ছন্দা গায়েন সুস্থ ভাবে ফিরে আসুক কামনা করে প্রার্থনা হিমালয়ান নেচার অ্যান্ড অ্যাডভেঞ্চার ফাউন্ডেশনের সদসস্যদের। ছবি তুলেছেন বিশ্বরূপ বসাক।
আবহাওয়া খারাপ থাকায় কাঞ্চনজঙ্ঘায় উদ্ধারের কাজ ফের এখনই চালু হওয়া নিয়ে সংশয় প্রকাশ করলেন ছন্দা গায়েনের সঙ্গে কাঞ্চনজঙ্ঘার মূল শৃঙ্গ জয় করে ফেরা দীপঙ্কর ঘোষ। তিনি ছন্দার জেলা হাওড়ার বালির বাসিন্দা। সোমবার শিলিগুড়িতে ফিরে দীপঙ্কর জানান, এখন যা আবহাওয়া তাতে সেখানে গিয়ে খোঁজা অসম্ভব। একমাত্র উপায় হেলিকপ্টার নিয়ে খোঁজা। কিন্তু আবহাওয়ার পরিবর্তন না হলে তাতেও খুব একটা সুবিধা হবে না। এদিনই তিনি অভিযান সেরে শিলিগুড়ি হয়ে ফিরে যান হাওড়ায়। শিলিগুড়িতে কাঞ্চনজঙ্ঘা স্টেডিয়ামের একটি ঘরে তাঁকে সফল অভিযান করে ফেরার জন্য সংবর্ধনা দেন হিমালয়ান নেচার অ্যান্ড অ্যাডভেঞ্চার ফাউন্ডেশনের সদস্যরা। তারই মাঝে তিনি জানান, তাঁর অভিজ্ঞতার কথা। শেষ বার ১৮ মে বেস ক্যাম্পে তাঁর সঙ্গে শেষ দেখা হয় ছন্দার। ৩৫ মিনিট হাত ধরাধরি করে নেমেও আসেন তাঁরা। তাই পর্বতারোহণ সব সময়ই অনিশ্চয়তার জানা সত্ত্বেও, ঘুণাক্ষরে বুঝতে পারেননি এটাই তাঁর সঙ্গে শেষ দেখা। দীপঙ্করবাবু এ দিন বলেন, “এই বারের অভিযানের প্রথম দিন থেকেই আবহাওয়া প্রতিকূল ছিল। সে কারণে বারবার পিছিয়ে দিতে হয়েছিল যাত্রার দিন। শেষ পর্যন্ত পূর্বাভাস দেখে, ১৮ মে মূল শৃঙ্গ জয় করতে আমরা রওনা হই। ফের ওইদিনই শৃঙ্গ জয় করে নেমে আসি। কিন্তু ছন্দার তো অন্য রকম পরিকল্পনা ছিল। আমাদের দুর্ভাগ্য এ বার আর ওঁর ফেরা হল না।”
দীপঙ্কর ঘোষ।—নিজস্ব চিত্র।
দীপঙ্করবাবু জানান, কলকাতা থেকে ৩১ মে রওনা হন তিনি। তাঁর দলে তিনি একাই ছিলেন। প্রথমে ৬ মে রওনা হবেন বলে ঠিক হয়। কিন্তু আবহাওয়া খারাপ হয়ে যাওয়ায় তা পিছিয়ে প্রথমে ১০ মে করা হয়। পরে আরও পিছোয় যাত্রার তারিখ। ১১ মে বেস ক্যাম্পে পৌঁছন তিনি। আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয় ১৭ এবং ১৮ তারিখ আকাশ পরিষ্কার থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। ১৮ মে রওনা হন তিনি। সঙ্গে আরও কয়েকটি দলের মোট ১৪-১৫ জন। তার মধ্যে ৪ জন বাঙালি। ছন্দা গায়েন, টুসি দাস, তিনি ও রাজীব ভট্টাচার্য। এঁরা সকলেই একসঙ্গে ১৮ মে কাঞ্চনজঙ্ঘার মূল শৃঙ্গ জয় করেন। সেদিনই নামার সময় ছন্দা ও তিনি আধ ঘন্টা নামেন এক সঙ্গেই। তিন নম্বর ক্যাম্পে থাকেন তাঁরা। ১৯ মে তিনি, টুসি-সহ অন্যরা নেমে যান বেস ক্যাম্পে। রাজীববাবু ও ছন্দা থেকে যান। পরে ২০ মে সন্ধ্যায় রাজীববাবুও ফিরে আসেন। ২১শে তাঁরা নীচে নামতে শুরু করেন। ২৩শে মে তিনি দুর্ঘটনার খবর পান।
এদিন ইয়াংলুং হিমবাহে ট্রেক করে নেমে এলেন ৬ জনের আরও একটি দল। বেসক্যাম্পে তাঁদের সঙ্গে দেখা হয় ছন্দা ও অন্যদের। তাঁদের এক জন সুজাতা ভট্টাচার্য জানালেন, খেবং নামে এক গ্রাম হয়ে যেতে হয় আরাহীদের। সেখানে থেকেছিলেন ছন্দা। বাড়ির মালিক উমেশ গৌতম দুর্ঘটনার খবর পেয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন। সেখানেই এক খাতায় লেখা রয়েছে ছন্দার অভিজ্ঞতার কাহিনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy