Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
গঙ্গারামপুরে ডাকাতি

বাজার নয়, যেন যুদ্ধক্ষেত্র

অন্য দিনের মতই সন্ধে হতেই জমজমাট হয়ে উঠেছিল গঙ্গারামপুরের বড়বাজার। মুদি থেকে মণিহারি, তৈরি পোশাকের শোরুম থেকে সোনার গয়নার দোকান সর্বত্রই ছিল ক্রেতাদের ভিড়। পাশের সাপ্তাহিক হাটেও জমে উঠেছিল শেষ সন্ধ্যার বেচাকেনা। বাজারের অদূরে গঙ্গারামপুর থানার ছ’টার ঘণ্টা বাজতে শুনে হাটের দিকে হাঁটা দিয়েছিলেন এলাকার হকার দীপেন বসাক।

গঙ্গারামপুরে ডাকাতির পরে ভিড়

গঙ্গারামপুরে ডাকাতির পরে ভিড়

অনুপরতন মোহান্ত
শেষ আপডেট: ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০১:৫৭
Share: Save:

অন্য দিনের মতই সন্ধে হতেই জমজমাট হয়ে উঠেছিল গঙ্গারামপুরের বড়বাজার। মুদি থেকে মণিহারি, তৈরি পোশাকের শোরুম থেকে সোনার গয়নার দোকান সর্বত্রই ছিল ক্রেতাদের ভিড়। পাশের সাপ্তাহিক হাটেও জমে উঠেছিল শেষ সন্ধ্যার বেচাকেনা। বাজারের অদূরে গঙ্গারামপুর থানার ছ’টার ঘণ্টা বাজতে শুনে হাটের দিকে হাঁটা দিয়েছিলেন এলাকার হকার দীপেন বসাক। নিমেষের মধ্যে বাজারের ছবিটা পাল্টে যায়। দলবদ্ধ মুখোশধারী সশস্ত্র দুষ্কৃতীরা বোমা গুলি ছুড়ে এলাকার দখল নিয়ে ফেলে। গণ্ডগোলের আঁচ পেয়ে আর হাটে ঢোকেননি দীপেনবাবু। বড়বাজারের রাস্তার পাশে চপ-ঘুগনি বিক্রেতারাও তখন পড়িমরি করে ভ্যান, ঠেলাগাড়ি ফেলে ঊর্ধ্বশ্বাসে ছুটছেন। সেই আতঙ্ক কাটেনি রাত পর্যন্ত।

এলাকার বহু পুরানো ও ঐতিহ্যশালী ঝাঁ চকচকে বিরাট সোনার দোকানেও নিত্য দিনের মতো তখন ছিল মহিলাদের ভিড়। জনা সাতেক কর্মচারীকে নিয়ে ক্রেতাদের সামলাচ্ছিলেন দোকানের মালিক প্রবীণ বসন্তবাবু। পাশের এক কাপড়ের দোকানের কর্মচারীর কথায়, “পর পর বিকট শব্দ পেয়ে বাইরে তাকিয়ে দেখি মুখোশ পড়া একদল লোক বসন্তবাবুর দোকানে ঢুকছে। ওদের হাতে আগ্নেয়াস্ত্র দেখে খটকা লেগেছিল। মুহূর্তের মধ্যে দোকানের সামনে রাস্তায় দমাদম বোমা ফাটতে দেখে ভয়ে আমরা দোকানের সাটার বন্ধ করে ফেলি। ততক্ষণে চারপাশে লোকজনের চিত্‌কার বোমার শব্দ ও বারুদের গন্ধে ওই সোনার দোকানে কী চলছে বুঝে যাই।”

মেলায় বিক্রি হওয়া প্লাস্টিকের বাঘ ও সিংহের মুখোশ পড়ে দলটি ডাকাতি করতে গিয়ে বৃষ্টির মত বোমা ছুড়ছিল। যা দেখে প্রথমটা হকচকিয়ে যান স্থানীয় যুবক রূপম সাহা। তিনি বলেন, “বাজার নয়, যেন যুদ্ধক্ষেত্র! দূর থেকে বোমার ধোঁয়া ও রাস্তার অল্প আলোয় স্পষ্ট দেখা যাচ্ছিল না। তবে মোড়ে ব্যাগ হাতে অপরিচিত কিছু লোককে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। ব্যাগ থেকে বোমা ছোড়া হচ্ছিল।”

বালুরঘাট থেকে গঙ্গারামপুরে কাজে গিয়েছিলেন ছোট ব্যবসায়ী অমল দাস। অমলবাবুর কথায়, “প্রথমটায় বুঝে উঠতে পারিনি ঠিক কী হচ্ছে। পর পর বোমা ফাটানোর বহর দেখে পালিয়ে একটি দোকানে ঢুকে পড়ি। ঝাঁপ বন্ধ করে দেওয়া হয়। বাইরে তখন দমাদম বোমা পড়ার শব্দ।” পুরো এলাকাটি ঘিরে মাত্র ২০ মিনিটের মধ্যে লুঠপাট করে পালিয়ে যায় দলটি।

তৃণমূল নেতা তথা বিধানসভার পরিষদীয় সচিব বিপ্লব মিত্র বলেন, “ওই সময়ে জামা কাপড় ইস্ত্রি করাতে চালককে বড়বাজারের একটি লন্ড্রির দোকানে পাঠিয়েছিলাম। চালক রাস্তার ধারে গাড়িটি পার্কিং করে রেখেছিল। লালবাতি লাগানো পুলিশের গাড়ি ভেবে হয়তো দুষ্কৃতীরা বোমা-গুলি ছোড়ে। তবে খুব বেঁচে গিয়েছে গাড়ির চালক।” বাসিন্দারা জানান, ডাকাত দলটি গয়না ও নগদ টাকা লুঠ করে কার্যত বিনা বাধায় বাইকে চম্পট দেয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

anupratan mohanto robbery gangarampur
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE