জ্বলছে দোকান।
পুড়ে ছাই হয়ে গেল বীরপাড়া বাজারের পাঁচটি দোকান। রবিবার সকালের এই অগ্নিকাণ্ডে প্রায় ৩০ লক্ষ টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে ব্যবসায়ীদের আশঙ্কা। দোকানগুলির পাশেই একটি পেট্রোল পাম্প থাকায় রবিবার সকালে বড়সড় দুর্ঘটনার হাত থেকে বীরপাড়া রক্ষা পেয়েছে বলে ব্যবসায়ীরা দাবি করেছেন।
এ দিন সকাল ৮টা নাগাদ প্রথমে একটি টেলিভিশন মেরামতির দোকানে আগুন লাগে। স্থানীয় বাসিন্দারা বালতি করে জল এনে আগুন নেভানোর চেষ্টা করলেও পাশের দোকানগুলিতে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। ক্রমশ আগুন নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। পাশের জুতো, সাইকেল এবং স্টেশনারি দোকানে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। ধূপগুড়ি, ফালাকাটা, হাসিমারা তিনটি দমকল কেন্দ্রে খবর দিলেও দমকলের ইঞ্জিন পৌঁছতে ঘণ্টাখানেকেরও বেশি সময় পেরিয়ে যায় বলে অভিযোগ। ততক্ষণে পাঁচটি দোকান পুরোপুরি ভস্মীভূত হয়ে যায় বলে ব্যবসায়ীরা জানান। চারটি দমকলের ইঞ্জিন পৌঁছনোর পরে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে আরও ঘণ্টাদেড়েক সময় লাগে। শর্টসার্কিট থেকেই আগুন লেগেছিল বলে প্রাথমিক তদন্তের পরে দমকল সূত্রে জানানো হয়েছে।
আগুন নেভাচ্ছে দমকল। রবিবার রাজকুমার মোদকের তোলা ছবি।
রবিবারের আগুনের ঘটনায় বীরপাড়ায় একটি দমকল কেন্দ্র তৈরির দাবি নতুন করে তুলে দিয়েছে। ডুয়ার্সের অন্যতম ব্যবসায়ী এলাকা হিসেবে বীরপাড়া পরিচিত। ভূটান লাগোয়া এই জনপদে প্রতিদিন কয়েক কোটি টাকার ব্যবসা চলে বলে ব্যবসায়ীদের দাবি। এলাকার কয়েকজন ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, গত দেড় বছর ধরে বীরপাড়াতে দমকল কেন্দ্র তৈরির দাবিতে বিভিন্ন মহলে নানা স্মারকলিপি পাঠিয়েও কোনও ফল মেলেনি। দমকল কেন্দ্র চেয়ে বেশ কয়েকবার আন্দোলনও হয়েছে এলাকায়। ঘটনাটি রাতে ঘটলে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ আরও বেড়ে যেত বলে আশঙ্কা ব্যবসায়ীদের। স্টেশনারি দোকানের মালিক বিন্দেশ্বর দাসের কথায়, “সকাল বেলা সামনে দাঁড়িয়ে দোকান পুড়ে যেতে দেখলাম। জিনিসপত্র বের করার সময়ও পায়নি। দমকলের ইঞ্জিন আসতে সময় না লাগলে কিছু হয়ত রক্ষা করতে পারতাম।”
বীরপাড়ার বিধায়ক তথা আরএসপির দলনেত্রী কুমারী কুজুর জানিয়েছেন, দমকল কেন্দ্র তৈরির দাবিতে তিনি বিধানসভাতেও সরব হয়েছিলেন। তিনি বলেন, “বিধানসভাতে একাধিকবার দাবি তোলা হয়েছে। কেন হচ্ছে না বুঝতে পারছি না। ফের দাবি করা হবে। রাজ্য সরকারের কাছে ব্যবসায়ীদের ক্ষতিপূরণের দাবি করব।’’ তবে প্রশাসনিক স্তর থেকে বীরপাড়ায় দলকেন্দ্র তৈরির প্রস্তাব রাজ্য সরকারের কাছে পাঠানো হয়েছে বলে মাদারিহাট-বীরপাড়ার বিডিও পেম্বা শেরপা জানিয়েছেন। তাঁর কথায়, “ফালাকাটা রোডের পাশে চা বাগানের একটি জমি দমকল কেন্দ্রের জন্য দেখা হয়েছিল। বিষয়টি সরকারকে জানানো হয়েছে। পরবর্তীতে কোনও নির্দেশ আসেনি।” শাসক দলের স্থানীয় নেতারা দমকলের দাবি যৌক্তিকতা স্বীকার করেছেন। বীরপাড়ার তৃণমূল নেতা প্রশান্ত নাহার কথায়, “দমকলের দাবিদাবা সংক্রান্ত বিষয়টি আমরা দলের নেতৃত্বকেও জানাব। তবে জমির অভাব রয়েছে। প্রশাসন জমি খোঁজা শুরু করলে নিশ্চই দমকল কেন্দ্র তৈরি করা সম্ভব হবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy