সিটি বাস ধর্মঘটে থমকে বাস, এনজেপি স্টেশন চত্বরে। —নিজস্ব চিত্র।
মদের ঠেকে বচসার জেরে এক বাস চালককে মারধর করা হয়েছে, এই অভিযোগে দীর্ঘক্ষণ বন্ধ হয়ে থাকল নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশন এলাকায় ৭ ঘণ্টা বাস ও ট্রাক চলাচল বন্ধ থাকায় বিপাকে পড়লেন অনেকেই। শুক্রবার সকাল সাতটা থেকে ২ টো পর্যন্ত বাস ও ট্রাক বন্ধ ছিল। মারধরের ফলে গুরুতর জখম অবস্থায় ওই চালককে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আহত ওই চালক তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠন আইএনটিটিইউসি সমর্থিত বাসও ট্রাক চালকদের সংগঠনের সক্রিয় সদস্য বলে জানিয়েছেন আইএনটিটিইউসির ডাবগ্রাম-ফুলবাড়ি জোনাল সম্পাদক বিজন নন্দী। তাঁর দাবি, মারধরে জড়িতরা সিপিএম ও বিজেপি কর্মী।
যদিও দুু’দলের তরফেই এই ঘটনাকে তৃণমূলের নিজেদের মধ্যে লড়াই বলে দাবি করা হয়েছে। শিলিগুড়ির পুলিশ কমিশনার জগমোহন বলেন, “অভিযোগ হয়েছে। অপরাধীকে খুঁজে বের করতে থানাকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।” এদিন দুপুরে আইএনটিটিইউসির পক্ষ থেকে বাস ও ট্রাক সংগঠনগুলির চালক ও মালিকদের নিয়ে বৈঠক হয়। তারপরেই ধর্মঘট উঠিয়ে নেন তাঁরা। তবে দ্রুত অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা না হলে তাঁরা পরবর্তী পদক্ষেপ নিয়ে চিন্তা ভাবনা করবেন বলে জানানো হয়েছে।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, বুধবার রাতে ইন্ডিয়ান অয়েল কর্পোরেশনের গুদাম সংলগ্ন একটি মদের ঠেকে মারামারি হয় এনজেপি এলাকার বাসচালক বৈজু সাহানি এবং ভক্তিনগর এলাকার আশিস পালের মধ্যে। বৈজু নিউ জলপাইগুড়ি-পানিট্যাঙ্কি রুটে ছোট বাস চালান। সেদিনকার মত বিষয়টি মিটে গেলেও পরদিন বৃহস্পতিবার দুপুর দুটো নাগাদ বাস চালিয়ে এনজেপি ঢুকছিলেন। সেই সময়ে তাঁকে নেতাজি মোড়ের কাছে কয়েকজন বাস দাঁড় করিয়ে মারধর করে বলে অভিযোগ। পালিয়ে বাস নিয়ে এনজেপি স্টেশন চত্বরে যান ওই চালক। সেখানে পিছু ধাওয়া করে ২০-২৫ জন বাইক আরোহী বলে জানা গিয়েছে। এমনকী, আইএনটিটিইউসির স্থানীয় কার্যালয়ে ঢুকে মারধর করে তারা বলে অভিযোগ। খবর পেয়ে ছুটে আসেন অন্য চালকরা। ততক্ষণে পালিয়ে যায় অভিযুক্তরা। বৈজুকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
ঘটনায় জড়িত বলে জানিয়ে শ্যামল মণ্ডল, আশিস পাল ও মানিক সিংহের বিরুদ্ধে নিউ জলপাইগুড়ি ফাঁড়িতে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। এঁদের প্রত্যেকেরই বাড়ি ভক্তিনগর এলাকায়। এর মধ্যে আশিস পাল সিপিএম কর্মী এবং মানিক সরকার বিজেপি কর্মী বলে দাবি করেছেন বিজনবাবু। যদিও সিপিএমের এনজেপি-ফুলবাড়ি জোনাল সম্পাদক দিবস চৌবে। তিনি বলেন, “তৃণমূলের নিজেদের মধ্যে তোলাবাজির বখরা সংক্রান্ত সমস্যার জেরেই ঘটনা ঘটে বলে শুনেছি।” এলাকায় বিজেপির কেউ নেই বলে দাবি করে দার্জিলিং জেলা সভাপতি রথীন বসু জানান, তৃণমূলের অন্তর্দ্বন্দ্বের ফলেই এই ঘটনা ঘটছে বলে তিনি মনে করছেন। তিনি বলেন, “ওই এলাকায় আমাদের দলীয় কার্যালয় পর্যন্ত খুলতে দিচ্ছে না তৃণমূল। কোনও বিজেপি সমর্থক তাঁদের মারধর করবে বলে বিশ্বাস করি না।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy