিক দু’পক্ষকেই তিন বছরে তিন দফায় ৪০ থেকে ৪৫ টাকা মজুরি বৃদ্ধির প্রস্তাব দেওয়া হয়। প্রাথমিক ভাবে প্রথম বছর ২০ টাকা এবং বাকি অংশ পরের দু’বছরে বাড়ানোর প্রস্তাব দেওয়া হয়। এর আগে মালিকদের তরফে ২১ টাকা মজুরি বৃদ্ধির প্রস্তাব রাখা হয়েছিল। সূত্রের খবর দু’পক্ষের সঙ্গে পৃথক আলোচনায় সহমত না হলেও, ২১ এবং ৪৫ এর মাঝামাঝি কোনও হারে মজুরি বৃদ্ধি নিয়ে আলোচনা চালানো হচ্ছে।
বৈঠকের সিদ্ধান্ত নিয়ে শ্রমিক মালিক দু’পক্ষই অবশ্য ভিন্ন দাবি করেছেন। চা শ্রমিকদের ২৬ টি সংগঠন নিয়ে তৈরি জয়েন্ট অ্যাকশন কমিটির সদস্যরা এদিনের বৈঠকে হতাশ। পরের বৈঠকেও সমাধান না হলে মালিক পক্ষের বিরুদ্ধে আন্দোলনের হুমকি দিয়েছেন তাঁরা। কমিটির তরফে জিয়াউল আলম বলেন, “ন্যূনতম মজুরি কাঠামোর দাবি করা হয়েছে। এছাড়া অন্য সুবিধাও বৃদ্ধি হোক তা আমরা চাই।”
তৃণমূলের তিনটি সংগঠন সহ মোট ২৭ টি সংগঠনের প্রতিনিধিরা এ দিনের বৈঠকে যোগ দেন। আইএনটিটিইউসির রাজ্য সভানেত্রী দোলা সেন ও তরাই ডুয়ার্স প্ল্যান্টেশন ওয়ার্কার্স ইউনিয়নের রাজ্য সভাপতি শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়ের দাবি, সরকারি তরফে মজুরি বৃদ্ধির যে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে, তাতে শ্রমিকদের স্বার্থ সুরক্ষিত থাকবে। পরের বৈঠকে সমাধানসূত্র মিলবে বলেও দু’জনের আশা।
মালিকদের পক্ষ থেকে এ দিন টি অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্ডিয়ার সম্পাদক প্রবীর কুমার ভট্টাচার্য বলেন, “বর্তমান মজুরির উপরে তিন বছরে ৪০ টাকা বৃদ্ধির প্রস্তাব দিয়েছে সরকার। বৃদ্ধির ওই হারে সম্মতি দেওয়া আমাদের পক্ষে সম্ভব নয়। তবু আমরা বিভিন্ন বাগান মালিক সংগঠনের সঙ্গে কথা বলব বলে জানিয়েছি। তারপরেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy