কোথাও আধ ঘণ্টা পরপর লোডশেডিং হচ্ছে, আবার কোথাও ঘণ্টার পর ঘণ্টা থাকছে না বিদ্যুৎ। কোথাও আবার দীর্ঘ দিন ধরে ট্রান্সফরমার খারাপ থাকলেও তা ঠিক করা হচ্ছে না বলে অভিযোগ। এমনকী, বিদ্যুৎ বণ্টন কোম্পানি স্থানীয় দফতর থেকে শুরু করে টোলফ্রি নম্বরে ফোন করলেও কাজ হচ্ছে না বলে কোচবিহারের বাসিন্দাদের অভিযোগ।
শুক্রবার মাথাভাঙা বিদ্যুৎ বণ্টন কোম্পানির অফিসে হামলা করার অভিযোগ উঠেছে এক দল যুবকের বিরুদ্ধে। তাঁদের মধ্যে ৩ জনকে আটক করে পুলিশ। ঘোকসাডাঙা সতীশের হাটের ওই যুবকদের অভিযোগ, “এক মাসের বেশি সময় ধরে এই এলাকায় বিদ্যুৎ নেই।” মাথাভাঙ্গার সতীশের হাট এবং বাইশগুড়ি এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে দুটি ট্রান্সফর্মার খারাপ হয়ে থাকলেও তা ঠিক করা হচ্ছে না বলে অভিযোগ বাইশগুড়িতে। তাই এ দিন মাথাভাঙা-শীতলখুচি রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখান স্থানীয় বাসিন্দারা। মাথাভাঙ্গার ডিওয়াইএফ নেতা কাজল রায় এ দিন বলেন, “পরিষেবা বেহাল। বারবার জানিয়েও কাজ হচ্ছে না। এ ভাবে চললে আন্দোলনে নামব।” বাসিন্দারা আরও অভিযোগ করেছেন, একটু ঝোড়ো হাওয়া হলে বিদ্যুৎ চলে যায়। তার পর বহু এলাকায় ছয়-সাত ঘণ্টা ধরে বিদ্যুতের দেখা মেলে না।
বিদ্যুৎ দফতরের কর্মীদের অবশ্য দাবি, বৈশাখ মাসে ঝড়-বৃষ্টি হওয়ায় বহু জায়গায় বিদ্যুতের তার ছিঁড়ে খুঁটি পড়ে যায়। কাজের চাপ অনেক বেড়ে যাওয়ায় দেরি হয়। বিদ্যুৎ দফতরের কোচবিহার ডিভিশনাল ইঞ্জিনিয়র বিষ্ণু দত্তকে এ দিন একাধিক ফোন করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি। যদিও তাঁরা সর্বত্র পরিষেবা স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা করেছেন বলে কর্তৃপক্ষের দাবি। বণ্টন কোম্পানির এক কর্তা জানান, বহু এলাকায় ট্রান্সফরমারের ক্ষমতা সীমিত, তাই কিছু জায়গায় লোডশেডিং হচ্ছে। জেলার চাষি থেকে শুরু করে বাসিন্দারা জানান, বোরো ধান চাষের শুরুতে খেতে জল দেওয়ার জন্য বিদ্যুৎ প্রয়োজন ছিল। তখন লোডশেডিং, কম ভল্টেজের সমস্যা থাকায় পথ অবরোধ থেকে শুরু করে গাড়ি আটকে বিক্ষোভও হয়। এখন সেচের জলের সেই চাহিদা নেই, তার পরেও কেন বিদ্যুৎ বিভ্রাট চলছে বোঝা যাচ্ছে না। দিনহাটা মহকুমা ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক রানা গোস্বামী বলেন, “বিদ্যুৎ বেহাল অবস্থা। প্রতিদিন ৩-৪ ঘণ্টা লোডশেডিং হচ্ছে। সঙ্গে কম ভোল্টেজ তো আছেই। ব্যবসায়ীদের চরম ক্ষতির মুখে পড়তে হচ্ছে।” বণ্টন কোম্পানির কর্তারা দাবি করছেন, গরমের জন্যই বিদ্যুতের চাহিদা কয়েক গুণ বেড়ে গিয়েছে। ট্রান্সফর্মারগুলির বেশিরভাগই পুরনো হওয়ায় সমস্যা হচ্ছে।