Advertisement
E-Paper

বক্সিরহাট থেকে ধৃত কেএলও জঙ্গি

সম্প্রতি অসম লাগোয়া কোচবিহারের বক্সিরহাট এলাকা থেকে আগ্নেয়াস্ত্র সহ সন্দেহভাজন এক কেএলও সদস্যকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ধৃতের মোবাইল কল লিস্ট দেখে সন্দেহ ঘনীভূত হয়েছে পুলিশের। জানা গিয়েছে, ধৃতের মোবাইলে ‘সেভ’ রয়েছে একাধিক ব্যবসায়ীর নম্বর এবং ধৃতের থেকে উদ্ধার হয়েছে বক্সিরহাটের এক প্লাইউড কারখানার মালিকের নামে ইংরেজিতে লেখা হুমকি চিঠি।

অরিন্দম সাহা

শেষ আপডেট: ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০৩:০৫

সম্প্রতি অসম লাগোয়া কোচবিহারের বক্সিরহাট এলাকা থেকে আগ্নেয়াস্ত্র সহ সন্দেহভাজন এক কেএলও সদস্যকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ধৃতের মোবাইল কল লিস্ট দেখে সন্দেহ ঘনীভূত হয়েছে পুলিশের। জানা গিয়েছে, ধৃতের মোবাইলে ‘সেভ’ রয়েছে একাধিক ব্যবসায়ীর নম্বর এবং ধৃতের থেকে উদ্ধার হয়েছে বক্সিরহাটের এক প্লাইউড কারখানার মালিকের নামে ইংরেজিতে লেখা হুমকি চিঠি। তাতে ব্যবসায়ীর থেকে ৫০ লক্ষ টাকা দাবি করে বয়ান লেখা হয়েছিল বলে পুলিশ জানিয়েছে। যার জেরেই পুলিশের সন্দেহ তহবিল সংগ্রহে ফের তৎপর হয়ে উঠেছে জঙ্গি গোষ্ঠী কামতাপুর লিবারেশন অর্গানাইজেশন তথা কেএলও।

পুলিশ মনে করছে, ভাঁড়ারে টান পড়াতেই কেএলও-রা ফের তহবিল গড়তে সক্রিয় হয়ে উঠেছে। উত্তরবঙ্গ এবং নিম্ন অসমের ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা দাবি করে ওই তহবিল বাড়ানর পরিকল্পনা করেছে বলে তদন্তকারীদের একাংশের দাবি। পুলিশ জানিয়েছে, সম্প্রতি কোচবিহারের অসম লাগোয়া বক্সিরহাট থানার পুলিশ কেএলও-র সঙ্গে জড়িত সন্দেহে আগ্নেয়াস্ত্র সহ শঙ্কর রায় নামে এক যুবককে গ্রেফতার করে। সে অসমের ধুবুরি জেলার গৌরীপুর এলাকার বাসিন্দা। তাকে জেরা করে একাধিক ব্যবসায়ীর কাছ থেকে টাকা আদায়ের ওই ছকের ব্যাপারে বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য হাতে এসেছে। কোচবিহারের পুলিশ সুপার রাজেশ যাদব বলেন, “কেএলও’র সঙ্গে ওই যুবকের যোগসাজস রয়েছে। ধৃতের কাছে টাকা আদায়ের জন্য লেখা চিঠি সহ বেশকিছু সামগ্রী উদ্ধার হয়েছে। তার মোবাইল ফোনের কললিস্ট খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”

পুলিশ ও গোয়েন্দা সূত্রেই জানা গিয়েছে, গত শনিবার অসমের বাসিন্দা ওই যুবক দুই সঙ্গীর সঙ্গে বাইকে বক্সিরহাটের বালাকুঠি এলাকায় ঢুকবেন বলে গোপন সূত্রে খবর পৌঁছয়। তার ভিত্তিতেই শুরু হয় নজরদারি। এক প্লাইউড ব্যবসায়ীর বাড়ির দিকে যাওয়ার সময়ে সাদা পোশাকে থাকা পুলিশকর্মীরা সন্দেহভাজন ওই যুবককে ধরে ফেলেন। ততক্ষণে অন্ধকারের সুযোগ নিয়ে ধৃতের দুই সঙ্গী বাইক নিয়ে পালিয়ে যায় বলে পুলিশের দাবি। পুলিশের এক আধিকারিকের দাবি, জেরায় ওই যুবকের কাছে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য ছাড়াও অন্য এক ব্যবসায়ীর কাছে ২০ লক্ষ টাকা দাবি করে লেখা আরও একটি হুমকি চিঠি উদ্ধার করা হয়েছে। সেটিও কেএলও’র ছাপানো প্যাডে লেখা ছিল বলে জানা গিয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের পর পুলিশ জেনেছে, ধৃত যুবক কেএলও’র অন্যতম শীর্ষ নেতা লাল সিংহ ডেকার ঘনিষ্ঠ। তবে সে কোন ব্যাচে সে জঙ্গি প্রশিক্ষণ নিয়েছে তা জানতে পারেনি পুলিশ। অসম পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে তারা।

পুলিশ ও গোয়েন্দা সূত্রের খবর, ২০০৩ সালে ভুটান সেনা অভিযানের পরে কেএলও’র সংগঠন ভেঙে যায়। পরবর্তীতে কেএলও প্রধান জীবন সিংহ অজ্ঞাতবাসে থেকে ফের সংগঠন চাঙ্গা করতে শুরু করেন। তাতে সংগঠনটির অগোছালো ভাব অনেকটা বদলেছে। ধুবুরি, কোকরাঝাড়, বঙ্গাইগাঁও এলাকায় ডেরা করে কেএলও’র কাজকর্ম নিয়ে গোয়েন্দাদের তরফে আগেও সতর্ক করা হয়। ২০১৩ সালে জলপাইগুড়ির পাহাড়পুরের বিস্ফোরণ কান্ডের পর কেএলও নিয়ে পুলিশের উদ্বেগ বেড়ে যায়। টম অধিকারী সহ কেএলও-এর একাধিক শীর্ষ নেতা ধরা পড়ে। ফের নতুন সক্রিয় সদস্য সংগ্রহ করে ব্যবসায়ীদের হুমকি দিয়ে টাকা আদায় করে সংগঠন গোছানোর পরিকল্পনা কেএলওর বর্তমান নেতারা পরিকল্পনা করেছেন বলে পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে।

ঘটনার জেরে আতঙ্ক ছড়িয়েছে অসম লাগোয়া জেলার ব্যবসায়ীদের মধ্যে। বক্সিরহাট ব্যবসায়ী সমিতি সূত্রেই জানা গিয়েছে, কয়েক বছর আগে সন্দেহভাজন জঙ্গিরা বক্সিরহাটের একাধিক ব্যবসায়ীকে অপহরণ করে। বছর খানেক আগে মানসাইয়ে সন্দেহভাজন কেএলও’র গুলিতে এক ব্যক্তি জখম হন। বক্সিরহাট ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক স্বপন দাস বলেন, “এলাকায় বাড়তি নিরাপত্তার বন্দ্যোবস্ত করতে হবে।” যদিও, রাজ্যের বনমন্ত্রী বিনয়কৃষ্ণ বর্মন আশ্বাস দেন, “ব্যবসায়ীদের উদ্বেগের কোনও কারণ নেই। সকলকে নিরাপত্তা দিতে পুলিশ সক্রিয় রয়েছে।”

klo bakshirhat
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy