Advertisement
E-Paper

বসতির দাপটে ঠাঁইনাড়া উদ্যান

একটু ফুরসত মিললেও সবুজ ঘাসের উপরে বসে দু-দণ্ড কাটাবেন এমন জায়গা কোথায় মিলবে শিলিগুড়িতে? উইকিপিডিয়ার দ্বারস্থ হলে বিস্তর খুঁজেপেতে হয়তো কয়েকটা পার্কের নাম মিলতে পারে। কিন্তু, সেখানে গেলে কী অভিজ্ঞতা হতে পারে তা আগেভাগে আঁচ করা মুশকিলের ব্যাপার। কারণ, শিলিগুড়ি শহর উত্তরোত্তর বেড়ে চললেও সেই তুলনায় শহরে নিরিবিলিতে একটু সময় কাটানোর মতো পার্ক গড়ার দিকে সে ভাবে নজর দেননি নেতা-কর্তা-আমলারা।

কিশোর সাহা

শেষ আপডেট: ১০ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০২:১৩
বেহাল শিলিগুড়ির সূর্যসেন পার্ক। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক।

বেহাল শিলিগুড়ির সূর্যসেন পার্ক। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক।

একটু ফুরসত মিললেও সবুজ ঘাসের উপরে বসে দু-দণ্ড কাটাবেন এমন জায়গা কোথায় মিলবে শিলিগুড়িতে? উইকিপিডিয়ার দ্বারস্থ হলে বিস্তর খুঁজেপেতে হয়তো কয়েকটা পার্কের নাম মিলতে পারে। কিন্তু, সেখানে গেলে কী অভিজ্ঞতা হতে পারে তা আগেভাগে আঁচ করা মুশকিলের ব্যাপার।

কারণ, শিলিগুড়ি শহর উত্তরোত্তর বেড়ে চললেও সেই তুলনায় শহরে নিরিবিলিতে একটু সময় কাটানোর মতো পার্ক গড়ার দিকে সে ভাবে নজর দেননি নেতা-কর্তা-আমলারা। ফলে, হাতো গোনা কয়েকটি পার্কের উপরেই চাপ বাড়ছে ভয়াবহ। কোথাও কোথাও পরিষেবা একেবারে তলানিতে পৌঁছে গিয়েছে। পুরসভা-প্রশাসনের নজরদারির অভাবে কয়েকটি পার্কের খেলনার এমনই হাল যে রোজই কমবেশি ছোটখাটো দুর্ঘটনা ঘটছে।

চলতি বছরের জানুয়ারিতে শহরের সূর্য সেন পার্কে ‘স্পাইরাল স্লাইড’-এ অন্তত ১৫টি শিশুর হাত-পা কেটে গিয়েছে। ওই ‘স্লাইড’টির অনেক জায়গা ভেঙে গর্ত হয়ে রয়েছে। ওই পার্কেই ছোটদের খেলাধূলার অর্ধেকের বেশি সরঞ্জাম ভেঙে গিয়েছে। কোনটি টিন দিয়ে বন্ধ রাখা হয়েছে। আবার কোনটি বাঁশ দিয়ে আটকে রাখা হয়েছে। উপরন্তু, পার্কে টয় ট্রেন চালানোর পরিকাঠামো তৈরি করতে বড় বড় অনেক গাছ কেটে ফেলা হয়েছে। পার্কের জলাশয় নিয়মিত সাফাই হয় না। নানা বিষধর সাপের আস্তানা হয়ে গিয়েছে শহরের মহানন্দা নদীর গা ঘেঁষে থাকা সূর্য সেন পার্ক। তাতে সকলেই ক্ষুব্ধ।

অথচ একটা সময়ে শিলিগুড়ি ছিল মুক্ত বাতাসের জায়গা। ইংরেজ আমলে রেল লাইন পাতার কাজ শুরু হতেই শিলিগুড়ির গুরুত্ব বাড়ে। ক্রমশ ভৌগোলিক অবস্থানের কারণেই শিলিগুড়ি উত্তরবঙ্গের চার পাশের জায়গার সঙ্গে যোগাযোগের অন্যতম কেন্দ্র হয়ে ওঠে। স্বাধীনতার পরেও শিলিগুড়ির আয়ত ছিল একেবারেই ছোট। প্রবীণদের স্মৃতিচারণ অনুযায়ী, শক্তিগড় থেকে বর্ধমান রোড হয়ে হিলকার্ট রোড ধরে জংশনে পৌঁছলেই শিলিগুড়ির এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্ত দেখা হয়ে যেত। ধীরে ধীরে শহর বেড়ে এখন প্রায় ৫০ বর্গ কিলোমিটার আয়তন হয়ে গিয়েছে। আমবাড়ি, গজলডোবার মতো এলাকাও শিলিগুড়ি পুলিশ কমিশনারেটের আওতায় ভুক্ত হয়েছে। বেড়েছে পুরসভার ওয়ার্ডও।

কিন্তু শহরবাসীর দৈনন্দিন বিনোদনের জায়গা তৈরি হয়নি। কয়েকটি শপিং মল, মাল্টিপ্লেক্স হলেও সবুজে ঘেরা পার্কে বসে মুক্ত বাতাস নেওয়ার জায়গা সে ভাবে তৈরিই হয়নি। বাম আমলে মহানন্দার ধারে সূর্য সেন পার্ক তৈরি হয়। সেই পার্কও রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে বেহাল দশা। ডাবগ্রামের শিলিগুড়ি পার্কে মশার দৌরাত্ম্য ঠেকাতে পুরসভার তরফে কেন কেউ উদ্যোগী হন না সেই প্রশ্নের জবাব পান না ভুক্তভোগীরা। নেতা-কর্তারাও মানছেন, পুর এলাকার একাধিক পার্ক দেখভালের অভাবে নষ্ট হতে বসেছে।

(চলবে)

surya sen park amar sohor amar shohor kishore saha
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy