ফেটেছে জমি। —নিজস্ব চিত্র।
বৃষ্টির দেখা নেই। বীজ থেকে চারা বের হলেও, বৃষ্টি না পেয়ে মিইয়ে পড়ছে পাট-বীজ। যে গাছগুলি বেঁচে রয়েছে, সেগুলির উচ্চতা বাড়ছে না। সাধারণত চৈত্র মাসে পাটের বীজ ছড়ানো হয়। তার এক মাসের মধ্যে বৃষ্টি প্রয়োজন বলে কৃষকেরা জানান। তাঁদের মতে, এ সময়ে জমিতে ‘রসের’ প্রয়োজন। বৃষ্টির জলই শুকনো জমিকে নরম করে। এ বারে হলদিবাড়ি এবং লাগোয়া এলাকায় বৃষ্টি বলতে মার্চ মাসে এক দিন। ব্লকের সিংহভাগ জমিতেই জলসেচের ব্যবস্থা নেই। তাই পাট নিয়ে মাথায় হাত চাষিদের।
হলদিবাড়ির ব্লক কৃষি আধিকারিক সঞ্জীব মৈত্রী জানান, “ব্লকে ২৩০০ হেক্টর জমিতে পাট চাষ হয়েছে। পুরো ব্লকেই বৃষ্টির অভাবে গাছ নষ্ট হচ্ছে। কৃষকদের সংগঠনগুলি ক্ষতিপূরণের দাবি করেছে। তা জেলা কর্তৃপক্ষকেও জানানো হয়েছে।” শহর থেকে চার কিলোমিটার দূরে ফিরিঙ্গি ডাঙা গ্রামের কৃষক পূর্ণচন্দ্র বর্মন চৈত্র মাসে দু’বিঘা জমিতে পাটের বীজ ফেলেছিলেন। অন্য বার এ সময়ে জমিতে অন্তত দেড় ফুট উচ্চতার পাটগাছ দেখা যেত। কিন্তু এ বারে ৭৫ শতাংশ ক্ষেত্রেই বীজ মরে গিয়েছে। অর্থাৎ বীজের থেকে চারা বের হয়নি। যে কিছু বীজ থেকে চারা বেরিয়েছে, তারও উচ্চতা তিন ইঞ্চির বেশি নয় বলে জানান পূর্ণচন্দ্রবাবু। তাঁর কথায়, “এমন পরিস্থিতিতে ফের পাটের বীজ জমিতে ফেলব তারও উপায় নেই। ক্ষেতে জলসেচের ব্যবস্থা নেই। জল ছাড়া চারা বাঁচানো কঠিন হবে। তাই বৃষ্টিই ভরসা।” শুধু পূর্ণচন্দ্র বর্মনই নন, হলদিবাড়ি এলাকার বেশির ভাগ পাট চাষিরই অবস্থা এমনই।
কৃষি দফতর জানাচ্ছে, পাট গাছের প্রকৃতি অনেকটা চা গাছের মতন। চা গাছে যেমন রাতে বৃষ্টি এবং দিনে রোদ হলে দ্রুত পাতা বের হয়, তেমনই একই পরিস্থিতিতে পাট গাছেরও দ্রুত বৃদ্ধি হয়। এক মাসের মধ্যে গাছ দুই ফুট লম্বা হয়ে যায়। ১০০ দিনের মাথায় গাছ কাটতে হয়। হলদিবাড়ি পঞ্চায়েত সমিতি কৃষি কর্মাধ্যক্ষ সত্যেন্দ্রনাথ রায় বলেন, “এই ব্লকের কৃষকদের অবস্থা শোচনীয়। পাটের ফলন এ বার আদৌ হবে কি না তা নিয়ে সন্দেহ আছে। সরকার দ্রুত পদক্ষেপ না করলে, কৃষকদের অনেক ক্ষতি হয়ে যাবে।” হলদিবাড়ি ব্লক কৃষি আধিকারিক সঞ্জীব মৈত্রী বলেন, “সমস্ত পরিস্থিতি রাজ্য সরকারকে জানানো হয়েছে। যা কিছু সিদ্ধান্ত রাজ্য সরকারই নেবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy