Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

বার্তা দেবেন নেত্রী, আশায় উত্তরবঙ্গের নেতা-কর্মীরা

সারদা-কাণ্ড, ঘাড়ের কাছে নিশ্বাস ফেলতে থাকা বিজেপিকে কী ভাবে প্রতিরোধ করা যাবে দলের নেতা-কর্মীদের অনেকের মনেই সেই প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে। উপরন্তু, রাজ্যে ক্ষমতাসীন হওয়ার পরে উত্তরবঙ্গকে ‘সুইত্‌জারল্যান্ড’ করার স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন তিনি। সেই লক্ষ্য পূরণে কোথায়, কতটা কাজ হয়েছে সেই খতিয়ান কী ভাবে দেওয়া হবে সে কথাই দলনেত্রীর কাছ থেকে জানতে আগ্রহী উত্তরের তিন জেলার তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের অনেকেই।

৪ ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার দিনহাটার নয়ারহাটে সভা করার কথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। মাঠ না থাকায় ধানখেতেই চলছে সভামঞ্চ তৈরির প্রস্তুতি। সোমবার তোলা নিজস্ব চিত্র।

৪ ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার দিনহাটার নয়ারহাটে সভা করার কথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। মাঠ না থাকায় ধানখেতেই চলছে সভামঞ্চ তৈরির প্রস্তুতি। সোমবার তোলা নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ০২ ডিসেম্বর ২০১৪ ০১:৫৮
Share: Save:

সারদা-কাণ্ড, ঘাড়ের কাছে নিশ্বাস ফেলতে থাকা বিজেপিকে কী ভাবে প্রতিরোধ করা যাবে দলের নেতা-কর্মীদের অনেকের মনেই সেই প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে। উপরন্তু, রাজ্যে ক্ষমতাসীন হওয়ার পরে উত্তরবঙ্গকে ‘সুইত্‌জারল্যান্ড’ করার স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন তিনি। সেই লক্ষ্য পূরণে কোথায়, কতটা কাজ হয়েছে সেই খতিয়ান কী ভাবে দেওয়া হবে সে কথাই দলনেত্রীর কাছ থেকে জানতে আগ্রহী উত্তরের তিন জেলার তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের অনেকেই। আজ, মঙ্গলবার শুরু হওয়া মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের চার দিনের উত্তরবঙ্গ সফরে এমনই নানা প্রশ্নে দলনেত্রীর কাছ থেকে দিশা দেখতে চাইছেন নেতা-কর্মীদের অনেকেই।

তৃণমূল সূত্রের খবর, এই খবর পৌঁছেছে দলনেত্রীর কাছেও। সে জন্য আজ, মঙ্গলবার শিলিগুড়ির বাঘাযতীন পার্কে দার্জিলিং, জলপাইগুড়ি ও আলিপুরদুয়ার, তিন জেলার প্রতিনিধিদের নিয়ে কর্মিসভা করবেন তৃণমূল নেত্রী। রাতেই তিনি যাবেন জলপাইগুড়ি। বুধবার সেখানে ‘স্পোর্টস ভিলেজ’-এর উদ্বোধন করে প্রশাসনিক সভা করবেন। ওই রাতে ময়নাগুড়ির কাছে রাইনো জাঙ্গল ক্যাম্পে থেকে পরদিন কোচবিহারের দিনহাটায় দলীয় সমাবেশে যোগ দেবেন তিনি।

সোমবার রাতেই শিলিগুড়ি পৌঁছেছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক মুকুল রায়ও। দুপুরে মঞ্চের কাজ খতিয়ে দেখতে যান তৃণমূলের দার্জিলিং জেলা কার্যকরী সভাপতি নান্টু পাল। নান্টুবাবু বলেন, “তিন জেলার প্রায় ১০ হাজার লোক হাজির থাকবে বলে আশা করছি। সম্মেলন সফল করতে আপ্রাণ চেষ্টা করছি।” তিনি জানান, প্রতিটি জেলা থেকে নির্বাচিত প্রতিনিধিরা হাজির থাকবেন। শিলিগুড়ি থেকে সদ্য প্রাক্তন হওয়া কাউন্সিলররা এবং পঞ্চায়েত সদস্যরা হাজির থাকবেন। এছাড়া তিন জেলার প্রতিটি বুথ থেকে তিন জন করে প্রতিনিধি পাঠাতে বলা হয়েছে।

শিলিগুড়ির বাঘাযতীন পার্কে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের
কর্মিসভার প্রস্তুতি। সোমবার বিশ্বরূপ বসাকের তোলা ছবি।

সীমান্ত শহর দিনহাটার ছিটমহল সংলগ্ন নয়ারহাটের ডাকুয়ারহাটে মুখ্যমন্ত্রীর সভার জন্য জোরকদমে আসরে নেমেছেন তৃণমূল নেতৃত্ব। জেলা নেতারা ১০০টির উপরে বাস, ট্রাক ভাড়া করে নিয়ে ওই লোক আনা হবে দলের ব্লক নেতৃত্বকে সে ব্যাপারে লক্ষ্য বেঁধে দিচ্ছেন জেলা নেতৃত্ব। তৃণমূলের কোচবিহার জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষ অবশ্য দাবি করেছেন, সভায় এক লক্ষেরও বেশি মানুষ জমায়েত হবে।

বিজেপির কোচবিহার জেলার সাধারণ সম্পাদক নিখিল রঞ্জন দে অভিযোগ করেন, গ্রাম থেকে নিয়ে যেতে তৃণমূল নেতৃত্ব ভয় দেখাচ্ছে। তিনি বলেন, “তৃণমূলের একের এক নেতা গ্রেফতার হচ্ছে। তৃণমূল ছেড়ে দলে দলে মানুষ বিজেপিতে যোগ দিচ্ছেন। তা থেকেই ভিড় না হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।” ফরওয়ার্ড ব্লকের জেলা সম্পাদক উদয়ন গুহ বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী প্রথম থেকে ছিটমহল নিয়ে বিরোধিতা করেছেন। এখন যেই বিষয়টি সমাধানের আশা তৈরি হয়েছে কৃতিত্ব নিতে তিনি সভা করছেন।” মুখ্যমন্ত্রীকে দেখতে অনেকে যাবেন কিন্তু তা দিয়ে দাগ মুছে ফেলা যাবে না।

জলপাইগুড়িতে সারাই হচ্ছে রাস্তা। সোমবার সন্দীপ পালের তোলা ছবি।

প্রশাসনিক সূত্রের খবর, আগামী ৪ অক্টোবর ডাকুয়ারহাটে সভা করবেন মুখ্যমন্ত্রী সেখানে কোনও মাঠ না থাকায় সদ্য ধান কেটে নিয়ে যাওয়া একটি জমির উপরে করা হবে বলে ঠিক করা হয়েছে ইতিমধ্যেই সেখানে মঞ্চ তৈরি, হেলিপ্যাড তৈরির কাজ শুরু করা হয়েছে। চারদিকে থেকে ওই জমি ঘিরে দেওয়া হচ্ছে। খেতের মধ্যে তৈরি হচ্ছে রাস্তা। সেজন্য ওখানে ইট, বালি, পাথর ফেলা হয়েছে।

দলীয় সূত্রের খবর, ছিটমহল নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বার্তা দিতে চান। সে জন্য তিনি ছিটমহল সংলগ্ন কোনও এলাকায় সভা করতে চান। ওই জায়গার আশপাশে বেশ কয়েকটি ছিটমহল রয়েছে। সব ভেবে সেখানেই সভাস্থল হিসেবে ঠিক করা হয়। এ দিন দুপুরে মুখ্যমন্ত্রী ওই জায়গার বদলে হলদিবাড়িতে সভা করার ইচ্ছা প্রকাশ করেন। তা নিয়ে প্রশাসনের ও তৃণমূল নেতাদের মধ্যে চাপানউতোর শুরু হয়। পরে অবশ্য তিনি মত পরিবর্তন করেন বলে দল সূত্রে জানা গিয়েছে। তা নিয়ে অবশ্য কেউ কিছু বলতে রাজি হননি। রবীন্দ্রনাথবাবু বলেন, “মুখ্যমন্ত্রীর সভা ডাকুয়ারহাটে হবে বলেই জানি।” ছিটমহল বিনিময় কমিটির নেতা দীপ্তিমান সেনগুপ্ত বলেন, “ছিটমহল থেকে দশ হাজার লোক মুখ্যমন্ত্রীর সভায় যাবেন।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

leaders hoping for messege from mamata uttarbanga
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE